সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তখন ওঁরা কেউই কিছু বোঝার মতো অবস্থায় ছিলেন না৷ তা ছাড়া চারপাশে এতটাই হই-হুল্লোড় হচ্ছিল যে মাদ্রিদবাসীদেরও এমন কম্পন অনুভব করার প্রশ্ন নেই৷ তবুও মাটি কাঁপল৷ ঘর-বাড়ি, গাছ-গাড়ি সব দুলে উঠল ক’সেকেন্ডের জন্য৷
না, কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়৷ বরং কৃত্রিম ভূমিকম্প৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন ভূমিকম্প এই প্রথম নয়৷ এর আগেও বহু বছর বহু জায়গায় এই ধরনের কৃত্রিম ভূমিকম্প ধরা পড়েছে৷ তবে গত কয়েক বছরে এমন ভূমিকম্পের নজির নেই৷ বার্সেলোনা-পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচের পর এমন কাণ্ড৷ বার্সা সমর্থকরা এমন নাচানাচি-দাপাদাপি করলেন যে মাটি কেঁপে উঠল৷ জউমি আলমেরা ইনস্টিটিউট অফ আর্থ সাইন্সেসের গবেষণায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ স্টপেজ টাইমের পাঁচ মিনিট আগে গোল করে বার্সার জয় নিশ্চিত করেছিলেন সার্জিও রবার্তো৷ ব্যস, তার পরই অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন বার্সা সমর্থকরা৷ স্টেডিয়ামের ভিতরে ও বাইরে আনন্দে ফেটে পড়েন তাঁরা৷ যার জেরে ন্যু ক্যাম্প স্টেডিয়ামের পাঁচশো মিটারের মধ্যে মাটি কেঁপে ওঠে৷ রিখটার স্কেলে এই মাইক্রো-আর্থকোয়াক-এর মাপ এক৷ অর্থাত্, একেবারেই কম৷ তবে মাথায় রাখতে হবে, কৃত্রিম ভূমিকম্পে এমন মাপও নেহাত হেলাফেলা করা যায় না৷ এমনিতে ম্যাচের মাঝে বারবারই সমর্থকদের লাফালাফি-নাচানাচিতে মাদ্রিদের মাটি কেঁপে উঠছিল৷ দাবি করেছে জউমি আলমেরা ইনস্টিটিউট অফ আর্থ সায়েন্স৷ বার্সার ছ’টি গোলের মাঝে বারবার অনুভূত হয়েছে ভূমিকম্প৷ তবে সেগুলির মাপ রিখটার স্কেলে একের কম৷
বার্সার দ্বিতীয় ও তৃতীয় গোল দু’টির সময় সব থেকে বেশি কম্পন অনুভূত হয়৷ সিসমোগ্রাফ এমনই রেকর্ড দিচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাকৃতিক কারণে এমন ধরনের মাইক্রো আর্থকোয়াক প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে বিশ্বজুড়ে অনুভূত হয়৷ তবে কম্পনের মাত্রা এতটাই কম হয় যে তা অনুভব করতে পারা যায় না৷ তা ছাড়া এই কম্পন খুবই ক্ষণস্থায়ী হয়৷ বিজ্ঞানীদের দাবি, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা তিন ছাড়ালেই পরেই সাধারণ মানুষ কম্পন অনুভব করতে পারেন৷ মাত্রা চার ছাড়ালে শেলফে রাখা জিনিসপত্র মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে৷ কম্পনের মাত্রা পাঁচ উঠলে তা অবশ্যই বিপজ্জনক৷ সেক্ষেত্রে দুর্বল ইমারতের ক্ষতি হতে পারে৷ তবে খেলার মাঠের উচ্ছ্বাসের জেরে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে এই ধরনের কম্পন অনুভূত হওয়ায় বিস্মিত বিজ্ঞানীরাও৷ এর আগে কখনও এমন কাণ্ড ঘটেছে কি না মনে করে বলতে পারছেন না পরিসংখ্যানবিদরাও৷ গবেষক জর্ডি ডিয়াজ যেমন বলছিলেন, “আমরা রুটিনমাফিক পরীক্ষা করতে বসেছিলাম৷ তাতেই দেখা গেল ম্যাচ শেষে পুরো মাদ্রিদের পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে৷ জায়গায় জায়গায় স্বল্প মাত্রার কম্পন অনুভূত হচ্ছে৷ পরীক্ষা করে জানা যায়, স্টেডিয়াম চত্বরে সমর্থকদের দাপাদাপিই এর কারণ৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.