সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৪৮ ঘণ্টা আগে সদস্যরা বেছে নিয়েছিলেন ২১ জনের মোহনবাগানের কার্যকরী সমিতি। অঞ্জন মিত্র সরে দাঁড়ানোয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন সচিব টুটু বোসও। এবার সেই ২১ জনের কার্যকরী সমিতি বেছে নিলেন তাঁদের সভাপতিকে। ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগান ক্লাবের সর্বাধিনায়কের পদ অলংকৃত করবেন বিখ্যাত আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়।
বুধবার দুপুরে ক্লাবে বসেছিল নবনির্বাচিত কার্যকরী সমিতির প্রথম বৈঠক। সেখানেই সভাপতি হিসাবে ঠিক হয় গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। সচিব টুটু বোস তাঁর নাম প্রস্তাব করার সঙ্গে সঙ্গে তাতে সহমত জানান বাকিরা। এরপর সেখান থেকেই যোগাযোগ করা হয় গীতানাথবাবুর সঙ্গে। অনুরোধ করা হয় ক্লাবে এসে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করতে। তারপরই উত্তর কলকাতার বাড়ি থেকে মোহনবাগান ক্লাবের উদ্দেশে রওনা দেন গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্লাবে এসে প্রথমেই যান কার্যকরী সমিতির বৈঠকে। ফুল, মালা, মিষ্টিতে নতুন সভাপতিকে বরণ করে নেন সমিতির সদস্যরা। এরপর সবাই মিলে একসঙ্গে যান মাঠে। যেখানে প্র্যাকটিস ম্যাচে
কালীঘাট এমএস-এর বিরুদ্ধে নেমেছিল দল।
নতুন দায়িত্ব পেয়ে গীতানাথবাবু বলছিলেন, “এটা যত বড় দায়িত্ব, তার থেকেও বেশি সম্মান। মোহনবাগান ক্লাবের সভাপতি হওয়া তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের ক্লাবের ব্যাপ্তি অনেক। কাজেই এই মুহূর্তে আমার মনের অবস্থা ঠিক কেমন, তা বলে বোঝাতে পারব না।”
গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে সবাই চেনেন অজাতশত্রু হিসাবে। যখনই মোহনবাগান ক্লাবের বিরুদ্ধে কোনও মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে, তিনি এগিয়ে এসেছেন। ক্লাবের স্বার্থে লড়াই করতে কখনও পিছপা হননি তিনি। মোহনবাগানের প্রত্যেক শিবিরের সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। তবে তারমধ্যেও সচিব টুটু বোসের জায়গাটা একটু আলাদা। তাই তো এবার নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন জায়গায় টুটু বোসের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছেন তিনি। পাইকপাড়া থেকে স্টার থিয়েটার। উত্তর কলকাতায় এমন কোনও নির্বাচনী প্রচার ছিল না, যেখানে অনুপস্থিত ছিলেন গীতানাথ। প্রসঙ্গ উঠতে বললেন, “টুটুর সঙ্গে আমার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মোহনবাগানের জন্য ওর অবদান ভোলার নয়। তাই এবার ওকে জেতানোর জন্য সবার কাছে আবেদন করেছিলাম। শুধু আমি কেন, প্রত্যেকে জানে যে মোহনবাগানের নৌকা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যোগ্যতম কান্ডারি টুটুই। কিন্তু সত্যি বলতে কী, ও যে আমায় এই সম্মানটা দেবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। এর জন্য আমি টুটু, টুম্পাইদের কাছে কৃতজ্ঞ। আর গত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতি টুটু বোসকে চূড়ান্ত অপমানিত হতে হয়েছিল। আজ আমি সভাপতি হিসেবে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
কথা বলতে বলতে নস্টালজিক হয়ে পড়লেন নতুন সভাপতি। বলছিলেন, “বাবার হাত ধরে ১৯৫০ সালে প্রথমবার মোহনবাগান মাঠে যাই। সেবারই উনি আমায় সদস্য করে দেন। তারপর থেকে প্রত্যেকবার আমি মেম্বারশিপ রিনিউ করেছি। ওঁর কথা মনে পড়ছে খুব। প্রয়াত শৈলেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় যদি সেদিন আমায় সদস্য না করতেন, তাহলে আজকের দিনটা দেখতে পেতাম কিনা সন্দেহ।” সভাপতি ছাড়াও এদিন বেছে নেওয়া হয় সহ-সভাপতিদের। এই পদে রয়েছেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাপাধ্যায়, বীরু চট্টোপাধ্যায়, বলরাম চৌধুরি, চুনী গোস্বামী, অরূপ রায় এবং অসিত চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ ও অভিজ্ঞ সদস্যরা। পাশাপাশি আজীবন সদস্য করা হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেতা প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, দেবশংকর হালদার এবং কিংবদন্তি ফুটবলার চুনী গোস্বামীকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.