সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাতারে জার্মানির সূর্যোদয়। সূর্যাস্ত জার্মানির। হয়তো টমাস মুলারের (Thomas Muller) ফুটবল-কেরিয়ারও শেষ।
জার্মানির (Germany) জার্সিতে দীর্ঘ ১২ বছরের বর্ণময় ফুটবল কেরিয়ার এবার হয়তো শেষ হতে চলেছে। কাতারে জার্মানির বিদায়ঘণ্টা বাজার অব্যবহিত পরে তাঁর দিকে উড়ে এল অমোঘ প্রশ্নটা, তবে কি এখানেই থেমে যাবেন? উত্তরে মুলার বলেছেন, ”জার্মানির হয়ে এটা আমার শেষ ম্যাচ কি না, সেই ব্যাপারে জার্মান ভক্তদের কিছু বলতে চাই। দারুণ এক অভিজ্ঞতা ছিল। ধন্যবাদ। মাঠে সব সময় হৃদয় উজাড় করে খেলেছি। কখনও আনন্দ পেয়েছি আবার কখনও দুঃখও পেয়েছি। ভালবেসেই সব করেছি। এখন সব বিষয় নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।”
ইস্টবেঙ্গল মাঠ থেকে কাতার। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে দেখাবে কয়েক হাজার মাইল। ফুটবলের এই পরিক্রমায় বহুবার স্বপ্ন ছুঁয়েছেন তিনি। আবার স্বপ্ন ভেঙেওছে। এই শহর কলকাতা তাঁর শুরুর দিনগুলো দেখেছে। গানের কথায়, এই শহর জানে আমার প্রথম সবকিছু…। মুলারের কথা ভেবে এই লাইনগুলো নিশ্চয় লেখেননি কবীর সুমন। কিন্তু জার্মানির সুযোগ সন্ধানী খেলোয়াড়ের সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে যায় লাইনগুলো।
তখনও টমাস মুলার আজকের নায়ক হননি। বায়ার্ন মিউনিখের যুব দলের প্লেয়াররা এসেছিলেন এই শহরে। ইস্টবেঙ্গলে তখন সদ্য কোচ বদল হয়েছে। সুভাষ ভৌমিকের হাতে দলের রিমোট কন্ট্রোল। আই লিগের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। তার আগে জার্মানির শক্তিশালী ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের তৈরি করে নিতে চান সুভাষ। ইস্টবেঙ্গল মাঠে বায়ার্নের যুব দলের সঙ্গে খেলতে নামে লাল-হলুদ বাহিনী। নির্মল ছেত্রী ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একটি গোল করেছিলেন হেডে। বায়ার্নের ওই যুব দলটাই ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিল একাধিক গোলে। টমাস মুলারকে নিয়ে তখন থেকেই স্বপ্ন দেখছিল বায়ার্ন। বায়ার্ন মিউনিখের সেই সফরের কয়েকবছর পরেই জার্মানির জার্সিতে সিনিয়র দলের হয়ে ফুল ফোটাতে শুরু করেন মুলার।
এরকম একজন স্ট্রাইকার তাঁর কেরিয়ারের শেষ বেলায় এসে পৌঁছেছেন। কেরিয়ারের শেষলগ্নে এসে তাঁকেও দেখতে হল জার্মানির বিদায়। এই ব্যর্থতাকে মুলার বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেছেন, ”এটা বড় বিপর্যয়। অবিশ্বাস্যভাবে তিক্ত একটা ফলাফল আমাদের জন্য। নিজেদের ক্ষমতাহীন বলে এখন মনে হচ্ছে। এটা যদি জার্মানির হয়ে আমার শেষ ম্যাচ হয়, তাহলে বলব আমি আমার কেরিয়ার দারুণ উপভোগ করেছি। সবাইকে ধন্যবাদ।”
মুলারের আনন্দে এই শহর হেসেছে একদিন। মুলারের কষ্ট ছুঁয়ে যাচ্ছে এই শহর কলকাতাকেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.