সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মরশুমের সবচেয়ে বড় ট্রান্সফার। মহানাটকীয়ভাবে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে ঘোল খাইয়ে ইউনাইটেডে সই। বলা ভাল, ঘরে ফিরেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo)। কিন্তু সিআর সেভেনের ঘরে ফেরার সিদ্ধান্ত কি যুক্তিযুক্ত? নাকি আবেগের বশে ভুল করে ফেললেন পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ী?
এখনও যে রোনাল্ডো বিশ্বের অন্যতম সেরা গোল স্কোরার, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বয়স বাড়লেও তাঁর ক্ষিপ্রতা কার্যত আগের মতোই আছে। গত ৩ মরশুমে জুভেন্তাসের হয়ে প্রচুর গোলও করেছেন তিনি। কিন্তু তারপরও থাকছে প্রশ্ন। কেরিয়ারের শেষ কয়েক বছর রোনাল্ডো খেলেছেন সিরি আ-তে। যা প্রিমিয়ার লিগের থেকে অনেক সহজ এবং শ্লথ গতির। প্রিমিয়ার লিগে রীতিমতো কড়া ট্যাকলের মুখে পড়তে হবে রোনাল্ডোকে। প্রিমিয়ার লিগে (English Premier League) সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই। উলটে, প্রতি দু’সপ্তাহে অন্তত একটি করে বিশ্বমানের দলের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। ইংলিশ ফুটবলে ম্যাচের সংখ্যাও ইটালির থেকে বেশি। প্রশ্ন হল, ৩৬ বছরের রোনাল্ডো কি এত ধকল সইতে পারবেন?
তাছাড়া, জুভেন্তাসে তেমন কড়া প্রতিপক্ষ না থাকায় বছরে দু-একটা ট্রফিজয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United ) প্রতিবছর যে ট্রফি জিতবেই এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ, ২০১৮ সালের পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও ট্রফি পায়নি ম্যান ইউ। এমনকী, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন অবসর নেওয়ার পর একবারও প্রিমিয়ার লিগ জেতেনি রেড ডেভিলসরা। এহেন ক্লাবে যোগ দিয়ে আদৌ কেরিয়ারের সোনালি দিনের মতো সাফল্য পাবেন তো রোনাল্ডো?
এতো গেল রোনাল্ডর কথা। সিআর সেভেনকে (CR-7) সই করানোটা ম্যান ইউয়ের জন্যই বা কতটা জরুরি ছিল, সেটা নিয়েও রয়েছে প্রশ্নচিহ্ন। রোনাল্ডো যোগ দেওয়ায় দলে গোল করার লোকের অভাব থাকবে না। এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও ঠিক যে রোনাল্ডোর আগমনে একাধিক সমস্যায় পড়বে ম্যান ইউ। গত তিন মরশুমে জুভেন্তাসের হয়ে সিরি আ-তে ৯৮ ম্যাচে ৮১ গোল করেছেন রোনাল্ডো। কিন্তু মজার কথা হল, রোনাল্ডোর যোগ দেওয়ার আগের মরশুমেই ৮৬টি গোল করেছিল জুভেন্তাস। রোনাল্ডো যোগ দেওয়ার পর জুভেন্তাস (Juventus) আর সেই গোলের সংখ্যাটা পেরোতে পারেনি। রোনাল্ডো একা গোল করেছেন, কিন্তু বাকিরা পিছিয়ে পড়েছেন। আবার রোনাল্ডোর জন্য জুভেন্তাসের খেলার ছন্দ নষ্ট হয়েছে বলেও দাবি করেন ইটালির অনেক ফুটবল বোদ্ধা। দীর্ঘ কয়েক বছর বাদে গতবছরই সিরি-আ জিততে পারেনি ‘ওল্ড লেডি’। তার জন্য সিআর সেভেনকেই দায়ী করেন অনেক সমর্থক। তাছাড়া, রোনাল্ডোকে দলে নেওয়া মানে তাঁকে নিশ্চিত ভাবেই প্রথম একাদশে খেলাতে হবে ম্যান ইউকে। সেক্ষেত্রে স্যাঞ্চো, গ্রিনউড, মার্শিয়ালদের মতো তরুণদের উন্নতি ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
কিন্তু, এত কিছু বলার পরও বলতে হয়, নামটা যখন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, তখন কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করাটা যুক্তিযুক্ত হবে না। কারণ, সব যুক্তি, সব বিজ্ঞান, সব প্রতিকূলতাকে হারিয়েও যে কীভাবে সাফল্য পাওয়া যায়, সেটা তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন। আবারও তিনি নিজেকে প্রমাণ করবেন, আপাতত সেই স্বপ্নেই বুঁদ ম্যান ইউ সমর্থকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.