লিভারপুল- ২ (সালাহ, ওরিগি)
টটেনহ্যাম- ০
স্টাফ রিপোর্টার: ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভরা বাজারে লিভারপুল ফুটবলময়! চেলসি তিন দিন আগে ইউরোপা লিগ নিয়ে গিয়েছিল লন্ডনে। শনিবার রাতে লিভারপুল ইংল্যান্ডে নিয়ে গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। গত জুলাইয়ে ফুটবল (বিশ্বকাপ) ইংল্যান্ডে ফেরেনি। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই ইউরোপ তথা বিশ্বের দু’টো সবচেয়ে বড় ক্লাব টুর্নামেন্টের ট্রফি ফিরে এল ইংল্যান্ডে!
পোয়েটিক জাস্টিসের শেষ এখানেই নয়। য়ুরগেন ক্লপের অবশেষে শাপমুক্তি ঘটল এদিন। লিভারপুল কোচের কেরিয়ারে ন’টা ফাইনালে জয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র এক। শেষ ছ’টা ফাইনাল টানা হেরেছেন। তার মধ্যে দু’টো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। একটা ইউরোপা লিগ। ক্লপ সেই সব শাপমুক্ত শনিবারের মাদ্রিদ রাত থেকে। নাটকীয় শুরু। ম্যাচের ২৭ সেকেন্ডেই সাদিও মানের ক্রসে পেনাল্টি বক্সে হাত লাগিয়ে বসেন টটেনহ্যামের সিসোকো। নিটফল- পেনাল্টি। যা থেকে গোল করে প্রথম মিনিটেই লিভারপুলকে এগিয়ে দেন সালাহ। তারপর প্রথমার্ধের বাকি ৪৬ মিনিট (দু’মিনিট একস্ট্রা টাইম ধরে) অবশ্য এত বড় ফাইনালের তুলনায় নেহাত সাদামাটা ফুটবল হয়। এসময় টটেনহ্যামের বল পজেশন বেশি (৬৫%) থাকলেও। কর্নার বেশি পেলেও। বিপক্ষ গোলে সংখ্যায় অধিক শট নিলেও তিনের কোনওটাতেই কামড় ছিল না। এরিকসেন বা সিসোকোর দূরপাল্লার শট কিংবা ডেলে আলির হেড- সবই অনেকটা লক্ষভ্রষ্ট। বরং লিভারপুল তাতে না ঘাবড়ে সাদিও মানেকে ফ্রি রেখে দেয়। আর সেনেগালের বুদ্ধিমান ফরোয়ার্ড গতি আর পায়ের কাজে লেফট উইং দিয়ে ঢুকে টটেনহ্যাম বক্সে বারকয়েক বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। প্রথম মিনিটেই লিভারপুলের পেনাল্টি পাওয়ার পিছনেও মানের বুদ্ধি দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ম্যাচ চলাকালীনই তাঁদের কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়া মন্তব্য করেন, সিসোকোর বুকে ঠিকরে বল তাঁর হাতে লাগে ঠিকই। ওটা পেনাল্টিও। কিন্তু মানের সিসোকোর দিকে ফ্লিকটা ইচ্ছাকৃত ছিল না তো?
কেউ কেউ আবার আশায় ছিলেন, তিন দিন আগেই আরও দু’টো প্রিমিয়ার লিগ টিম চেলসি-আর্সেনালের মধ্যে ইউরোপা লিগ ফাইনালের প্রথমার্ধ এরকমই ম্যাড়ম্যাড়ে যাওয়ার পর শুধু দ্বিতীয়ার্ধেই পাঁচ-পাঁচটা গোল হয়েছিল। কিন্তু লিভারপুল ডিফেন্স যেমন অনেক বেশি ব্যালান্সড আর জমাট, তেমনই টটেনহ্যাম অ্যাটাকিং লাইন এদিন পুরোপুরি নিজেদের ফর্মে ছিল না। গোড়ালির চোট সারিয়ে দু’মাস পরে ফার্স্ট টিমে ফিরলেও ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন হ্যারি কেনকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। তবুও এদিন আটলেটিকো মাদ্রিদের হোমগ্রাউন্ড মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামের ৫২২১২ জন দর্শকের হয়তো আশা ছিল টটেনহ্যামের আরও একটা স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন। আসলে এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ওঠার পথে টটেনহ্যাম মোট ১০৮০ মিনিট খেলার মধ্যে মাত্র ১৭৯ মিনিট এগিয়ে ছিল। পিছিয়ে ছিল ৪৫৫ মিনিট। আটটা ম্যাচ প্রথমে পিছিয়ে পড়েও জিতেছে। কিন্তু ফাইনালে সেই অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের ধারাবাহিকতা আর রাখতে পারেনি পচ্চেতিনোর দল। তবে যে ব্রাজিলিয়ান তারকা লুকাস মৌরার অনবদ্য হ্যাটট্রিকে আয়াখসের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ০-৩ পিছিয়ে পড়া ম্যাচ টটেনহ্যাম জিতেছিল, তাঁকে লন্ডনের ক্লাবটির আর্জেন্টাইন কোচ ফাইনালে এক ঘণ্টারও বেশি বেঞ্চে কোন আক্কেলে বসিয়ে রাখলেন কে জানে? তবু মৌরা নামার পরেই লিভারপুল গোলকিপার অ্যালিসনকে কয়েকবার সক্রিয় হতে হয়। কিন্তু তার ভিতর ৮৭ মিনিটে একটা কাউন্টার অ্যাটাক থেকে লিভারপুলের সুপার সাব ওরিগি দ্বিতীয় গোল করে খেলা শেষ করে দেন। ষষ্ঠ বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দিয়ে দেন ‘কপস’দের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.