সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা সময় ফুটবল পায়ে বিশ্ব কাঁপিয়েছেন। বিশ্বকাপের দ্রুততম গোলের রেকর্ড এখনও তাঁর দখলে। কার্যত একার কৃতিত্ব দলকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তুলেছেন। দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। অথচ, সেই ফুটবলারই এখন রুজিরুটির টানে উবের চালাচ্ছেন। নিজের দেশে থাকতে দেওয়া হয়নি, পলাতকের মতো জীবন কাটাতে হচ্ছে আমেরিকায়।
কথা হচ্ছে হাকান সুকুরের (Hakan Şükür)। ২০০২ বিশ্বকাপে তাঁর খেলা অনেকেরই মনে আছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ১১ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে। সেই গোলটি এখনও বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম গোল। দেশকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তুলেছেন সেবারই। শেষপর্যন্ত তুরস্ক সে বছর তৃতীয় হয় বিশ্বকাপে। জাতীয় দলের জার্সিতে হাকান সুকুরের কৃতিত্ব এখানেই শেষ নয়। ১১২ ম্যাচে ৫১টি গোল করে এখনও তুরস্কের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার তিনি। ক্লাব কেরিয়ারেও তিনি সমানভাবে সফল। তুরস্কের ক্লাব গালাতেসারি, ইটালির ইন্টার মিলান এবং ইংল্যান্ডের ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের হয়ে খেলেছেন সুকুর।
এ হেন ফুটবলারকে এখন জীবন কাটাতে হচ্ছে পলাতকের মতো। কোনওক্রমে উবের চালিয়ে ঊদরপূর্তি করছেন সুকুর। কিন্তু কেন? উত্তর, রাজনীতি। অবসর নেওয়ার পর তুরস্কের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন সুকুর। প্রথমে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অনুগামী ছিলেন। এরদোগানের দলের হয়ে সাংসদও হন। কিন্তু, কিছুদিন পরই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। যোগ দেন এরদোগান বিরোধী ফতেউল্লাহ গুলেনের শিবিরে। এর জেরে বিরাগভাজন হন এরদোগানোর। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় চক্রান্ত। ২০১৫ সালে বাধ্য হয়ে উড়ে যান ক্যালিফোর্নিয়ায়।
২০১৬ সালে সুকুরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ক্যানসার আক্রান্ত হলে ছাড়া পান তিনি। এদিকে, সুকুরের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাধ্য হয়ে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি ক্যাফে চালাতে শুরু করেন। কিন্তু, তাতে খুব একটা সুবিধা না হওয়ায়, আপাতত উবের চালক হিসেবে কাজ করছেন একসময়ের বিশ্ব কাঁপানো ফুটবলার। হাকান সুকুরের এই করুণ পরিণতি অনেক ফুটবল সমর্থককেরই চোখে জল এনে দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.