স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতা লিগে খেলার সম্ভাবনা তৈরি হল মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল-মহামেডানের। ঠিক হয়েছে, ২৭ জুলাই থেকে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ‘এ’ ডিভিশন শুরু হলেও, তিন প্রধান খেলবে ‘সুপার সিক্স’ থেকে। সেক্ষেত্রে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল-মহামেডানকে খেলতে হবে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ। যে কারণে এই মরশুমেও সম্ভবত প্রিমিয়ার ডিভিশনের (Kolkata Premier League) ‘এ’ গ্রুপের অবনমন বন্ধ রাখতে চলেছে আইএফএ।
তিন প্রধানের কলকাতা লিগ খেলা নিয়ে সমস্যা ছিল ভিন্ন। ডুরান্ডের মাঝে খেলা দিলে কি ভাবে কলকাতা লিগের ম্যাচ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন মহামেডান (Mohammedan) কর্তারা। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কর্তারা শুরু থেকেই জানিয়ে ছিলেন, কলকাতা লিগে ক্লাব খেলবে। কিন্তু ইমামির সঙ্গে আইনি চুক্তি কবে হবে সেটাই এখনও ঠিক হয়নি। ফলে সামনের সপ্তাহে কলকাতা লিগ শুরু হয়ে গেলে, কিছুতেই খেলা সম্ভব হত না ইস্টবেঙ্গলের।
মোহনবাগানের (Mohun Bagan) সমস্যাটা আবার অন্য জায়গায়। প্রথমত আইএফএর কাছে ৬০ লক্ষ টাকা এখন পায় মোহনবাগান। তারমধ্যে ডুরান্ডের পাশাপাশি এএফসি কাপের ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেবে সবুজ-মেরুন। যেখানে ভাল ফল করলে দেশের সুনাম বাড়বে। ডুরান্ড এবং এএফসির মধ্যে কলকাতা লিগের জন্য সময় বার করা সত্যিই সমস্যা ছিল মোহনবাগানের জন্য। কিন্তু এদিন আইএফএ-তে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ নিয়ে মিটিং শুরুর আগেই মোহনবাগানের একটি চিঠি তাদের খেলা নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যা অনেকটাই সমাধান করে দেয়। মোহনবাগান একটি চিঠিতে আইএফএ-কে জানায়, ডুরান্ড এবং এএফসির জন্য কলকাতা লিগে ৩-৪টির বেশি ম্যাচ খেলা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থাৎ যে চিঠি থেকে পরিস্কার, মোহনবাগানও ম্যাচ খেলতে চাইছে। যদি তাদের সুবিধামতো কলকাতা লিগের ম্যাচ দেওয়া হয়।
এদিন মিটিংয়ে প্রিমিয়ার লিগের কর্তাদের নিয়ে আইএফএ কর্তারা ঠিক করেন, তিন প্রধানকে বাদ দিয়ে ১১টি দলকে নিয়ে লিগের ম্যাচ হবে। এখান থেকে প্রথম তিনটি দল এবং ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান এবং মহামেডানকে নিয়ে মোট ৬টি দলের মধ্যে লিগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ৬ দলের এই লিগ থেকেই ঠিক হবে এবারের কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন। একই সঙ্গে প্রিমিয়ার লিগের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচও পিছিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক হয়, ২৭ জুলাই থেকে লিগ শুরু হবে। সুপার সিক্স যেহেতু অনেক দেরিতে শুরু হবে, তাই তিন প্রধানের প্রস্তুতিতে কোনও সমস্যা হবে না। শুধু মোহনবাগান ৩-৪টি ম্যাচ খেলতে চাইলেও আইএফএর তরফে দেওয়া হবে ৫টি ম্যাচ।
আইএফএর এই সিদ্ধান্তে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, “আগে আইএফএ তাদের প্রস্তাব লিখিত আকারে পাঠাক। তারপর আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।” এদিন মিটিংয়ে ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান প্রতিনিধিরা এলেও ছিলেন না মোহনবাগানের কোনও প্রতিনিধি। এই প্রসঙ্গে দেবাশিস দত্ত বললেন, “ইস্টবেঙ্গল মিটিংয়ে যা বলেছে তা সবই মৌখিক। আমরা তো ক্লাবের পুরো প্রস্তাবটাই লিখিত আকারে দিয়েছি। আমরা যখন লিখিত দিয়েছি, তখন আর মিটিংয়ে না গেলেও কোনও সমস্যা নেই।” আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “তিন প্রধানের সমস্যাটাও আমাদের ভাবতে হবে। তবে আশা করি নতুন নিয়মে তিন প্রধানের খেলতে কোনও সমস্যা হবে না।”
সমস্যা অবশ্য অন্য জায়গায় হতে পারে। তিন প্রধান যেহেতু লিগের সব ম্যাচ শুরু থেকে খেলবে না, তাই অন্যান্য ক্লাবগুলি এই মরশুমে অবনমন বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেন। কারণ, একটা দল শুরু থেকে খেলে অবনমনের আওতায় পড়বে। আর তিন প্রধান শুরু করবে সুপার সিক্স থেকে। ফলে বাজে খেললেও অবনমন হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ফলে একটা লিগে কিছু ক্লাবের জন্য দু’রকম নিয়ম হতে পারে না। ফলে যা পরিস্থিতি, এই মরশুমে প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপের অবনমন সম্ভবত বন্ধ রাখতে চলেছে আইএফএ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.