সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবারই ক্লাবের শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠান। সেজে উঠেছে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিষ্ঠা দিবসের উৎসব ঘিরে লাল-হলুদ সমর্থকদের উত্তেজনাও তুঙ্গে। আবেগতাড়িত ভক্তরা ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী থাকার প্রহর গুনছেন। আর এমন আনন্দময় পরিবেশকে রীতিমতো বিষাক্ত করে তুলল একটি টুইট। ‘পশ্চিমবঙ্গে বসে ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করছেন কেন?’ মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়ের এই টুইট ঘিরেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে কলকাতা ময়দানে।
মঙ্গলবার টুইটারে তথাগত রায় লেখেন, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাব শতবর্ষের উৎসবে মেতে উঠেছে। কিন্তু এই ক্লাবের কর্তা বা কোনও সমর্থকদের মাথায় কি কখনও এসেছে, যে তারা পশ্চিমবঙ্গে বসে ইস্টবেঙ্গলকে কেন সমর্থন করছে?’ স্বাভাবিকভাবেই এমন টুইটে ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ সমর্থকরা। একটি ক্লাবের নাম ইস্টবেঙ্গল বলেই যে এ রাজ্যে বসে তাকে সমর্থন করা যাবে না, এমন কথার কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, দেশভাগের এত বছর পরেও কেন এখন এমন মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করছেন তথাগত রায়। এমন মন্তব্যের জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও সরব সদস্য-সমর্থকরা।
গোটা বিষয়টিতে বেশ বিরক্ত ইস্টবেঙ্গলের সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত। বলেন, “একটা ক্লাবের নামের সঙ্গে অন্যকিছু গুলিয়ে ফেলাটা ভুল হবে। রাজনীতিবিদরা সব বিষয়েই রাজনীতির রং লাগাতে চান। যেটা মেনে নেওয়া যায় না। ওঁদের মনে রাখতে হবে, আমরা ভোট দিয়ে ওঁদের জনপ্রতিনিধি করি। তাই মানুষের আবেগে আঘাত লাগে, এমন কিছু বলা ওঁদের উচিত নয়। এই ক্লাবের সাফল্য মানে রাজ্য তথা দেশের মুখ উজ্জ্বল হওয়া। স্পোর্টিং স্পিরিট না থাকলেই মানুষ এভাবে ভাবতে পারে। এসব যুক্তিহীন, মূর্খের মতো আলোচনা বাদ দিয়ে আমাদের উচিত ফুটবলের উন্নতি নিয়ে কথা বলা।”
মোহনবাগান কোষাধ্যক্ষ দেবাশিস দত্তের গলাতেও একই সুর। তাঁর কথায়, “ইস্টবেঙ্গলের নামকরণ ১৯২০ সালে হয়েছিল। তারপর আর নামবদল হয়নি। কিন্তু তার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা না টানাই ভাল। তাহলে তো প্রশ্ন উঠতে পারে, এ দেশে কেন পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে? একটাই তো বঙ্গ এখানে। তাই এসব প্রশ্ন ভ্রান্ত।”
তথাগত রায়ের মন্তব্য ঘিরে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ফের টুইট করেন তিনি। বাংলায় লেখেন, “ভাষার সমস্যা হতেই পারে-বিদেশি ভাষা তো! যদি আমি পাঁচ মিনিটের জন্য ঠান্ডা মাথায় ভাবি, ওয়েস্ট বেঙ্গলে থেকে কেন আমি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক, তাহলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে। আমার বাড়ি ছিল পূর্ব বাংলায়, সেখানে আমার যাবার অধিকার নেই। আমার বক্তব্য, এই কথাটা যেন আমরা বাঙালরা কখনও ভুলে না যাই।” উদ্বাস্তুদের ক্ষোভের কথাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। যদিও এতেও সমর্থকদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।
ভাষার সমস্যা হতেই পারে-বিদেশী ভাষা তো ! যদি আমি পাঁচ মিনিটের জন্য ঠান্ডা মাথায় ভাবি, ওয়েস্ট বেঙ্গলে থেকে কেন আমি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক,তাহলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে-আমার বাড়ি ছিল পূর্ববাংলায়,সেখানে আমার যাবার অধিকার নেই | আমার বক্তব্য, এই কথাটা যেন আমরা বাঙালরা কখনো ভুলে না যাই |
— Tathagata Roy (@tathagata2) July 30, 2019
Abuses pouring in,basically due to lack of understanding. Many of us have forgotten our East Bengali roots,but support the club of that name. The fact that I support East Bengal while sitting in West Bengal shd constantly remind me that we were driven out because of our religion
— Tathagata Roy (@tathagata2) July 30, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.