দুলাল দে: রবিবারের যুবভারতীর আসল নায়ক কে? বেইতিয়া না সঞ্জীব গোয়েঙ্কা (Sanjiv Goenka)? সেলফির আব্দার সেই ম্যাচের শুরু থেকে। বিরতিতে মোহনবাগান সমর্থকদের আব্দার এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছল যে, সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে ভিভিআইপি বক্স ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হল সাধারণ সমর্থকদের মাঝে। পাশে বসা প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় তার আগে এটিকে কর্ণধারকে মোহনবাগান প্রেমের গল্প শোনাচ্ছিলেন।
প্রশ্ন: আপনার চোখমুখ বলছে, ডার্বির পরিবেশ দেখে আপনি উচ্ছ্বসিত।
সঞ্জীব গোয়েঙ্কা: অসাধারণ পরিবেশ। না এলে সত্যিই মিস করতাম।
প্রশ্ন: আগে কখনও ডার্বি দেখেছেন?
সঞ্জীব: অবশ্যই। ইদানীং কাজের চাপে আসা হয় না। আগে অনেক ডার্বি মাঠে বসে দেখেছি।
(পাশ থেকে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলে উঠলেন, আমি যখন খেলছি, সঞ্জীব তখন আমার খেলা দেখতে অনেকবার মাঠে এসেছে)।
প্রশ্ন: আইএসএলে এটিকের ম্যাচ থাকলে আপনি মাঠে আসেন। আজকের ডার্বির সঙ্গে কীভাবে দুটো পরিবেশের তুলনা করবেন?
সঞ্জীব: সত্যি বলতে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের সঙ্গে ভারতীয় ফুটবলের অন্য কিছুর তুলনা হয় না। (গ্যালারির দিকে আঙুল তুলে) গ্যালারির পরিবেশ দেখুন। তা হলে আমাকে কথা বলতে হবে না।
প্রশ্ন: মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আপনি এখন আলোচনার শীর্ষে।
সঞ্জীব: তাই নাকি? (হেসে উঠে) আজ মাঠ ঢোকার পর থেকে দেখছি, মোহনবাগান সমর্থকরা দারুণভাবে আমায় স্বাগত জানিয়েছে। দিনের শেষে আমিও তো মোহনবাগান সমর্থক।
প্রশ্ন: আপনি কিন্তু গাঁটছড়া বাঁধার জন্য ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন।
সঞ্জীব: হুঁ, বসেছিলাম। কিন্তু শুরু থেকে আমি মোহনবাগানের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছিলাম। মোহনবাগানের প্রতি আমার ভালবাসা ছোটবেলা থেকে।
প্রশ্ন: তবু মোহনবাগান সমর্থকরা গাঁটছড়া বাঁধার পর মারাত্মক টেনশনে।
সঞ্জীব: কেন?
প্রশ্ন: যদি আপনার হাত ধরে ক্লাবের ইতিহাস অবলুপ্ত হয়?
সঞ্জীব: এরকম হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। সমর্থকদের বলছি, মোহনবাগানকে আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্লাব করতে চাই। এই মরশুমে যদি এটিকে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার সুযোগ পায়, তখন সামনের মরশুমে এটিকে মোহনবাগান চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলবে।
প্রশ্ন: এটিকে মোহনবাগান না, মোহনবাগান এটিকে?
সঞ্জীব: এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু হয়নি। পরের বোর্ড মিটিংয়ে সব ঠিক হবে।
প্রশ্ন: আরপিএসজি মোহনবাগান হওয়ার সম্ভাবনাও আছে?
সঞ্জীব: না। আরপিএসজি ক্লাবের নামের সঙ্গে জুড়বে না। শুধু এটিকে নামটা জুড়বে।
প্রশ্ন: জার্সির রং, লোগো এগুলি নিয়েও সমর্থকরা টেনশনে।
সঞ্জীব: টেনশনে থাকার কিছু নেই। সবে চুক্তি হল। বোর্ড মিটিংয়ে এ নিয়ে আলোচনা হবে। সমর্থকদের বলছি, চিন্তা করার কিছু নেই। আমি নিজেও মোহনবাগান সমর্থক। কোনও কিছু সিদ্ধান্তের আগে ওদের সেন্টিমেন্টটাও মাথায় রাখা হবে।
প্রশ্ন: মোহনবাগানের এই ফুটবলাররা উদ্বুদ্ধ হবেন কী করে? এঁরা জেনেই গিয়েছেন আপনার দলে সামনের বছর ওঁদের জায়গা নেই?
সঞ্জীব: কে বলল? আজ মোহনবাগানের কয়েকজন ফুটবলারের খেলা দারুণ লাগল। এই দলে যারা ভাল খেলবে, পরের মরশুমে নিশ্চয়ই জায়গা পাবে। ভাল ফুটবলারদের সমস্যা হয় না।
প্রশ্ন: মোহনবাগান ক্লাবে কবে যাচ্ছেন?
সঞ্জীব: নিশ্চয়ই যাব। সবে চুক্তি হল। জানেন তো মোহনবাগানের সঙ্গে চুক্তির জন্য সৌরভ দারুণ খুশি। আজ ডার্বি দেখতে এসে বুঝলাম, মোহনবাগান সমর্থকরা দারুণ খুশি। অপেক্ষা করুন। যা হবে, ক্লাবের জন্য ভালই হবে। আজ যেমন আমি এলাম আর মোহনবাগান এগিয়ে গেল!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.