Advertisement
Advertisement

Breaking News

Sunil Chhetri

রহিমের গোল মিসেই অধরা জয়! ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারত? অনেক প্রশ্ন রেখে গেলেন সুনীল

পরিবর্ত হিসেবে নামা রহিম আলি সোনার সুযোগ পেয়েছিলেন নামার সঙ্গে সঙ্গেই।

Sunil Chhetri left lot questions unanswered about Indian football

ছবি: পিন্টু প্রধান

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:June 7, 2024 12:23 am
  • Updated:June 7, 2024 3:44 am  

কৃশানু মজুমদার: সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় কি একই সময়ে সম্ভব? সম্ভব নয়। অথচ ভারতীয় ফুটবলে এমনই এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যায়।এক সূর্য ঢলে পড়ছে পশ্চিম আকাশে। ঠিক সেই সময়ে আর এক সূর্য পূব আকাশে উদিত হচ্ছে! শেষমেশ একই সময়ে সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় হতে হতেও হল না বাঙালির বড় প্রিয়, বড় আপন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে।
সুনীল ছেত্রী নামের এক তারার অস্তাচলে যাওয়ার সময়ে ভারতীয় ফুটবলে নতুন এক ভোর হয়ে আসতেই পারতেন ব্যারাকপুরের রহিম আলি। ভারত অধিনায়কের বিদায়ী মঞ্চে নায়ক রহিমের আবির্ভাব হল না।

Advertisement
রেফারির শেষ বাঁশির পরে কোমরে হাত দিয়ে ঈষৎ ঝুঁকে ভারত অধিনায়ক। রণক্লান্ত। আবেগে ভারাক্রান্তও বটে।
অনতিদূরে যৌবনের তেজে দৃপ্ত রহিমও কোমরে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। হতাশাচ্ছন্ত। হতেই পারত আজ তাঁর দিন। ১৯ বছর ধরে দেশীয় ফুটবলের জোয়াল টানা লোকটাকে দামি ফেয়ারওয়েল গিফট দিতে পারতেন অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলা রহিম। শুধু তাই নয়, ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ভারতকে পৌঁছে দিয়ে নতুন এক রূপকথার নায়ক বনে যেতে পারতেন তিনিই! যা ভাবা হয়, তা বাস্তবে রূপ পায় না। এক্ষেত্রেও তাই-ই হল।
প্রায় মাঝমাঠের কাছ থেকে উড়ে আসা বলটা ধরে বাংলার স্ট্রাইকার যখন ছুটছেন কুয়েতের গোলমুখে, তখন তাঁকে তাড়া করছেন দুই ডিফেন্ডার। গোলের মুখ ছোট করে বেরিয়ে এসেছেন কুয়েতি গোলকিপারও। গোটা স্টেডিয়াম ফুটছে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ বুঝি এবার হাজির!
রহিমের গড়ানে শট কুয়েতের জালে আশ্রয় নিল না। বরং গোলকিপার সুলেইমান ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ধরে ফেললেন। বিস্মিত গ্যালারি। অবাক রহিম নিজেও। বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। এভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করে বসবে তাঁর ডান পা।
ওই গোল হয়ে গেলে আজ তিনি মেঘের উপর দিয়ে হাঁটতেন। সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে একই নিঃশ্বাসে উচ্চারিত হত তাঁর নাম। বহু যুদ্ধের সৈনিকও সরে যাওয়ার আগে নিশ্চিন্ত হতেন এই ভেবে যে তাঁর ব্যাটন ঠিক হাতেই পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবারের ভারত-কুয়েত ম্যাচ ড্রয়ের কোলে ঢলে পড়ল। ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হওয়ায় ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ইগর স্টিমাচের দলের পৌঁছনোর সম্ভাবনা বড়সড় ধাক্কা খেল। পরের রাউন্ডে পৌঁছনো একপ্রকার অসম্ভব। পরের ম্যাচটাই মহাশক্তিধর কাতারের সঙ্গে। সেই খেলায় ভারত নামবে কিংবদন্তিকে ছাড়াই। কী হবে, তার উত্তর দেবে সময়। তবে দেওয়াললিখন ইতিমধ্যেই পড়া হয়ে গিয়েছে সবার।
যুবভারতীতে সুনীলের ‘লাস্ট ড্যান্স’। শেষের জলসায় আবেগ ছিল, ঝরে পড়ছিল ভক্ত-অনুরাগীদের ভালোবাসাও। ভারত-কুয়েত বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচ ছাপিয়ে তা হয়ে উঠেছিল ভারত অধিনায়কের ফেয়ারওয়েল ম্যাচ। নব্বই মিনিটের শেষে গার্ড অফ অনারের সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মহানায়ক নিজে।
কান্না বড় ছোঁয়াচে। গ্যালারিতে ভারত অধিনায়কের মা স্থির থাকতে পারলেন না। তিনিও কাঁদছেন ছেলের সঙ্গে। আবেগের এহেন বিস্ফোরণে হয়তো ধামাচাপা পড়ে যাবে সুনীলের সতীর্থদের ব্যর্থতা।
প্রথমার্ধে আনোয়ার আলির বিষাক্ত ছোবল লক্ষ্যভ্রষ্ট হল। গুরপ্রীত সিং সান্ধু তাঁর দীর্ঘ বাহু প্রসারিত করে রুখে না দাঁড়ালে কী যে হত! দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পরিবর্ত হিসেবে নামা রহিমের ওরকম সোনার সুযোগ নষ্ট!
দেশের প্রাক্তন স্ট্রাইকার শিশির ঘোষ অনুজ রহিমের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বলছেন, ”মিস হতেই পারে। গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ঠিকই। রহিম ওই জায়গায় পৌঁছেছিল বলেই আপনি এই প্রশ্নটা আমাকে করছেন।”

দেশের আরেক প্রাক্তন ফুটবলার কৃষ্ণেন্দু রায় বলছেন, ”দুটো দলই সুযোগ পেয়েছিল। রহিম আলি অপেক্ষাকৃত সহজ সুযোগ হয়তো পেয়েছিল। গোলটা হলে ভালোই হত। আশা করব আগামী দিনে রহিম আলি আরও ভালো খেলবে।” আশাবাদী তো হওয়াই যায়। কিন্তু আশার কথা কি শোনাচ্ছে দেশের ফুটবল?

সুনীল ছেত্রী ভারতীয় ফুটবলের দিগন্তবিস্তৃত এক নীল আকাশ। তাঁর যুগও শেষ হয়ে গেল। আদর-ভালোবাসা-শ্রদ্ধা শরীরে মেখে যুবভারতীর ওই টানেল দিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে বেরিয়ে গেলেন সুনীল।
তাঁর মহানিষ্ক্রমণ অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেল। সুনীল-পরবর্তী ভারতীয় ফুটবলে কি নেমে আসবে আরও অন্ধকার? এদেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎই বা কী? দেশের ফুটবল আইকন সরে গেলেন। উদীয়মান সূর্য কোথায়? সুনীল ছেত্রী-বাইচুং ভুটিয়াদের ব্যক্তিগত দক্ষতা নিয়েই মজে ছিল এক একটা প্রজন্ম। কিন্তু দেশের ফুটবল তো সেই তমসাচ্ছন্নই। ফুটবলে কি আদৌ ফুল ফুটবে? অগ্রগতি হবে?
প্রশ্ন অনেক, উত্তর জানা নেই।

[আরও পড়ুন: বাধ মানল না চোখের জল, গার্ড অফ অনারে মাঠ ছাড়লেন সুনীল]

অনতিদূরে যৌবনের তেজে দৃপ্ত রহিম কোমরে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। হতাশাচ্ছন্ত। হতেই পারত আজ তাঁর দিন। ১৯ বছর ধরে দেশীয় ফুটবলের জোয়াল টানা লোকটাকে দামি ফেয়ারওয়েল গিফট দিতে পারতেন অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলা রহিম।
শুধু তাই নয়, ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ভারতকে পৌঁছে দিয়ে নতুন এক রূপকথার নায়ক হতে পারতেন তিনিই! যা ভাবা হয়, তা বাস্তবে রূপ পায় না। এক্ষেত্রেও তাই-ই হল।
প্রায় মাঝমাঠের কাছ থেকে উড়ে আসা বলটা ধরে বাংলার স্ট্রাইকার যখন ছুটছেন কুয়েতের গোলমুখে, তখন তাঁকে তাড়া করছেন দুই ডিফেন্ডার। গোলের মুখ ছোট করে বেরিয়ে এসেছেন কুয়েতি গোলকিপারও। গোটা স্টেডিয়াম ফুটছে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ বুঝি এবার হাজির!
রহিমের গড়ানে শট কুয়েতের জালে আশ্রয় নিল না। গোলকিপার সুলেইমান ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ধরে ফেললেন। বিস্মিত গ্যালারি। অবাক রহিম নিজেও। বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। এভাবে বি্শ্বাসঘাতকতা করে বসবে তাঁর ডান পা।
ওই গোল হয়ে গেলে আজ তিনি মেঘের উপর দিয়ে হাঁটতেন। সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে একই নিঃশ্বাসে উচ্চারিত হত তাঁর নাম। বহু যুদ্ধের সৈনিকও সরে যাওয়ার আগে নিশ্চিন্ত হতেন এই ভেবে যে তাঁর ব্যাটন ঠিক হাতেই পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবারের ভারত-কুয়েত ম্যাচ ড্রয়ের কোলে ঢলে পড়ল। ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হওয়ায় ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ইগর স্টিমাচের দলবলের পৌঁছনোর সম্ভাবনা বড়সড় ধাক্কা খেল। পরের রাউন্ডে পৌঁছনো একপ্রকার অসম্ভব। পরের ম্যাচটাই মহাশক্তিধর কাতারের সঙ্গে। সেই খেলায় ভারত নামবে কিংবদন্তিকে ছাড়াই। কী হবে, তার উত্তর দেবে সময়। তবে দেওয়াললিখন ইতিমধ্যেই পড়া হয়ে গিয়েছে সবার।
যুবভারতীতে সুনীলের ‘লাস্ট ড্যান্স’। শেষের জলসায় আবেগ ছিল, ঝরে পড়ছিল ভক্ত-অনুরাগীদের ভালোবাসা। ভারত-কুয়েত বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচ ছাপিয়ে তা হয়ে গিয়েছিল সুনীল ছেত্রীর ফেয়ারওয়েল ম্যাচ। নব্বই মিনিটের শেষে গার্ড অফ অনারের সময়ে ভেঙে পড়লেন মহানায়ক নিজে। কান্না বড় ছোঁয়াচে। গ্যালারিতে ভারত অধিনায়কের মা স্থির থাকতে পারলেন না। তিনিও কাঁদছেন ছেলের সঙ্গে। আবেগের এহেন বিস্ফোরণে হয়তো ধামাচাপা পড়ে যাবে সুনীলের সতীর্থদের ব্যর্থতা। প্রথমার্ধে আনোয়ার আলির বিষাক্ত ছোবল লক্ষ্যভ্রষ্ট হল। গুরপ্রীত সিং সান্ধু তাঁর দীর্ঘ বাহু প্রসারিত করে রুখে না দাঁড়ালে কী যে হত! দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পরিবর্ত রহিমের ওরকম সোনার সুযোগ নষ্ট!
দেশের প্রাক্তন স্ট্রাইকার শিশির ঘোষ অনুজ রহিমের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বলছেন, ”মিস হতেই পারে। গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ঠিকই। রহিম ওই জায়গায় পৌঁছেছিল বলেই আপনি এই প্রশ্নটা আমাকে করছেন।”
দেশের আরেক প্রাক্তন ফুটবলার কৃষ্ণেন্দু রায়ও তরুণ স্ট্রাইকারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এক সময়ের ডাকাবুকো রাইট ব্যাক বলছেন, ”দুটো দলই সুযোগ পেয়েছিল। রহিম আলি অপেক্ষাকৃত সহজ সুযোগ হয়তো পেয়েছিল। গোলটা হলে ভালোই হত। আশা করব আগামী দিনে রহিম আলি আরও ভালো খেলবে।” আশাবাদী তো হওয়াই যায়। কিন্তু আশার কথা কি শোনাচ্ছে দেশের ফুটবল?
সুনীল ছেত্রী ভারতীয় ফুটবলের এক দিগন্তবিস্তৃত নীল আকাশ। তাঁর যুগও শেষ হয়ে গেল। আদর-ভালোবাসা-শ্রদ্ধা শরীরে মেখে যুবভারতীর ওই টানেল দিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে বেরিয়ে গেলেন সুনীল ছেত্রী। তাঁর মহানিষ্ক্রমণ অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেল। সুনীল-পরবর্তী ভারতীয় ফুটবলে কি নেমে আসবে আরও অন্ধকার? এদেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎই বা কী? দেশের ফুটবল আইকন সরে গেলেন। উদীয়মান সূর্য কোথায়? সুনীল ছেত্রী-বাইচুং ভুটিয়াদের ব্যক্তিগত দক্ষতা নিয়েই মজে ছিল এক একটা প্রজন্ম। কিন্তু দেশের ফুটবল তো সেই তমসাচ্ছন্নই। ফুটবলে কি আদৌ ফুল ফুটবে? অগ্রগতি হবে? প্রশ্ন অনেক, উত্তর জানা নেই। 

 

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub