দুলাল দে: ২০১৭’তে যোগ দেওয়ার পর থেকে বেঙ্গালুরু এফসির (Bengaluru FC) সাফল্যই সাফল্য। প্রথম বছরেই চ্যাম্পিয়ন হতে হতে একেবারে শেষ মুহূর্তে চেন্নাইন এফসির কাছে হেরে রানার্স। পরের বছরেই চ্যাম্পিয়ন। ২০১৯—’২০তে লিগ টেবিলের তৃতীয়। এহেন সফল একটি ক্লাব যে কীভাবে গত মরশুমে সপ্তম স্থানে চলে গেল, সেটাই চরম বিস্ময়ের। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া হচ্ছে, গত মরশুমের খারাপ ফল ভুলে, এই মরশুমে ফের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন সুনীল ছেত্রীরা। যে কারণে, জার্মান কোচ মার্কো পেজাউলির হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে বেঙ্গালুরু।
দলের দায়িত্ব নিয়েই ট্রান্সফার উইন্ডোতে ভাল বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে প্রতিভাবান উদান্তা সিং, সুরেশ সিংদের মতো ভারতীয় ফুটবলারদের সই করিয়েছেন পেজাউলি। যে দল তৈরি হয়েছে তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার সংমিশ্রনে।
বিশ্বফুটবলে কোচ হিসেবে মার্কো পেজাউলি কিন্তু বেশ বড় নাম। জার্মানির প্রাক্তন বিশ্বজয়ী কোচ জোয়াকিম লো’কে সরিয়ে জার্মানির দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব কার্লসরুয়ের কোচ হয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই বেঙ্গালুরু ম্যানেজমেন্ট মার্কো পেজাউলির হাতে দায়িত্ব দিয়ে মনে করছে, জার্মান কোচের হাত ধরেই ফিরে আসবে বেঙ্গালুরুর পুরনো গৌরব।
তবে শুধুই নামীদামী কোচ নন। স্ট্রাইকারে সুনীল ছেত্রীকে (Sunil Chhetri) সাহায্য করার জন্য বেলজিয়ামের প্রথম ডিভিশন ক্লাব বিয়ারস্কট থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ২৫ বছর বয়সী প্রিন্স ইবারাকে। যোগ দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ব্রুনো র্যামিরেজ। শুধু ব্রাজিলিয়ান নন। ট্রান্সফার মার্কেটে সই করানো হয়েছে ইরানের মিডফিল্ডার ইমান বাসাফাকেও। ডিফেন্স সামলানোর জন্য আভাই এফসি থেকে লোনে এসেছেন অ্যালান কোস্তা।
বিদেশি ফুটবলারদের পাশাপাশি এবার ভারতীয় রিক্রুটের দিকেও দেখুন— এসসি ইস্টবেঙ্গল থেকে নেওয়া হয়েছে সার্থক গোলুইকে। এটিকে মোহনবাগান থেকে ফ্রি ট্রান্সফারে জয়েশ রানে। এদের পাশাপাশি ট্রাউ এফসির স্ট্রাইকার বিদ্যাসাগর সিংকেও রাখতে হবে। যিনি গত আই লিগে ১৫ ম্যাচে গোল করেছেন ১২টি। এদের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে, হরমনপ্রীত, রোহিত কুমার, দানিশ ফারুখদের। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, হরমোনজিৎ খাবরা, রাহুল ভেকের মতো ফুটবলারদেরও।
নতুন নতুন বেশ কিছু ফুটবলার সই হলেও, এই মরশুমে বেঙ্গালুরুর সাফল্যর জন্য কিন্তু সেই নজর রাখতে হবে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর দিকেই। যত বয়স বাড়ছে, ততই যেন নিজের পারফরম্যান্সকে আরও ধারালো করছেন সুনীল। শেষ তিন বছরে, বেঙ্গালুরুর জন্য সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই।
সুনীলের বাইরে এই মরশুমে নজর রাখতে হবে বেঙ্গালুরুর গ্যাবনিজ ডিফেন্ডার মুসাভু কিংয়ের দিকে। ইউরোপের বড় ক্লাবগুলিতে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা এই গ্যাবনিজ ডিফেন্ডারকে টপকে বেঙ্গালুরুর জালে বল জড়াতে এবার কিন্তু কালঘাম ছোটাতে হবে অন্য দলের স্ট্রাইকারদের। ব্রাজিল এবং পর্তুগালের ক্লাবে খেলা, বাহিয়া অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ব্রুনো র্যামিরেজ কিন্তু এবার মার্কো পেজাউলির তুরুপের তাস হতে পারেন।
২০ নভেম্বর নর্থইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচ দিয়ে এবারের আইএসএল (ISL) অভিযান শুরুর আগে কোচ মার্কো পেজাউলি বলছেন, “এর আগে আমি যে দলেরই দায়িত্ব নিয়েছি, একটা পার্থক্য সবার চোখে পড়েছে। আশা করছি, বেঙ্গালুরুকেও তার পুরো গৌরবের রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে পারব।” কোচের আশ্বাসবাণীই এখন ভরসা বেঙ্গালুরুর সমর্থকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.