শিলাজিৎ সরকার: খবরটা জানতেন। তাই কণিকা বর্মন (Kanika Burman) বাড়তি আগ্রহ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জার্মানি বনাম কোস্টা রিকা (Germany vs Costarica) ম্যাচ দেখতে বসেছিলেন। কলকাতা ময়দানে পরিচিত নাম কণিকার প্রথম মহিলা হিসাবে কলকাতা লিগে ম্যাচ খেলানোর পালক রয়েছে। বাংলার একমাত্র মহিলা ফিফা রেফারি কণিকা অবশ্য এখন জাতীয়স্তর পার হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়মিত ম্যাচ খেলাচ্ছেন। বৃহস্পতিবারের পর আরও বড় মঞ্চে পা রাখার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
জার্মানি বনাম কোস্টা রিকা ম্যাচে ইতিহাসে নাম তুলেছেন ফ্রান্সের স্টেফানি ফ্রাপার্ট (Stephanie Frappart), প্রথম মহিলা রেফারি হিসাবে ছেলেদের বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলিয়ে। আর সেটাই যেন আরও অনুপ্রেরণা দিয়েছে কণিকাকে। নিজেই বলছিলেন, “আমি প্রথম থেকেই বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলানোর স্বপ্ন দেখেছি। তবে সেটা ছিল মেয়েদের বিশ্বকাপ। কারণ ওটাই ছিল আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় মঞ্চ। তবে কালকের পর আরও বড় মঞ্চের স্বপ্ন দেখছি।
ফিফাকে ধন্যবাদ মেয়েদের এই সুযোগ দেওয়ার জন্য। স্টেফানি কাল সারা বিশ্বের সব মহিলা রেফারির প্রতিনিধিত্ব করেছে। ও বুঝিয়ে দিয়েছে, একজন মেয়েও ছেলেদের ম্যাচ শক্ত হাতে পরিচালনা করতে পারে।” ম্যাচের ফলাফলের থেকেও স্টেফানির পারফরম্যান্সের দিকে চোখ ছিল কণিকার। বর্তমানে বাংলার একমাত্র মহিলা ফিফা রেফারির কথায়, “বিশ্বকাপের ম্যাচ পরিচালনা সহজ কথা নয়। মেয়েদের হোক বা ছেলেদের, প্রচণ্ড চাপ থাকে। একজন রেফারি হিসাবে কাল স্টেফানির পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বুঝতে পারছিলাম। তাই ও কিভাবে ম্যাচটা খেলায়, সেটা দেখতে আগ্রহী ছিলাম। প্রথমার্ধে ওর পজিশন মাঝে মাঝে ভুল হচ্ছিল। আসলে কোস্টা রিকা অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক খেলছিল। ফলে ওঠানামা করতে গিয়ে স্টেফানি সমস্যায় পড়ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলই আক্রমণে ওঠায় আর কোনও সমস্যা হয়নি ওর। দারুণভাবে বাকি ম্যাচটা খেলাল।”
শুরুর দিকে মহিলা রেফারি দেখে হাসাহাসি হত। নানা কটাক্ষ সহ্য করতে হয়েছে কণিকাকে। স্টেফানিরা ইতিহাস তৈরির পর কি কোনও পরিবর্তন হবে এই ছবিটায়? সেটা নিয়ে অবশ্য ভাবতেই চাইছেন না কণিকা। তাঁর স্পষ্ট জবাব, “যারা অন্যদের নিয়ে হাসাহাসি করার, তারা করবেই। হয়তো বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে জার্মানি বনাম কোস্টা রিকা ম্যাচে মহিলা রেফারি দেখার পর কিছু লোকের মানসিকতা বদল হবে। তবে অনেকেরই হবে না। তাই এসব নিয়ে না ভেবে নিজের কাজটা করে যেতে চাই।”
ভারত একদিন বিশ্বকাপে খেলবে, সেই স্বপ্ন দেখে এদেশের ১৩০ কোটি মানুষ। এবার সেই সঙ্গে আরও বড় মঞ্চে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন কণিকার মতো মহিলা রেফারিরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.