সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডেভিড উইলিয়ামসকে ‘উইলি’ বলে ডাকেন রয় কৃষ্ণ (Roy Krishna)। ওয়েলিংটন ফিনিক্সে খেলার সময়ে ডেভিডের সঙ্গে জুটি বেঁধে রয় কৃষ্ণ মুগ্ধ করেছিলেন সবাইকে। ভারতে এসেও তাই করেছেন এবং করছেন। শুক্রবারের ডার্বিতে দুই বন্ধুর দাপটেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal)। রয় কৃষ্ণ গোল করলেন, বন্ধু উইলিয়ামসকে দিয়ে গোলও করালেন। খেলা ভাঙার সামান্য আগে ফিজিয়ান তারকার ঠিকানা লেখা সেন্টার থেকে বিষাক্ত ছোবলে গোল করে গেলেন জাভি। দিনান্তে হাজার ওয়াটের আলো খেলা করছিল দুই বন্ধুর মুখে। অন্যদিকে ব্রাইটের পায়ের জাদুও এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) ডিফেন্স ভাঙতে পারল না। ম্যাচের শেষে টিভি ক্যামেরার সামনে রয় কৃষ্ণ বলে গেলেন, “কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট পেয়ে আমি খুশি।”
ফিরতি ডার্বির (Derby) লড়াইটা ছিল রয় কৃষ্ণ ও ব্রাইটের মধ্যেই। দু’দলের সমর্থকরা তাকিয়ে ছিলেন এই দুই তারকার দিকে। এবারের আইএসএলে (ISL 2020) ছুটছেন ফিজিয়ান তারকা। ফিরতি ডার্বিতে গোল করায় রয় কৃষ্ণর গোলের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ টি। অন্য দিকে ব্রাইট অনেক পরে লাল-হলুদে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু অল্প দিনেই তিনি হয়ে গিয়েছেন এসসি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের নয়নের মণি। এদিন তাঁকে কড়া মার্কিংয়ে রাখা হল। বল পায়ে ভয়ঙ্কর হতে পারলেন না এসসি ইস্টবেঙ্গলের ১০ নম্বর জার্সিধারী।
খেলার ১৫ মিনিটে তিরির লম্বা বলের ফ্লাইট বুঝতে না পেরে বিপদ ডেকে আনেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড়। বিদ্যুৎগতিতে দৌড়ে কৃষ্ণ পিছনে ফেলে দেন এসসি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সকে। গোলের মুখ ছোট করে এগিয়ে আসেন বহু যুদ্ধের সৈনিক সুব্রত পাল। তাঁকে মাটি ধরিয়ে লাল-হলুদের জালে বল জড়িয়ে দেন এটিকে মোহনবাগান তারকা। শুরুতেই কৃষ্ণ ইঙ্গিত দিয়ে যান, দিনটা তাঁর। বিরতির ঠিক আগে তিরির আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে ফেরে এসসি ইস্টবেঙ্গল। এই ভাবে গোল হজম করা মেনে নিতে পারেননি রয় কৃষ্ণ। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তা প্রকাশও করে ফেলেন কৃষ্ণ।ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, “যেভাবে আমাদের গোল খেতে হয়, তাতে আমি একেবারেই খুশি হইনি। আমরা জানতাম সেট পিসে ওরা খুবই বিপজ্জনক।” অবশ্য ম্যাচে ওই একবারই ঠকতে হয় এটিকে মোহনবাগান রক্ষণকে।
বিরতির ঠিক আগে এসসি ইস্টবেঙ্গল সমতা ফেরানোয় বুকে বল এসেছিল লাল-হলুদ সমর্থকদের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের দখল পুরোপুরি নিয়ে নেয় অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাসের ছেলেরা। থুড়ি, বলা ভাল রয় কৃষ্ণর দৌরাত্ম্যে তখন মাঘোমা-ব্রাইটদের ডিফেন্সের থরহরি কম্পমান অবস্থা। সেই ঠকঠকানি আর কাটাতে পারেনি এসসি ইস্টবেঙ্গল। কৃষ্ণ বললেন, ”গোলটা হজম করার পরে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা গেমপ্ল্যান পুরোপুরি বদলে ফেলি। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত আমরা নিজেদের উজাড় করে দিই। প্রমাণ করে দিই আমরা কতটা ভাল।”
এদিনের জয়ের ফলে এটিকে মোহনবাগানের পয়েন্ট ৩৯। সাপ-লুডোর লিগ টেবলে মুম্বই সিটি-র থেকে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে গেল সবুজ-মেরুন। কৃষ্ণ বলছেন, “এই জয়ের ফলে আত্মতুষ্ট হলে চলবে না। মুম্বইয়ের থেকে আমরা পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছি ঠিকই তবে সামনে কঠিন ম্যাচ রয়েছে। সেই ম্যাচ নিয়ে আমাদের এ বার ভাবতে হবে।” ডার্বি জিতে উঠেই রয় কৃষ্ণদের চোখ হায়দরাবাদ ম্যাচের দিকে। সোমবার হায়দরাবাদের চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় এটিকে মোহনবাগান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.