সুলয়া সিংহ: ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের তুরুপের তাস কে? ফুটবল বিশেষজ্ঞ থেকে সমর্থক, এককথায় জানিয়ে দিয়েছিলেন উত্তরটা। হাইমে স্যান্টোস কোলাডো। অথচ দুরন্ত ফর্মে থাকা সেই ফুটবলারকেই প্রথম একাদশে না রেখে ৬৫ হাজার দর্শককে বিস্মিত করলেন লাল-হলুদ কোচ আলেজান্দ্রো। মোহনবাগান সমর্থকদের মুখগুলোও ফ্যাকাসে করে দিল দলে সালভা চামোরোর অনুপস্থিতি। ডুরান্ড কাপে যিনি নজর কেড়েছিলেন, গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন একাধিকবার, সেই চামোরোও এদিন হাইভোল্টেজ ম্যাচে রইলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। কিন্তু কেন?
কোলাডো প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বেশ কড়া গলাতেই আলেজান্দ্রো বললেন, “দলের কোচ আমি। তাই কে খেলবে আর কে বসবে, সে সিদ্ধান্ত আমার। মার্কোস অথবা কোলাডোর মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হত। একজন খেললে অন্যজনকে বসতেই হত। তাই মার্কোসকেই প্রথম এগারোয় রেখেছিলাম।” একই কারণ বিদ্যাসাগর ও সামাদের জন্যও। কিন্তু দল ড্র করার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ছন্দে থাকা কোলাডোর জায়গায় আনকোরা মার্কোসের উপর বেশি ভরসা করা কি ঠিক হল? কলকাতার আবহাওয়া, সমর্থক, মাঠ-সবকিছুর সঙ্গেই খাপ খাইয়ে ফেলেছেন স্প্যানিশ কোলাডো। সেখানে বড় ম্যাচে মার্কোসকে নামিয়ে গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল। তবে আলেজান্দ্রো বলছেন, মার্কোসের পারফরম্যান্সে তিনি খুশি। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ২০ মিনিট দল ভালই খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে অনেকগুলো পরিবর্তনও আনা হয়েছিল, যাতে স্কোর হয়। পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন কোলাডোও। কিন্তু প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙা যায়নি। তাই একজন ফুটবলারের জন্যই যে ম্যাচ অমীমাংসিত, তা মানতে নারাজ আলেজান্দ্রো।
মাঠের ফলাফলের মতোই মাঠের বাইরেও দুই কোচের কথাতে মিল পাওয়া গেল। মোহনবাগান কোচ কিবু ভিবুনাও চামোরোকে প্রথম একাদশে না রাখা নিয়ে খানিকটা একইরকম ব্যাখ্যা দিলেন। বললেন, “সবাইকেই তো সুযোগ দিতে হবে। চামোরো তো ডুরান্ড কাপেও গোল করেছে। কিন্তু ফাইনালে আমরা জিততে পারিনি। তাই আজও ও খেললেই যে স্কোরকার্ড পালটে যেত বলা যাবে না। তাছাড়া সুহের অনেকগুলো সুযোগ পেয়েছিল। ও গোল করতে পারলেই ছবিটা বদলে যেত।” তবে সুযোগ তৈরি করেও ডার্বির মতো মঞ্চে গোল করতে না পারাটা যে কোচকে চিন্তায় রাখছে, তা লুকোলেন না ভিকুনা। স্প্যানিশ কোচের কথায়, স্ট্রাইকারদের এই গলদটা সংশোধন করতে হবে। ড্র হলেও একটা বিষয় অবশ্য ভিকুনাকে স্বস্তি দিচ্ছে। প্রতিপক্ষ তাদের খেলার স্টাইলটা ধরতে পারেনি। তাই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
দিনের শেষে মাঠে দুটি করে পয়েন্ট ফেলেই এল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। অর্থাৎ পয়েন্টের নিরিখে দু’দলের মধ্যে ব্যবধান এখনও সেই দু’পয়েন্টেরই। তবে ম্যাচ ড্র হওয়ায় কোনও শিবিরেই যে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ল না, তা বলাই যায়।সেজন্যই হয়তো ম্যাচ শেষে সন্তুষ্ট দেখাল মোহনবাগান কর্তা সৃঞ্জয় বোসকে। তিনি বলছিলেন, “মোহনবাগানের ছেলেরা মনোমুগ্ধকর ফুটবল খেলেছে। ৯০ মিনিটের পরেও আমরা সুযোগ তৈরি করেছি। তাই ড্র হলেও দলের পারফরম্যান্সে খুশি।” অন্যদিকে, এদিনের ম্যাচের সেরা হয়েছেন বেইতিয়া। ম্যাচ সেরার উপহার তিনি তাঁর পরিবারকে উৎসর্গ করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.