স্টাফ রিপোর্টার: ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন এখন বিশ বাঁও জলে। ফলে নতুন সভাপতি নির্বাচন দূর অস্ত, কবে নির্বাচন হবে, সেটাই জানেন না ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন কর্তারা। তাই কোনও কোনও মহল থেকে সভাপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা উঠলেও এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবছেন না ফেডারেশন কর্তারা।
বিষয়টি নতুন নয়। ২০১৭ সালে ফেডারেশনের শেষ নির্বাচনের সময় থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। প্রফুল প্যাটেল তখন নির্বাচিত হয়ে ফের সভাপতির আসনে বসেছেন ফেডারেশনে। সেই সময়েই স্পোর্টস কোড না মেনে নির্বাচনের বিধিভঙ্গ হয়েছে দাবি করে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা ঠুকে দেন রাহুল মেহেরা। পালটা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে ফেডারেশন (AIFF)। এরপরেই প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি এবং প্রাক্তন জাতীয় অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়কে ওম্বুডসম্যান নিযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর থেকে এখনও ঝুলে রয়েছে ফেডারেশনের নির্বাচন। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত এই দুই সদস্য যতদিন না রিপোর্ট জমা দেবেন, ততদিন পর্যন্ত ফেডারেশনে নির্বাচন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে এ বছরের ডিসেম্বরেই ফেডারেশন সভাপতি হিসেবে প্রফুল প্যাটেলের জমানা শেষ। এখনই বলা সম্ভব নয়।
ফেডারেশনের নির্বাচন কী পদ্ধতিতে করা উচিত, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে একটা খসড়া তৈরি করে ফেডারেশন কর্তাদের কাছে জমা দিয়েছিলেন কুরেশি এবং ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়। যা দেখামাত্র পত্রপাঠ নাকচ করে দেন ফেডারেশন কর্তারা। সংবিধান অনুযায়ী তিনটে টার্মের বেশি সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না প্রফুল প্যাটেল। তাই পুরনো সংবিধান অনুযায়ী পরের নির্বাচনে প্রফুল প্যাটেল দাঁড়াবেন কি না, সেটা বড় ব্যাপার নয়। বড় ব্যাপার হল, যদি ফেডারেশনকে পাঠানো খসড়ার মতোই কুরেশির রিপোর্টও সেই কথাই বলে, তাহলে সিনিয়র সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত-সহ ফেডারেশনের ৯০ ভাগ কর্তাই আর পরের নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। তবে কুরেশি কী রিপোর্ট জমা দেবেন, তিনিই জানেন। কিন্তু ফেডারেশনের তরফে এটাও ঠিক হয়েছে, খসড়ার মতোই যদি রিপোর্টটাও এক থাকে, তাহলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে ফেডারেশন থেকে। ফলে নির্বাচন ঝুলে থাকার সম্ভাবনা। প্রথমত কুরেশি এবং ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় কবে রিপোর্ট জমা দেবেন, সেটাই কেউ জানেন না। তার উপর সেই রিপোর্ট ফেডারেশন মেনে না নিলে, আদালতে কতদিন লড়াই চলবে, সবই ভবিষ্যতের হাতে। যতদিন না ফয়সালা হবে, ততদিন পর্যন্ত প্রফুল প্যাটেলের সভাপতি পদে থেকে যাওয়াতে কোনও সমস্যা নেই।
এর সঙ্গে যোগ করতে হবে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ। যা ফিফার কাছে থেকে রীতিমতো ছিনিয়ে নিয়ে এসেছেন প্রফুল প্যাটেল। অনূর্ধ্ব-১৭ ছেলেদের বিশ্বকাপ করার পর পরই মহিলা বিশ্বকাপ। আর এদেশে মহিলা বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যাবতীয় আলোচনা করেছেন প্রফুল প্যাটেল। এই বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তিনি যদি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে বিশ্বকাপ আয়োজন করাই তো সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে, করোনা ভাইরাসের কারণে, মহিলা বিশ্বকাপ পিছিয়ে দিয়েছে ফিফা। কবে হবে কেউ জানেন না। যদিও আশা করা হচ্ছে, সব কিছু ঠিক হয়ে গেলে পরের বছর শুরুর দিকেই হতে পারে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত প্রফুল প্যাটেল না থাকলে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়েই প্রবল সমস্যা হতে পারে। ফলে খুব দ্রুত ফেডারেশনের নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, “ফেডারেশনের কেউই আপাতত নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না। সভাপতি প্রফুল প্যাটেলের নির্দেশে ভারতীয় ফুটবলকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.