হোসে ব্যারেটো: প্রকৃত ফাইনাল হতে দিন পনেরো বাকি। তবে আইএসএলের (ISL) ফাইনাল আজ হয়ে যাচ্ছে। এটিকে মোহনবাগান–মুম্বই সিটি, দু’টি দল এবারের টুর্নামেন্টে সেরা। নিশ্চয় সকলে স্বীকার করবেন। সেই দু’টো দল যখন মুখোমুখি হয়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার ছাড়পত্র জোগাড়ের জন্য লড়াই করবে তখন ব্যাপারটা অন্যমাত্রা পেতে বাধ্য। তবে এটিকে মোহনবাগানকে (ATK Mohun Bagan) সামান্য হলেও এগিয়ে রাখব। কারণ তাদের হাতে থাকছে দু’টো অপশন। জিতলে তো কথাই নেই, ড্র করলেও চলবে। সেখানে মুম্বইকে (Mumbai City) জিততেই হবে। জিতলে তবেই তারা ৪০ পয়েন্টে পৌঁছবে। তখন দু’দলের পয়েন্ট সমান হলেও প্রথম সাক্ষাতে জেতার সূত্রে গ্রুপ লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে মুম্বই সিটি।
যা যা বললাম সবই অঙ্ক। কিন্তু অঙ্কের বাইরে থাকছে মাঠের লড়াই। মানসিকতার লড়াই। কৌশলের লড়াই। সব মিলিয়ে এখানেও আন্তনিও লোপেজ হাবাস বাহিনীকে না এগিয়ে উপায় নেই। মানছি, মুম্বইয়ের আক্রমণ ভাগ বেশ ভাল। ওগবেচে, ফন্ড্রের মধ্যে বোঝাপড়া যেমন সুন্দর। তাছাড়া প্রচুর পাস খেলে। কোচ সার্জিও লোবেরো বোঝাতে পেরেছেন, তিকিতাকা ফুটবল ভারতেও সম্ভব। তাছাড়া মাঝমাঠ বেশ ভাল। সাই গদার্ড, বিপিন সিং, রেইনার ফার্নান্ডেজরা নিজেদের জায়গা সহজে ছেড়ে বসে না। মুশকিল হল ডিফেন্স। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি প্রতিপক্ষের আক্রমণের সময় রক্ষণকে কেমন নড়বড়ে লাগছে। মুতার্দা ফল, মেহতাব সিংরা দ্রুত গুছিয়ে তুলতে পারে না। প্রথম ম্যাচে ওগবেচে গোল দিয়ে দলকে জিতিয়ে দিয়েছিল। তাই এবার মুম্বই কিছুটা হারানোর কিছু নেই মনোভাব নিয়ে খেলতে নামবে।
তবে এটিকে মোহনবাগান শিবিরের চাপ অনেক বেশি। সবুজ–মেরুন জার্সি পরার সূত্রে জানি, সমর্থকদের প্রত্যাশার মাত্রা এই সময় কোথায় গিয়ে পৌঁছয়। এই দল বেশ কয়েকবছর ধরে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই তাদের মধ্যে বোঝাপড়া যেমন ভাল। অন্যদিকে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ গতবার তারা পেয়ে গিয়েছে। এবার তাদের একটাই লক্ষ্য, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার ছাড়পত্র জোগাড় করা। তাহলে এশিয়ার সেরা দলগুলোর সঙ্গে খেলতে পারবে। তাই রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস, মনবীরদের একটা কথাই বলব, তোমরা শুরুতে যেভাবে হোক একটা গোল করো। তাহলে মুম্বই ছন্দ হারাতে বাধ্য। তোমরা একটা গোল করার অর্থ তাদের দিতে হবে দু’গোল। অর্থাৎ মাথার উপর শুরুতে দু’গোল করার বোঝা চাপিয়ে দাও। দেখবে চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হবে।
কে না জানে সন্দেশ–তিরি–প্রীতম সমৃদ্ধ ডিফেন্স লাইন সবুজ–মেরুনের সেরা। গতম্যাচে হয়তো ভাল খেলেনি। এক–আধটা ম্যাচে হতেই পারে। তার মানে এই নয় যে পরের পর খারাপ খেলবে। তাই যদি হত তাহলে এটিকে মোহনবাগান টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কম গোল খাওয়া দল হত না। মার্সেলিনো, এডু গার্সিয়া ফিরছে। এই দু’জন দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার অর্থ খেলার ছন্দ ফিরে পাওয়া। তবে সন্দেশদের সাবধান থাকতে হবে ডেডবল নিয়ে। ওরা কিন্তু বেশ কিছু গোল করেছে কর্নার, ফ্রি–কিক, এমনকী পেনাল্টি থেকে। তাই ডেডবলের দিকে ভালমতো নজর রেখো। আবার এটাও তো ঠিক, গতম্যাচ বাদ দিলে মুম্বই টানা ছ’টা ম্যাচ জেতেনি। শেষ ম্যাচ ৬–১ গোল জেতাকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছি না। গুমোস আবার নেই। লোবেরো প্রমাণ করেছেন আক্রমণাত্মক খেলতে তিনি অভ্যস্ত। সেখানে এটিকে মোহনবাগান কিন্তু টানা অপরাজিত। তাই হাবাস চাইবেন ম্যাচটা জিতে প্রতিশোধ নেওয়ার সঙ্গে লোবেরোর আত্মাভিমানে আঘাত করতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.