দুলাল দে: মেয়াদ শেষের আগেই প্রাক্তন জাতীয় অধিনায়ক মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে টেকনিক্যাল কমিটি থেকে সরিয়ে দিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF)। তবে শুধু মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যই নন, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও দুই প্রাক্তন ফুটবলার অরুণ মালহোত্রা আর লিংডোকেও। এঁদের জায়গায় টেকনিক্যাল কমিটিতে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হলেন ভারতীয় ফুটবল আইকন বাইচুং ভুটিয়া (Bhaichung Bhutia) আর বিহারের সন্তোষ সিং। যাঁকে নিয়ে অবশ্য প্রবল আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ফুটবল মহলে। জাতীয় দলের হয়ে কোনওদিন না খেলা ফুটবলার ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিসাধনের যে টেকনিক্যাল কমিটি, সেখানে সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় প্রবল বিস্ময় ভারতীয় ফুটবল মহলে।
আইএম বিজয়নের চেয়ারম্যানশিপে চার বছরের মেয়াদে টেকনিক্যাল কমিটিতে নেওয়া হয়েছিল মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। কিন্তু বছর না গড়াতেই কোনও কারণ না দেখিয়েই টেকনিক্যাল কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হল মনোরঞ্জনকে। অথচ এই মনোরঞ্জনই শুরুতে বিজয়নের চেয়ারম্যানশিপে টেকনিক্যাল কমিটির পদ নিতে রাজি ছিলেন না। এমনকী, দায়িত্ব নিতে পারবেন না বলে সরকারিভাবে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ফেডারেশনকে। এর পরেই ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে নিজে উদ্যোগী হয়ে মনোরঞ্জনকে অনুরোধ করেন টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যপদ নেওয়ার জন্য। মান ভাঙে প্রাক্তন জাতীয় অধিনায়কের। ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটিতে যোগ দিতে রাজিও হয়ে যান। এর পর বহু মিটিংও করেছেন তিনি। কিন্তু দেখা গেল, চার বছরের মেয়াদের টেকনিক্যাল কমিটিতে এক বছর যেতে না যেতেই তিনি বাদ।
আসলে কিছুদিন আগে সাজি প্রভাকরণকে বরখাস্ত করার সময়ই ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত হয় সব কমিটি ভেঙে দিয়ে ফের নতুন করে কমিটি গঠন করা হবে। সেই সূত্রেই বিভিন্ন কমিটিতে রদবদল করল ফেডারেশন। যাতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কমিটির যাঁরা চেয়ারম্যান ছিলেন, তাঁরা চেয়ারম্যান পদেই রয়েছেন। সদস্যদের পরিবর্তন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে এক ব্যক্তি দুটো কমিটিতে থাকতে পারবেন না। যা আগে অনেকে ছিলেন। মনোরঞ্জন ছাড়াও বাংলা থেকে বাদ পড়েছেন আরও দুজন। মার্কেটিং কমিটিতে ছিলেন দেবরাজ চৌধুরী, তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। টুর্নামেন্ট কমিটিতে ছিলেন সৌরভ পাল, তাঁকেও বাদ দেওয়া হয়েছে।
তবে আইএফএ ফের সৌরভের নাম পাঠাচ্ছে ফেডারেশনকে কোনও না কোনও কমিটিতে ঢুকিয়ে নেওয়ার জন্য। সেইভাবে আশা করাই যায় দু-এক দিনের মধ্যেই সৌরভ ফেডারেশনের কোনও একটি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। তবে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যর ঘটনাটি সত্যি অবাক করার মতো। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “কেনই যে নেয় আর কেনই যে বাদ দেয় সেটাই বুঝি না। সেই সময় আমি কিছুতেই টেকনিক্যাল কমিটিতে ঢুকতে চাইনি। ফেডারেশন কর্তারা আমাকে হাতে-পায়ে ধরে অনুরোধ করে ঢুকিয়েছেন। কিন্তু কেন বাদ দিলেন তার তো একটা কারণ জানাবেন। তবে টেকনিক্যাল কমিটি একটা নাম কা ওয়াস্তে কমিটি। খেলা দেখতে বিভিন্ন মাঠে যান কর্তারা। আর টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যদের মিটিং করতে হয় অনলাইনে। এই মুহূর্তে যাঁরা টেকনিক্যাল কমিটিতে বসে আছেন, তাঁদের যোগ্যতাই নেই মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে টেকনিক্যাল কমিটিতে নেওয়ার বা বাদ দেওয়ার।”
তবে অবাক করার বিষয়, এক বছর আগে যখন এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তখন বাইচুং ভুটিয়াকে এই কমিটিতে রাখাই হয়নি। হঠাৎ করে তিনি আবার এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন বাইচুং। সিকিমে বাইচুংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে টেকনিক্যাল কমিটিতে যোগ দেওয়ার কথা স্বীকারও করে নেন তিনি। কিন্তু সন্তোষ সিংয়ের যোগ দেওয়াটা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। বিহারের হয়ে জাতীয় স্তরে খেললেও দেশের হয়ে কোনওদিন খেলেননি তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.