Advertisement
Advertisement

Breaking News

East Bengal

‘ফুটবল না খেলে আমাদের লজ্জায় ফেলবেন না’, ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় মনোরঞ্জন

ইনভেস্টরের সঙ্গে আলোচনার জন্য তাঁকে ডাকা হলেও তিনি যেতে রাজি হননি।

Monoranjan Bhattacharya is concerned about the future of East Bengal | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:July 19, 2021 2:20 pm
  • Updated:July 19, 2021 2:20 pm  

মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: খুব বেশি দিনের কথা নয়। কিছুদিন আগেই ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর সমর্থকদের ক্ষমতা দেখলাম। বেশ কিছু ক্লাব মিলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সমান্তরাল, ইউরোপিয়ান সুপার লিগ করতে চেয়েছিল, যা ক্লাব সমর্থকরা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। করোনার মধ্যেই রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু করে দেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, চেলসির মতো ক্লাবের সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত সদস্য, সমর্থকদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে ক্লাবগুলি কিন্তু বাধ্য হয়, সুপার লিগে খেলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াতে। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ক্লাবের কর্তা, ইনভেস্টর সবাইকে অনুরোধ করছি, দয়া করে সমর্থকদের বেদনার জায়গাটা অনুভব করুন। আমার মতো লক্ষ লক্ষ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক কিন্তু দেখতে চাইছি না, ক্ষমতার কেন্দ্রে কারা রয়েছে। আমরা শুধু দেখতে চাই, ইস্টবেঙ্গল এবারেও ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলছে!

এর আগে হয়তো ইস্টবেঙ্গল অনেক বার ভাল দল গড়তে পারেনি। কখনও হয়তো চ্যাম্পিয়ন হওয়াও সম্ভব হয়নি। এর জন্য ঘরে-বাইরে মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে কথা শুনতে হয়েছে। পরে হয়তো আমরা ঘুরেও দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে কেন্দ্র করে এটা কী চলছে? আমরা, সমর্থকরা এখন আর ভাল দল গড়ার অপেক্ষা করি না। অপেক্ষা করে থাকি জানার জন্য, আমার ক্লাব শেষ পর্যন্ত খেলবে তো?

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্নাতক হলেই Kolkata Police-এ মিলতে পারে চাকরি, সুযোগ হাতছাড়া করবেন না]

গত বছর থেকে এক জিনিস শুরু হয়েছে। বছরের শুরুতেই অন্য ক্লাবগুলির সমর্থকদের মতো বলতে পারছি না, হ্যাঁ, আমরা তো খেলছি। এখন আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হয়, কবে আসবে সেই দিন? যেদিন সরকারিভাবে জানতে পারব, হ্যাঁ, খেলব। তারপর যেনতেন প্রকারে একটা দল করে মাঠে নেমে যাব। এটা কি পাড়ার ক্লাব নাকি? এটা ইস্টবেঙ্গল ক্লাব! এই ক্লাবের আমি শুধু সমর্থক নই, সদস্য, প্রাক্তন ফুটবলার, প্রাক্তন অধিনায়ক, আর আই লিগ (তৎকালীন ন্যাশনাল লিগ) জয়ী কোচ। তাই ক্লাবের ভাল-মন্দটা নিশ্চয়ই অন্য অনেকের থেকে কিছু কম বুঝি না।

প্রায়ই শুনি ক্লাব বলছে, টার্মশিটে যা আছে চূড়ান্ত চুক্তিতে আবার তা নেই। আর ইনভেস্টররা বলছে, ক্লাব ভুল বলছে, নির্দিষ্ট করে পয়েন্ট তুলে পার্থক্য দেখিয়ে দিক। কে সত্যি, কে মিথ্যে কী করে বুঝব? যখন টার্মশিটে সই হয়েছিল, কিংবা টার্মশিট নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তখন তো আমাদের মতো ঘরের ছেলেদের ডাকা হয়নি। ফলে কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যে জানার উপায় নেই। আমি শুধু একটা জিনিসই দেখতে পাচ্ছি, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এই মরশুমে ফুটবল খেলবে নাকি, সেটা ঠিক নেই। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ফুটবল খেলবে না, এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারব না।

কিছুদিন আগে একটি রক্তদান শিবিরে নীতুর (দেবব্রত সরকার) সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেখানেও ওকে বলেছি, নীতু আইএসএলটা কিন্তু খেলতে হবে। নাহলে আমরা ভারতীয় ফুটবলের মূলস্রোত থেকে হারিয়ে যাব। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দেশের এক নম্বর ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলবে না, সেটা মানা যায় নাকি? গত মরশুমে একেবারে শেষ মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল যখন আইএসএল (ISL) খেলার সুযোগ পেল, বিশ্বাস করুন, দারুণ আনন্দ পেয়েছিলাম। বিদেশে থাকে, এরকম অনেককে জানি, আইএসএলের ম্যাচের দিন সকালে জানতে চাইতেন, দাদা, আজ জিতব তো? আইএসএল হবে, আর ইস্টবেঙ্গল মাঠের বাইরে বসে খেলা দেখবে বিশ্বজুড়ে সদস্য, সমর্থকরা ব্যাপারটা মেনে নেবেন? আপনারা বলতে পারেন, টার্মশিট বা চুক্তিপত্রে যে সমস্যার কথা আছে, সেগুলি কী আমি জানি? সত্যিই জানি না। আমাদের মতো প্রাক্তনদের তো কোনওদিন এই চুক্তির প্রক্রিয়ার মধ্যে ক্লাব যুক্ত করেনি। তাহলে জানব কী করে?

[আরও পড়ুন: রোনাল্ডোকে ফের টেক্কা LM 10-এর, অনন্য রেকর্ড গড়ল কোপা হাতে মেসির ছবি]

কিছুদিন আগে, সুমিত মুখার্জি আমায় বলল, শ্রী সিমেন্টের প্রতিনিধি শ্রেণিক শেঠের সঙ্গে সবাই মিলে আমরা আলোচনায় বসতে যাব। আমি যেতে রাজি হইনি। কেন যাব? ক্লাব কি আমাদের সরকারিভাবে ইনভেস্টরের সঙ্গে আলোচনার জন্য নিয়োগ করেছে? আমাদের কথা ইনভেস্টর শুনবে কেন? যদি ইনভেস্টর কিছু বলে, আমরা কি ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে কোনও কথা দেওয়ার জায়গায় আছি? তবে হ্যাঁ, ক্লাবের পাশাপাশি গত মরশুম থেকেই শ্রেণিক শেঠের সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয়। গতবারের যখন শেষ মুহূর্তে খেলার সুযোগ এল, তখন হাতে আর কোনও ভাল ফুটবলার নেই। ওঁর সঙ্গে কথা বলে মনে হয়ছিল, এই মরশুমে শুরু থেকে ভাল দল গড়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে ওরা। আর শ্রী সিমেন্ট ভারতীয় সার্কিটে কতবড় হাউস, তা গুগল ঘাঁটলেই সবাই জানতে পারবেন। আইনের কচকচানি মাঠের বাইরে কর্তারা করুন। আমরা সাধারণ ইস্টবেঙ্গল প্রেমীরা শুধু দেখতে চাই, মাঠের ভিতর লাল-হলুদ জার্সিটা ফুটবল নিয়ে ছুটছে। প্লিজ, না খেলে আমাদের আর লজ্জার মধ্যে ফেলবেন না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement