সুলয়া সিংহ: পাঁচতারা হোটেলে পাশাপাশি বসে দুই দলের কোচ ও অধিনায়ক। তাঁদের ঠিক পাশেই অভিনেতা দেব মঞ্চ আলোকিত করেছেন। তাঁর হাত দিয়েই ডার্বির জন্য উন্মোচিত হল বিশেষ স্বর্ণমুদ্রা। যা দিয়ে হবে মরশুমের প্রথম বড় ম্যাচের টস। আর খেলার শেষে ম্যাচ সেরার হাতে তুলে দেওয়া হবে সেই সোনার কয়েন। ডার্বির প্রাক্কালে এমন আয়োজনের সাক্ষী কলকাতার ময়দান এর আগে কখনও থাকেনি। এলাহি আয়োজনে অভিভূত অভিনেতা দেবও। সবদিক থেকেই এবার ডার্বির গুরুত্ব আকাশ ছোঁয়া।
ডার্বি মানে তো শুধুই দুই দলের মাঠের লড়াই নয়। এর সঙ্গে জুড়ে থাকে বহু মানুষের পরিশ্রম, সমর্থকদের আবেগ, প্রত্যাশা আরও অনেককিছু। কিন্তু এসব ছাড়াও ডার্বিই যে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ব্র্যান্ডিং, সেদিকটাই এবার বেরিয়ে এল আইএফএ-র হাত ধরে। টিকিটে ব্র্যান্ডিং থেকে দর্শকদের জন্য বিমা, সমস্ত ব্যবস্থাই শক্ত হাতে করেছে আইএফএ। তাই ৯০ মিনিটের লড়াইয়ের সঙ্গে এই প্রথমবার বড় ম্যাচের চাকচিক্যও আলোচনার শীর্ষে। তবে আয়োজন যতই এলাহি হোক না কেন, দিনের শেষে নায়ক হবে সেই ম্যাচের ফলাফলই। আর তাই প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখছেন না দু’দলের কোচই। চলতি লিগে আপাতত দুই পয়েন্ট এগিয়ে আলেজান্দ্রোর ইস্টবেঙ্গল। তাছাড়া গত কয়েকটি ম্যাচ দেখলেই বোঝা যায় ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ ও ফরোয়ার্ড তুলনামূলক বেশি শক্তিশালী। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন কোলাডো-রালতেরাও। সেদিক থেকে খানিকটা পিছিয়ে কিবু ভিকুনার দল। তাছাড়া এর আগে দু’টি ডার্বির অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। তা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গল যে অ্যাডভান্টেজে আছে, তা মানতে নারাজ আলেজান্দ্রো।
ডার্বির হ্যাটট্রিকের মুখে দাঁড়িয়ে লাল-হলুদ কোচ বলছেন, “এই ম্যাচের গুরুত্ব আলাদা। এটা একটা নতুন ম্যাচ। তাই চ্যালেঞ্জটাও নতুন।” সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের নিরিখে ধারে-ভারে মোহনবাগান খানিকটা ব্যাকফুটে থাকলেও স্প্যানিশ কোচ অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। বলছেন, “এই শহর, এখানকার ফুটবল সমর্থক, সমস্ত ফুটবলার ও কোচেদের জন্য ম্যাচটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিঃসন্দেহে ওদের মিডফিল্ড ভাল। কোলাডোও ভাল। কিন্তু মনে রাখবেন, আমরা গোটা দলের বিরুদ্ধে খেলব।” দলে কোনও চোটাঘাত না থাকাও স্বস্তিতে রাখছে কোচকে।
তবে ম্যাচের সময় নিয়ে একেবারেই খুশি নন দুই প্রধানের কোচই। ডার্বি দিয়েই সাধারণত কলকাতা ময়দানে লিগের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে থাকে। কিন্তু এবারের ছবিটা অনেকটাই আলাদা। ঘরোয়া লিগে এবার শুরুর দিকেই মুখোমুখি হচ্ছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু অধিনায়ক থেকে কোচ থেকে, কেউই এই ম্যাচকে ভাগ্য নির্নায়ক মনে করছেন না। বরং কোচেদের চিন্তায় ফুটবলারদের চোট-আঘাত। আলেজান্দ্রো বলছিলেন, “আবহাওয়া ভাল না। কখনও কাঠফাটা রোদ তো কখনও বৃষ্টি। তাতে মাঠের হালও খারাপ হচ্ছে। ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়বে। মনে হয় না নিজেদের সেরাটা দিতে পারে।” একই সুর কিবুর গলাতেও। বিকেল ৩টেয় না হয়ে ম্যাচ সন্ধেয় হলে বেশি ভাল হত বলে দাবি তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.