সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগের কার্যকরী কমিটির সভাতে সচিব দেবাশিস দত্তকে (Debasish Dutta) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এটিকে (ATK) ইস্যুতে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে আলোচনা করতে। এদিন কার্যকরী কমিটির সভায়, দেবাশিস দত্তর সঙ্গে আরও চার সদস্যকে যুক্ত করা হল, সচিবকে সাহায্য করার জন্য। যাঁদের মধ্যে আইনি দিক দেখার জন্য হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়ও রয়েছেন।
নানা আলোচনার মধ্যে এদিন কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে ঠিক হয়, এখন থেকে পাঁচ সদস্য পুরো ব্যাপারটা দেখবে। ক্লাবের আগে থেকে ‘এটিকে’ শব্দটি তোলার জন্য অনেক আইনানুগ প্রক্রিয়া রয়েছে। দেবাশিস দত্ত জানান, এটিকে শব্দটি তোলার জন্য যাতে আইনি জটিলতা কিছু না থাকে, তা ঠিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্যই প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়কে নিয়ে পাঁচ জন সদস্যকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে।
এদিন কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ের পর দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘সকলের মতো আমরাও চাইছি, খুব দ্রুত এটিকে নামটি ক্লাবের সামনে থেকে উঠে যাক। কিন্তু তারজন্য একটা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া মিটে হয়তো খুব দ্রুতই পুরো সমস্যাটার সমাধান হবে। ২৪ মার্চ আমাদের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পরের দিন থেকেই এই ইস্যুটি নিয়ে আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট হয়েছি।’
মিটিং শেষে সহ সভাপতি কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ‘বাংলার গর্ব সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে সম্মান এবং ধন্যবাদ জানাতেই হবে। তাঁকে সব সময় স্বাগত। তিনি সেই সময় এগিয়ে না এলে মোহনবাগানের আইএসএল (ISL) খেলাই সমস্যা হয়ে যেত। তাছাড়া সঞ্জীব গোয়েঙ্কা নিজে একজন আদ্যোপান্ত মোহনবাগানী। তাই উনি নিজেও নিশ্চয়ই মোহনবাগান সমর্থকদের আবেগকে বুঝবেন। আর এরজন্য কোথাও কোনও চাপের সম্পর্কই নেই।
সমর্থকদের মতো আমি নিজেও চাই না মোহনবাগানের (Mohun Bagan) আগে ‘এটিকে’ নামক কোনও ক্লাবের নাম থাকুক। এই চুক্তি যখন হয়েছিল, তখন আমাদের মতো অনেকেই কমিটিতে ছিল না। কমিটিতে এসে প্রথম দিন থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। কিন্তু এত বড় একটি সংস্থার সঙ্গে আইনি চুক্তির একটা ব্যাপার সরাতে গেলে, সেখানেও কিছু আইনি সমস্যা থাকে। আর তারজন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। তারজন্য মাঠে খেলা দেখতে যাব না, এটা ঠিক নয়।’
কিছুদিন আগে এটিকে ইস্যুতে সচিব দেবাশিস দত্তর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান বেশ কিছু মোহনবাগান সদস্য সমর্থকরা। এদিন কার্যকরী কমিটির সভায় বিষয়টি আলোচনার সময় সবাই নিন্দা করেন। ঠিক হয়, ক্লাবের সম্মান নষ্ট হয়, এরকম কোনও কিছু ঘটলেই তা ক্লাবের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ক্লাবের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই মানা হবে।
মোহনবাগানের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা হলেন, অর্থ সচিব মুকুল সিনহা এবং কলকাতা হাইকোর্টের তিনজন আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক, অয়ন চক্রবর্তী এবং ত্রিনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। সচিব দেবাশিস দত্ত বলছিলেন, ‘মোহনবাগান ক্লাবের একটা সম্মান রয়েছে। আমরা কিছুতেই ক্লাবের ঐতিহ্যের বাইরে যেতে পারি না। এমন কিছু করতে পারি না, যাতে ক্লাবের ইমেজ রাস্তায় নেমে আসে। কিন্তু কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন সমর্থক সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বেশ কিছু জায়গায় গিয়ে বিক্ষোভের নামে ক্লাবকে এমনভাবে রাস্তায় নামিয়ে আনছে, পুরো বিষয়টি আমরা শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এরপর ক্লাবের সংবিধান মেনে আইন অনুযায়ী শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পরে সহ সভাপতি কুণাল ঘোষও বলছিলেন, ‘প্রতিবাদ সব সময় স্বাগত। কিন্তু প্রতিবাদের মধ্যে কোথাও একটা শোভন-অশোভনের বিষয় রয়েছে। তারজন্য কারও বাড়ির সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করা একদমই মেনে নেওয়া যায় না। মোহনবাগানকে নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যদি এই অশোভনীয় ভাবে শব্দ প্রয়োগ করেন, তা একদমই ঠিক নয়। সমর্থকরাই ক্লাবের প্রাণ। কিন্তু তারজন্য খারাপ শব্দ ব্যবহার কেন? খারাপ শব্দ ব্যবহার করলে কি বেশি প্রতিবাদ দেখানো হয়? কারও বাড়ির সামনে না গিয়ে ঠিক শব্দ প্রয়োগেও তো প্রতিবাদ করা যায়।’
সিএবির অ্যাপেক্স কাউন্সিলে যাওয়ার জন্য ক্লাবের ক্রিকেট সচিব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মহেশ টেকরিওয়াল। সেই জায়গায় মোহনবাগানের নতুন ক্রিকেট সচিব হলেন তন্ময় চট্টোপাধ্যায়। ক্লাবের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য দিন ঠিক হয়েছে, ২১ এবং ২২ জানুয়ারি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.