শিলাজিৎ সরকার: মণিপুরের হিংসার ছবি দেখে স্তম্ভিত গোটা দেশ। ভারতের সীমান্ত পার হয়ে ঘটনার রেশ পৌঁছে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও। মে মাসের শুরু থেকেই বিপর্যস্ত মণিপুর। নেট যোগাযোগ বন্ধ, ফলে বাইরেই দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় সীমিত হয়ে গিয়েছে। সেটা যেন বাড়তি চাপ কর্মসূত্রে বাড়ি থেকে দূরে থাকা মণিপুরিদের। এদের মধ্যে একটা বড় অংশই ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে। কেউ ফুটবলার, কেউ সাপোর্ট স্টাফ। রাজ্য যখন জ্বলছে, তখন বাড়ি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বসে থাকা সহজ নয়। খারাপ খবর শোনার একটা আতঙ্ক যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁদের।
এই অবস্থায় ক্লাবে থাকা মণিপুরের সাত ফুটবলার ও গোলকিপার কোচের মানসিক চাপ কমাতে উদ্যোগী হয়েছেন মহামেডান কর্তারা। ক্লাবের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছে, চাইলে পরিবারের সদস্যদের কলকাতায় নিয়ে আসতে পারেন তাঁরা। সেই সদস্যদের এখানে থাকার যাবতীয় ব্যবস্থা করবেন ক্লাব কর্তারা। ইতিমধ্যেই যেমন ক্লাবের গোলকিপার কোচ ললিত থাপা তাঁর পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে এসেছেন মণিপুর থেকে। ক্লাবের উদ্যোগেই তাঁদের রাজারহাটের একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ক্লাব সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ বলেন, “মণিপুরের ফুটবলাররা পরিবারের কথা ভেবে চিন্তিত। তাই ওদের স্বস্তি দিতেই আমরা এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক্ষেত্রে ওরা অনেক খোলা মনে খেলতে পারবে।”
আপাতত মণিপুরের সাত ফুটবলার রয়েছে মহামেডানে। তাঁরা হলেন বিকাশ সিং, জেমস সিং, রজার খুমান, বেদেশ্বর সিং, জেটলি, উইলিয়াম লালগৌলিয়ান এবং ডেট্টল মৈরাংথাম। তাঁরা এখনও পরিবারকে কলকাতায় আনার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তবে ক্লাবের এমন প্রস্তাবে অনেকটাই স্বস্তিতে তাঁরা। কারণ প্রত্যেকেই মণিপুরে থাকা পরিবার নিয়ে উদ্বিগ্ন। যেমন উইলিয়াম। সেনাসদস্য বাবা পাওখোঙ্গাম কুকির পোস্টিংয়ের সুবাদে ২০১০ সাল থেকেই তিনি কলকাতার বাসিন্দা। কিন্তু পরিবারের সবাই আছেন মণিপুরের চূড়াচন্দ্রপুর রাজ্যের কইতে গ্রামে।
এরমধ্যে প্রাক্তন সুবেদার হওয়ায় পাওখোঙ্গামের উপরে রয়েছে গ্রামরক্ষার গুরু দায়িত্ব। উইলিয়াম বলছিলেন, “বাবা একা নয়, গ্রামের ১৮ বছরের বেশি বয়সের সব যুবকই নিয়মিত টহল দিচ্ছে। আমাদের গ্রামে কিছু না হলেও আশপাশে ঝামেলা লেগেই আছে। তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে আমাদের ওখানেও।” সেই আতঙ্ক থেকে দলের মণিপুর সদস্যদের স্বস্তি দিতে উদ্যোগী হয়েছেন মহামেডান কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.