সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার সন্ধ্যায় বড় ম্যাচ। এখন যাকে ডাকা হয় ডার্বি বলে। আর সেই ম্যাচের আগে ফুটবল পাগলদের মুখে মুখে শচীন দেব বর্মণ ও মান্না দে’র নাম। ব্যাপারটা কী? আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে একটি পোস্টার। যা এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করেছে ইস্টবেঙ্গল। আজকের প্রজন্মের অনেকের কাছেই হয়তো অজানা, ভারতীয় সঙ্গীত জগতের দুই মায়েস্ত্রো কিন্তু ফুটবলে ছিলেন দুই শিবিরের কট্টর সমর্থক। শচীন কত্তা (Sachin Dev Burman) ইস্টবেঙ্গল। মান্না দে (Manna Dey) মোহনবাগান। সেই নস্ট্যালজিয়াই উসকে দিল পোস্টার।
আসলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের (EB vs MB) এই লড়াই কি কেবল নিছক কোনও ফুটবল ম্যাচ? তা যে নয়, সেটা বাঙালি কেন গোটা ভারত জানে। এই খেলাকে ঘিরে বহু বছরের নস্ট্যালজিয়া, ঘটি-বাঙালের চিরকালীন দ্বন্দ্ব এবং একসঙ্গেই ভারতীয় ফুটবলের অপরিহার্য অধ্যায় হয়ে ওঠা- আরও কত কী জড়িয়ে রয়েছে। আর সেই রেশ মাঠের চৌহদ্দিকে ছাড়িয়ে মিশে গিয়েছে বাঙালির মেদ-মজ্জা-অস্তিত্বে। শচীন-মান্নার ছবি ঘিরে ফিরে এল পুরনো সময়ও। গত শতাব্দীর ছয়-সাত-আট দশকের উন্মাদনার ইতিহাস।
This Boro Match poster is a tribute to Indian music stalwarts S.D. Burman and Manna Dey, whose ardent love for their respective clubs have added numerous anecdotes to the East Bengal-Mohun Bagan rivalry! #KolkataDerby #JoyEastBengal… pic.twitter.com/N4GdL15kr6
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) February 3, 2024
শচীন দেব বর্মণ ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) একেবারে ‘ডাই হার্ড’ ফ্যান। ১৯৭৫ সালের সেই বিখ্যাত পাঁচ গোলের ম্যাচের সময় তিনি ছিলেন কোমায়। সেই অবস্থাতেও লাল-হলুদের সাফল্যের খবর পাওয়ার পর কিংবদন্তি সুরকারের আঙুল নাকি নড়ে উঠেছিল! এমনই এক মিথ রয়েছে। আবার মান্না দে’র সঙ্গে ফুটবল নিয়ে তাঁর মিঠে খুনসুটির কথাও সর্বজনবিদিত। মুম্বইয়ে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের খেলা থাকলে দুজনে খেলা দেখতে যেতেন। বসতেনও পাশাপাশি। অথচ মোহনবাগান গোল করলে স্বাভাবিক ভাবেই মান্না দে উচ্ছ্বসিত হতেন। এটা একেবারেই সইতে পারতেন না শচীন। রীতিমতো শাসাতেন তাঁকে।
মান্না দে রাত জেগে খেলা দেখতেন। কিন্তু মোহনবাগান (Mohun Bagan Super Giant) ছিল তাঁর কাছে ফুটবলের শেষ কথা। একবার নাকি ট্রেনে মোহনবাগান খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তিনি সবুজ-মেরুনের খেলা নিয়ে এমন খুঁটিনাটি বলছিলেন, যা শুনে মোহন-খেলোয়াড়রা নাকি রসিকতা করে বলেছিলেন, মান্না দে যেন তাঁদের কোচ হয়ে যান! এমনই ছিল মধুর সম্পর্ক। গানের প্রতি তীব্র প্যাশনের মাঝেও তাঁর হৃদয়ের একটা অংশে ছিল কেবলই মোহনবাগান ও ফুটবল। ঠিক যেমন শচীন কত্তার কাছে ছিল ইস্টবেঙ্গল। দুই কিংবদন্তির সেই প্রেম ফের ফিরে এল শনিবার সকালে। যা নতুন করে মনে করিয়ে দিল, এটা স্রেফ কোনও ম্যাচ নয়। বরং বাঙালির চিরকালীন এক আবেগ। যা দশকের পর দশক ধরে অব্যাহত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.