সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়: ভারতীয় ফুটবলের ‘পোস্টার বয়’ তিনি, সুনীল ছেত্রী। কিন্তু তারপর কে ব্যাটন সামলাবেন? এই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছে ফুটবল মহল। খুব জোরালোভাবে যে নাম ভেসে উঠছে সেটা আর কেউ নন, লিস্টন কোলাসো। এদিন ফুটবলারদের বিচারে বর্ষসেরা ফুটবলারের সম্মানপ্রাপ্তি সেই দাবিকেই আরও জোরালো করল।
বুধবার শহরের পাঁচতারা হোটেলে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ফুটবল প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (FPAI)। বাইচুং ভুটিয়া থেকে সুনীল ছেত্রী, সন্দীপ নন্দী (Sandip Nandy) থেকে রেনেডি, দীপক, নবি, মেহরাজ, জেজে, প্রীতম কোটাল প্রাক্তন আর বর্তমানের উপস্থিতিতে যেন চাঁদের হাট এদিনের অনুষ্ঠানে। লিস্টনের (Liston Colaco) পাশাপাশি ফুটবলারদের বিচারে বিদেশি প্লেয়ারদের মধ্যে সেরার সম্মান পেলেন বার্তোলোমিউ ওগবেচে। গত মরশুমে হায়দরাবাদ এফসির হয়ে আইএসএলে (ISL) সর্বোচ্চ গোলদাতা সঙ্গে ট্রফি জয়। এদিনের পুরস্কার নাইজেরিয়ান গোলমেশিনের প্রাপ্তির ভাঁড়ারকে আরও পূর্ণ করল। সেরা কোচ হায়দরাবাদের স্প্যানিশ মানোলো মার্কেজ। সেরা প্রতিশ্রুতিমান তরুণ হিসেবে পুরস্কার উঠল ভারতীয় দলের তরুণ মুখ আকাশ মিশ্রের হাতে। পাশাপাশি প্রথমবার মহিলা ফুটবলারদের সম্মান জানাল এফপিএআই। বর্ষসেরার পুরস্কার পেলেন অঞ্জু তামাং। ‘ইয়ং প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার’ মণীষা কল্যাণ। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার তথা এফপিএআইয়ের সভাপতি রেনেডি সিং (Renedy Singh)। প্রাক্তন ফুটবলারদের মধ্যে বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, জামশেদ নাসিরি।
তবে দিনটা আক্ষরিক অর্থেই লিস্টনের। সেরার পুরস্কার হাতে গোয়ানিজ তারকা বলেন, ‘‘খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সেরার পুরস্কার পেলাম। তবে আত্মতৃপ্তির কোনও জায়গা নেই। ভুলগুলো শুধরে আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে।’’ সবুজ-মেরুন জার্সি হোক কিংবা জাতীয় দল যুবভারতীতে দর্শকঠাসা গ্যালারির উন্মাদনা টের পেয়েছেন লিস্টন। মোহনবাগানের হয়ে এএফসির কাপের পরবর্তী পর্যায়ে আরও ভালো পারফরম্যান্সকে পাখির চোখ করছেন তিনি। গত মরশুমে সেরা পারফরম্যান্স হিসাবে এএফসি কাপে (AFC Cup) বসুন্ধরার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিককেই এগিয়ে রাখছেন গোয়ানিজ।
লিস্টনের কথার সুর ধরেই আকাশ বলে গেলেন, ‘‘কলকাতায় এর আগে খেলিনি। দর্শক উন্মাদনার কথা শুনেছিলাম। এশিয়ান কাপের সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম।’’ নিজের কেরিয়ারে হায়দরাবাদের হয়ে আইএসএল ট্রফি জয়কে স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে এগিয়ে রাখছেন আকাশ। পাশাপাশি দুই তারকার কথাতেই উঠে এলো সিনিয়ার হিসেবে সুনীল ছেত্রীর (Sunil Chhetri) অবদানের কথা কথা। বললেন, ‘‘জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় সুনীল ভাই আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। আমাদের কাছে সুনীল ভাই অনুপ্রেরণা।’’ অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে রেনেডি সিংয়ের গলাতেও ধরা পড়ল দায়িত্ববোধের কথা। বললেন, ‘‘আমাদের সময় আমি, বাইচুং জুনিয়ারদের আগলে রাখতাম। এখন সুনীল, সন্দেশদের (Sandesh Jinghan) পালা। আমার মতে ভারতীয় ফুটবল ঠিক পথেই এগোচ্ছে।’’ ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি এবার রাজ্য লিগগুলিতেও নজর দেবেন বলে জানান এফপিএআইয়ের সভাপতি।
ফুটবলারদের নিয়ে অনুষ্ঠান আর সেখানে ভারতের এশিয়ান অভিযান নিয়ে কথা হবে না, তাই হয় নাকি। অনুষ্ঠান শেষে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং বলেন, ‘‘পরপর দুবার এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ওঠা ভারতের জন্য দারুণ ব্যাপার। তবে আসল পরীক্ষা মূলপর্বে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.