দুলাল দে,দোহা: লুসেইল স্টেডিয়ামে কি লিওনেল মেসি (Lionel Messi) শো? প্রথমার্ধের খেলা দেখে সেরকম মনে হওয়াই স্বাভাবিক।মেসি পেনাল্টি থেকে গোল করলেন। ডি মারিয়ার গোলের পাসের শুরুটাও হল তাঁর বাঁ পা থেকেই। বিরতিতে ঝলমলে আর্জেন্টিনা। কোনও এক অজানা কারণে বিবর্ণ ফরাসি শিবির। তবে খেলা তো নব্বই মিনিটের, দ্বিতীয়ার্ধ আবার কী রং দেখায়, তার অপেক্ষায় ফুটবল বিশ্ব।
কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) শেষ ম্যাচের আগে মেসি নাম জপছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। আর মাঠে নেমে মেসি স্কিলের মঙ্গলকাব্য লিখলেন। বাঁ পা ঝলসে উঠল। ফরাসি (Argentina vs France) শিবিরকে বোকা বানাবেন, গোল করবেন, এই আশাতেই টিভির সামনে বসেছিলেন সবাই। সকলের মনোবাসনা পূরণ করলেন ফুটবলের রাজপুত্র। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন। ফাইনাল খেলতে নেমে একাধিক রেকর্ড ভাঙলেন। এমন মঞ্চ কি সবার জন্য থাকে?
ফাইনাল ম্যাচের প্রথমার্ধ কেবল মেসি-ময়। তবে নজর কেড়ে নিলেন চোট সারিয়ে ফেরা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াও (Angel Di’Maria)। স্বপ্নের গোল করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। গোল করে শূন্য হৃদয় আঁকলেন মারিয়া। মেসির মতোই এই বিশ্বকাপই শেষ মারিয়ার। এবারের বিশ্বকাপে চোটের জন্য বেশিরভাগ সময়ে তিনি বাইরে ছিলেন। ফাইনালে ফিরলেন তিনি। বাঁ দিকে তিনি ঝড় তুললেন। তাঁকে থামাতে না পেরেই ডেম্বেলে ফাউল করে বসলেন। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা।
পেনাল্টি থেকে গোলের সঙ্গে সমার্থক হয়ে গিয়েছে মেসির নাম।ফাইনালের মঞ্চেও তার অন্যথা হল না। হুগো লরিসকে অন্য দিকে ফেলে গোল করে গেলেন মেসি। আর্জেন্টিনার নীল সাদা জার্সিতে ৯৭তম গোল। আগেই টপকে গিয়েছিলেন বাতিস্তুতাকে। বিশ্বকাপের মঞ্চে এক ডজন গোলের রেকর্ড গড়লেন লিও। টুর্নামেন্টের বিদায়ী ম্যাচে দেশের হয়ে সর্বাধিক গোল করলেন তিনি। বিশ্বকাপে নয়া রেকর্ড গড়ার দৌড়েও এগিয়ে গেলেন। বিশ্বকাপে গোল করা ও করানো, দুই মিলিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলে। ২২ বার গোলের নেপথ্যে তাঁর অবদান রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথম গোল করার পরে মেসির নামের পাশে বসল ২১ বার গোলে সাহায্য করার রেকর্ড। ২২১৭ মিনিট ধরে বিশ্বকাপের মহামঞ্চে খেলেছেন মেসি। ভেঙে দিলেন মালদিনির রেকর্ড। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডও গড়ে ফেললেন এল এম টেন। লোথার ম্যাথেউজের রেকর্ড ভেঙে বিশ্বকাপের সর্বাধিক ২৬টি ম্যাচ খেলেছেন মেসিই।
৩৬ মিনিটে ফের গোল আর্জেন্টিনার। এবার নায়কের নাম ডি মারিয়া। ৩৬ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে উঠে এলেন মেসি। খান দুয়েক পাস খেলে বল সোজা গিয়ে পড়ল ডি’মারিয়ার পায়ে। কার্যত ফাঁকা মাঠে বল নিয়ে গোলের দিকে এগোলেন মিডফিল্ডার। লরিস বুঝতেই পারেননি বল কোন দিকে যাবে। সোজা জালে বল জড়িয়ে দিয়েই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ডি’মারিয়া। চোটের জন্য মাত্র একটি ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন। ম্যাচ প্র্যাকটিস না থাকা সত্বেও অভিজ্ঞ সৈনিককে নামিয়ে দিলেন স্কালোনি। তাঁর ভরসার যোগ্য মর্যাদা দিলেন ডি’মারিয়া।
প্রথমার্ধ জুড়ে শুধুই আর্জেন্টিনা। জিরুর অসাধারণ একটি হেড ছাড়া ফ্রান্সের দিক থেকে সেরকম কিছুই চোখে পড়েনি। বেশ কয়েকটি অনবদ্য সেভ করেন লরিস। আর্জেন্টিনার বক্সে সেভাবে বল গেলই না। জিরু আর ডেম্বেলেকে তুলে নিলেন হতাশ দেশঁ। পরিবর্ত হিসাবে থুরাম ও মুয়ানি নামলেও সেরকম পার্থক্য গড়তে পারলেন না। দু’গোলে পিছিয়ে থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরল ফ্রান্স।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.