সুলয়া সিংহ: ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে যুবভারতীর ৬৪ হাজার দর্শকের সামনে প্রথমবার যখন পা রাখলেন, বুকের ভিতরে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়েছিল কিংসলের। প্রথমবার ডার্বির মঞ্চে নেমেছেন। প্রথমবার বাগানের জার্সি গায়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তিনি। উলটোদিকে আবার চোখ রাঙিয়ে পুরনো কোচ খালিদ জামিল। গত মরশুমেই আইজলে থাকাকালীন তাঁর তত্ত্বাবধানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কিংসলেরা। তাই সবমিলিয়ে চাপটা ছিল অনেকখানি। কিন্তু মাঠে বল গড়াতেই ওসব ভাবনা মুছে গেল। তখন পাখির চোখ একটাই ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট ঘরে তোলা। আর লক্ষ্য স্থির থাকলে সব চাপই যে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, তা রবিবাসরীয় যুবভারতীতে বুঝিয়ে দিলেন নাইজেরীয় ডিফেন্ডার। তাঁর গোলেই সাধের জয় পেল টিম মোহনবাগান।
এবারের আই লিগ শুরু করলেন ডার্বিতে গোল করে। ম্যাচ শেষে নিজেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সে কথা। গ্যালারিতে উপস্থিত সমর্থকদের মাথা নিচু করে ধন্যবাদ জানালেন ম্যাচের নায়ক। বললেন, “ডার্বিতে আমার প্রথম গোল। তাও আবার জয়সূচক। দারুণ লাগছে। গোলটা মা’কে উৎসর্গ করলাম।” এদিন কিংসলে যদি হন জয়ের কাণ্ডারী, তবে বাগানের ত্রাতা অবশ্যই শিল্টন পাল। দেবজিত মজুমদারের জৌলুসে যে অভিজ্ঞ গোলকিপার ফিকে হয়ে সমর্থকদের ভালবাসা অনেকটাই হারিয়েছিলেন, এদিন নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে তা ফিরে পেলেন। তাঁর হাতেই তো আটকে গেল রালতের শট। আর সেই সঙ্গে লাল-হলুদের নিশ্চিত সমতা ফেরার স্বপ্ন। ম্যাচ শেষ হতেই তাই বাগান সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোস জড়িয়ে ধরেন শিল্টনকে। সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি তিনিও। বলছেন, “আই লিগের শুরুতেই ডার্বিতে জেতাটা নিঃসন্দেহে আলাদা একটা আত্মবিশ্বাস জোগাবে। তবে লড়াই অনেকটাই বাকি। আপাতত চার্চিল ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।”
কোচ সঞ্জয় সেনও যে দলের প্রতিটি ফুটবলারকে নিয়ে গর্বিত তা তাঁর কথায় স্পষ্ট। তবে ডার্বি জয়ের অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিতে ভুগতে রাজি নন। বললেন, “আগেও ডার্বি জিতে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছে, তাই ট্রফি জয়টাই আসল লক্ষ্য। হ্যাঁ, তা যদি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে হয়, তাহলে তো কথাই নেই।” গতবারের ফাইনালে খালিদ জামিলের কাছে হারের ক্ষতে মলম লাগল সঞ্জয় সেনের। তবে ট্রাঙ্কে চোট পাওয়ায় কোচকে চিন্তায় ফেললেন ডিকা। এক্স-রের পর বোঝা যাবে তাঁর শারীরিক অবস্থা।
মোহনবাগান শিবির যখন জয়ের আনন্দে বুঁদ তখন এক্কেবারে থমথমে ইস্টবেঙ্গল ড্রেসিংরুম। ফুটবলারদের মুখে যেন কথাই ফুটছে না। তবে পোড়খাওয়া খালিদ জামিল ভালই জানেন, কাটসুমি, এডুরা এখনই এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না। সামনে অনেকগুলো ম্যাচ। তাই হারের দায় নিজেই মাথা পেতে নিলেন। “১০০ শতাংশ আমারই দোষ। আরও প্র্যাকটিস করতে হবে। নতুন করে ভাবতে হবে। সত্যিই ভাল খেলিনি আমরা।” রাখঢাক না করেই বলে দিলেন খালিদ। তবে প্লাজার হতশ্রী পারফরম্যান্সে তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা লুকিয়ে রাখতে পারলেন না।
Today’s Hero of the Match Eze Kingsley pic.twitter.com/zYgoizGYcy
— Mohun Bagan (@Mohun_Bagan) December 3, 2017
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.