ফাইল ছবি
দুলাল দে: শুধু আইএফএ (IFA) সচিব নন। একই সঙ্গে তিনজন সহ-সভাপতিও পদত্যাগ করে বসে আছেন। আর তাতেই চরম ডামাডোল শুরু হয়ে গিয়েছে আইএফএ-তে। আই লিগ (I-League) চলাকালীন পদত্যাগ করেছিলেন সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সংস্থার তিন সহ-সভাপতিও। আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চেয়ারম্যান সুব্রত দত্তর কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠানোর সময়ই জয়দীপ বলেছিলেন, আই লিগ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবেন। আই লিগ শেষ হলে তিনি আর আইএফএ–তে আসবেন না। সেই মতো ২৭ এপ্রিলের পর থেকে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় আর IFA-তে আসছেন না। সংস্থার সচিব যদি পদত্যাগ করে বাড়িতে বসে থাকেন, তাহলে সংস্থায় যে ডামাডোল হয়ে থাকে সেটাই হয়েছে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফের কলকাতায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ফুটবল শিবির। সুনীল, সন্দেশদের নিয়ে ২ মে’থেকে কলকাতায় জাতীয় শিবির শুরু করে দেবেন কোচ ইগর স্টিমাচ। এদিকে, আইএফএতে সচিব না থাকায় ফেডারেশন কর্তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, আইএফএ-র কার সঙ্গে জাতীয় শিবির নিয়ে কথা বলবেন। এতদিন আইএফএর তরফে দৈনন্দিন কাজকর্ম নিয়ে ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলতেন সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় নিজে। এখন সেই সচিবই না থাকায়, সমস্যায় পড়েছেন ফেডারেশন কর্তারা। সমস্যা এখানেই শেষ নয়। আই লিগের বিভিন্ন সাপ্লায়াররা (সেখানে খাওয়ার সাপ্লাই থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন সাপ্লায়ার রয়েছেন) আই লিগ শেষ হতেই বিল জমা দিচ্ছেন। কিন্তু সচিবের অনুপস্থিতিতে সেই সব বিল পাশ হচ্ছে না। বিভিন্ন ফুটবলার, যাঁরা স্পোর্টস কোটায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে যোগ দিতে চান, তাঁদের আবেদনের জন্যও আইএফএ সচিবের চিঠি খুবই জরুরি। কিন্তু জয়দীপের অনুপস্থিতিতে সবই আটকে রয়েছে।
তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কী করে? পদত্যাগ পত্র সভাপতি এবং চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হলেও, তাঁদের তরফে কোনও উত্তরই আসেনি। আর তাতেই জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বললেন, “সভাপতি এবং চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তারপর তাঁদের তরফে কোনও সরকারি চিঠি না আসার অর্থই, ধরে নেওয়া যেতে পারে, আমার পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই আমার আর আইএফএতে যাওয়া মানায় না।” তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কী করে? একমাত্র সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় যদি নিজে চিঠি দিয়ে জয়দীপকে অনুরোধ করেন, পদত্যাগ তুলে নেওয়ার জন্য, তাহলে হয়তো সমস্যা মিটতে পারে। কিন্তু অজিত বাবুর দিক থেকে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এদিকে, গভর্নিং বডির ক্লাবগুলোও চাইছে, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে ফের আইএফএ সচিবের চেয়ারে ফিরিয়ে আনতে। তবে ক্লাবগুলির দাবি একমাত্র প্রতিষ্ঠা পাবে গভর্নিং বডির সভাতেই। তবে গভর্নিং বডির সভা ডাকবে কে? শোনা যাচ্ছে, এই ইসুত্যে সমস্যা সমাধানের জন্য চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত গভর্নিং বডির সভা ডেকে সদস্যদের মতামত নিতে পারেন।
কিন্তু সুব্রত দত্ত পুরো ব্যাপারটা অস্বীকার করে বললেন, “আইএফএর সংবিধান অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের কোনও ক্ষমতাই নেই গভর্নিং বডির মিটিং ডাকার। সচিব পদত্যাগ করলে, সেই চিঠি অনুমোদন করার ক্ষমতা চেয়ারম্যান কিংবা সভাপতি কারোরই নেই। তবুও সংবিধান মেনে আমি জয়দীপকে চিঠি দিয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ফের বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করব।” তাহলে গভর্নিং বডির মিটিংটা ডাকবেন কে? সুব্রত দত্ত বললেন, “গভর্নিং বডির মিটিং ডাকার ক্ষমতা একমাত্র সচিবের হাতেই রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, সচিব পদত্যাগ করলে, একমাসের মধ্যে নতুন সচিব নিয়োগ করতে হবে। যতদিন না নতুন সচিব কেউ হচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত পুরনো সচিব কাজ চালিয়ে যাবেন। উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় পদত্যাগ করার পর, পরের গভর্নিং বডির মিটিং তাঁকেই ডাকতে হয়েছিল। এক্ষেত্রেও ক্লাবগুলির মতামত জানার জন্য গভর্নিং বডির মিটিং জয়দীপ নিজেই ডাকতে পারেন।” এই প্রসঙ্গে গভর্নিং বডিতে মোহনবাগানের প্রতিনিধি দেবাশিস দত্ত বললেন, “গভর্নিং বডির মিটিংয়ে গিয়েই যা বলার বলব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.