দুলাল দে: যখন খেলতেন, তখন তাঁর সম্পর্কে বলা হত, কোনও ম্যাচ খেলুন না খেলুন, ডার্বির মঞ্চটা তিনি ভাল জানেন। সে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে সবুজ-মেরুনের জালে বল জড়ানো হোক, কিংবা সবুজ-মেরুন জার্সিতে লাল-হলুদের জালে। এই প্রসঙ্গ উঠলে আগেও হেসে উঠতেন, এখনও হাসেন। সিকিমের বাড়ি থেকে হাসতে-হাসতে পাহাড়ি বিছে বাইচুং ভুটিয়ার (Bhaichung Bhutia) উত্তর হল, “এরকম আবার হয় নাকি! একজন স্ট্রাইকার যে ম্যাচেই খেলতে নামে, সেই ম্যাচেই গোল করতে চায়। তবে ডার্বিতে নার্ভের জোর ঠিক রাখাটা খুব কঠিন ব্যাপার। টানেল থেকে মাঠে ঢুকতেই, সেই যে যুবভারতীয় গ্যালারি জুড়ে চিৎকার, সেই সময় মাথা ঠান্ডা না রাখতে পারলে অনেক ভাল ফুটবলারেরও নার্ভ ফেল করে যেতে পারে। ঘটনাচক্রে, আমি কোনওদিনই চাপে পড়তাম না। তাই হয়তো ডার্বি ম্যাচে আমার গোল সংখ্যা বেশি।”
আপাতত এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) এবং এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal) একটি করে ম্যাচ খেলেছে আইএসএলে। বাইচুং বললেন, “সত্যি বলতে, কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে এটিকে মোহনবাগানের ম্যাচটা দেখতে পারিনি। তবে জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে এসসি ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধটা পুরোটা দেখেছি।
সবুজ-মেরুনকে দেখা হয়নি। আর এসসি ইস্টবেঙ্গলের মাত্র ৪৫ মিনিট দেখার ভিত্তিতে শনিবারের ডার্বি ম্যাচ নিয়ে এখনই বিশ্লেষণ করতে চান না। তবে দলগত ভাবে কিছুটা ব্যাখ্যা করলেন। বলছিলেন, “দেখুন, সবে একটা ম্যাচ খেলেছে। তাই এত দ্রুত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো একদমই ঠিক নয়। তবে একটা ম্যাচ দেখার নিরিখে বলতে পারি, প্রথম ম্যাচে লাল-হলুদের বিদেশি ফুটবলারদের আমার খুব একটা ভাল লাগেনি। গত বছরের বিদেশি ফুটবলাররা আমার মনে হয় আরও ভাল ছিল।”
কিন্তু প্রথম ম্যাচ দেখে অনেকেই যে বলছেন, গতবারের থেকে এবারের দল অনেক ভাল হয়েছে? বাইচুং বলছিলেন, “সেটা ভারতীয় ফুটবলারদের জন্য মনে হচ্ছে। গতবার যে ভারতীয় ফুটবলাররা খেলেছিল, প্রথম ম্যাচ দেখে এবারের ভারতীয় ফুটবলারদের তার থেকে ভাল লাগল। আর চারজন বিদেশির পাশাপাশি সাতজন ভারতীয়। তাই গতবারের থেকে এবারের এসসি ইস্টবেঙ্গলকে ভাল দল মনে হচ্ছে। পাশাপাশি প্রথম ম্যাচ থেকেই গোলে অরিন্দমের মতো অভিজ্ঞ গেলকিপার। এরসঙ্গে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, গত মরশুমে ডার্বির আগে দলটাকে ঠিকভাবে প্র্যাকটিসই করাতে পারেননি রবি ফাউলার।
সেখানে এবার মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েই ডার্বিতে নামবেন ম্যানুয়েল দিয়াজ। পাশাপাশি এটিকে মোহনবাগানের এখনও খেলা না দেখলেও, আশি শতাংশই একই দল। তার উপর হুগো বুমোসের মত আইএসএলের সফলতম মিডফিল্ডার দলে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই দলগত ভাবে এটিকে মোহনবাগান যে দল হিসেবে অনেক শক্তিশালী, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে দেখেছি, শনিবার যখন খেলা শুরুর বাঁশি বেজে যাবে, তারপর থেকে কারা শক্তিশালী, কারা দলগতভাবে দুর্বল, এগুলি কোনও গুরুত্বই পাবে না। সেই ৯০ মিনিটে যে দল স্নায়ুর চাপে ভুগবে না, তারাই অ্যাডভান্টেজ পাবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.