দুলাল দে: কিছুক্ষণ আগে ম্যাচটা শেষ হয়েছে। নিজের মোবাইল অন করেই হোয়াটসঅ্যাপে একটা বার্তা পাঠালেন এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। নিজের বাহুর ইমোজি পাঠালেন সবুজ-মেরুন কোচ। আসলে লিগের মাঝপথেই হঠাৎ করেই কিছু সমর্থক যেভাবে তাঁর কোচিং নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছিলেন, সেই সময়টায় সত্যিই বিরক্ত ছিলেন এটিকে মোহনবাগান কোচ। এদিন তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসসি ইস্টবেঙ্গলকে (SC East Bengal) ৩-১ গোলে ধরাশায়ী করে মাঠ ছেড়ে টিম বাসে উঠেই নিজের ‘বাহু’র ইমোজিটা পাঠিয়ে দিলেন হাবাস। যেন বলতে চাইলেন, “নিজের বাহুর জোরেই ডার্বিটা জিতেছি।”
আইএসএলের (ISL) প্রথম ডার্বিতে ২ গোলে জেতার পরেও সমালোচনা। যেন কিছুতেই মানতে পারছিলেন না। এদিন তাই জয়ের পর কিছুটা মজা করেই বললেন, “তিন গোল বলছেন কেন। এদিন তো আমরা চার গোল করলাম!” স্প্যানিশ হওয়ার পরেও ইটালিয়ান আরিগো সাক্কিকেই আদর্শ কোচ ভাবেন হাবাস (Antonio López Habas)। তিনি কোন কোচিং স্টাইল পছন্দ করেন, বোঝাতে গেলে আরিগো সাক্কির নামটাই তো যথেষ্ট। কিন্তু সাধারণ মানুষ আর কবে কোচিং স্টাইলের অন্তর্নিহিত অর্থ খুঁজেছেন? তাঁরা চান শুধু সব ম্যাচেই তিন পয়েন্ট। ফলে ম্যাচ ড্র হলেই উড়ে এসেছে বাক্যবাণ। এদিন তাই এসসি ইস্টবেঙ্গলকে উড়িয়ে দিয়েও চূড়ান্ত সংযমের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেন। বললেন, “বিশ্বাস করুন, অন্যান্য ম্যাচের মতোই আমার কাছে শুধুই একটা তিন পয়েন্টের ম্যাচ ছিল। তবে মেরিনার্সদের জন্য অবশ্যই দারুণ মুহূর্ত। করোনার জন্য গোয়াতে আমরা একা রয়েছি। এই সময় দূর থেকে সমর্থকরা এভাবে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে না দিলে পুরো দলটা হয়তো এভাবে তেতেই উঠত না।”
কিন্তু পুরো দলটাই কি গোলের জন্য রয় কৃষ্ণ (Roy Krishna) নির্ভর? সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানালেন হাবাস। বললেন, “একদমই না। এদিন তো রয় কৃষ্ণ ছাড়াও আরও দুটো গোল হয়েছে। ডেভিড উইসিয়ামস আর জাভিও গোল করেছে। আরও গোল হতে পারত। তবে কৃষ্ণর গোলটা দারুণ হয়েছে। কিন্তু আমি ক’টা গোল করেছি, তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, কী ভাবে আমাদের পুরো দলটা খেলেছে।” এদিনের ম্যাচের ব্যাখ্য দিয়ে হাবাস বলছিলেন, “খেয়াল করে দেখুন, দ্বিতীয়ার্ধের দশ মিনিট ছাড়া ওরা কিন্তু আমাদের কোনও সময়ের জন্যই সমস্যায় ফেলতে পারেনি। আর ডার্বিতে পুরো নব্বই মিনিট জুড়ে একই গতিতে খেলা সম্ভব নয়। যে দশ মিনিট ওরা খেলার সুযোগ পেয়েছে, সেই সময় কিছু কর্নার আর আক্রমণ তুলে এনেছে মাত্র। বাকি সময়টা আমাদের ডিফেন্সকে নড়াতে পারেনি।” দাঁড় করিয়ে হারালেও প্রতিপক্ষ দলের প্রশংসা করে হাবাস বললেন, “হয়তো ওরা হেরেছে, তবে প্রথম ডার্বির থেকে এদিন কিন্তু এসসি ইস্টবেঙ্গল অনেক ভাল ফুটবল খেলেছে। কিন্তু আমাদের ছেলেরা যে আরও ভাল ফুটবল খেলেছে। তাই ওদের হারা ছাড়া উপায় ছিল না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.