মোহনবাগান: ৩ (অলড্রেড, কোলাসো, ম্যাকলারেন)
জামশেদপুর: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইএসএলে জয়ের হ্যাটট্রিকের পর ওড়িশার সঙ্গে ড্র। আচমকাই বাধা পায় মোহনবাগানের জয়রথ। মাঝে দীর্ঘ আন্তর্জাতিক বিরতি গিয়েছে। কিন্তু একটা জিনিসে ছেদ পড়েনি। সেটা হল সবুজ-মেরুনের ফুটবলারদের জয়ের খিদে। এদিন জামশেদপুরকে একপ্রকার নাস্তানাবুদ করে জয় ছিনিয়ে নিলেন দিমি পেত্রাতোসরা। ঘরের মাঠে তারা জয় পেল ৩-০ গোলে। সেই সঙ্গে আইএসএলে লিগ শীর্ষেও উঠে গেল মোলিনার দল।
চোটের জন্য নেই গ্রেগ স্টুয়ার্ট ও আশিস রাই। কিন্তু তাতে জয় পেতে অসুবিধা হল না। যুবভারতীতে শুরু থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণ শানান মোহনবাগানের ফুটবলাররা। দুই উইং দিয়ে ঝড় তুলতে থাকেন মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসোরা। চুলের রং বদলে পুরনো দিমির ঝলকও খুঁজে পাওয়া গেল এদিন। সেই চেনা বিষাক্ত কর্নারেই পরাস্ত হল জামশেদপুর। প্রথম গোল এল ১৫ মিনিটে। দিমির কর্নার কোনও মতে ক্লিয়ার করে জামশেদপুর। সেখান থেকে বল ঘুরে আসে মোহনবাগানের ডিফেন্ডার আলবার্তো রদ্রিগেজের মাথায়। তাঁর হেড থেকে গোলার মতো শটে গোল করে যান আরেক ডিফেন্ডার টম অলড্রেড।
তার খানিক পরেই অবশ্য গোলের সুযোগ এসেছিল জামশেদপুরের কাছে। জাভি হার্নান্দেজের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৪ মিনিটে দিমির শট বাঁচান গোলকিপার গোমেজ। ফিরতি বলে সুযোগ ছিল ম্যাকলারেনের কাছে। কিন্তু তিনি ঠিকভাবে বলে পা ছোঁয়াতে পারলেন না। খানিক পরেই বাঁপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন কোলাসো। তাঁর শট কোনও মতে বাঁচান জামশেদপুরের গোলকিপার। কিন্তু এত আক্রমণের চাপ যে বেশিক্ষণ সামলাতে পারবে না, তা কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
ম্যাচের প্রথমার্ধ তখন শেষের পথে। বক্সের বাইরে বল পেয়ে তিনজন ডিফেন্ডারকে অনায়াস দক্ষতায় পিছনে ফেলে দেন কোলাসো। তার পর বক্সের মধ্যে বাকি দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। প্রথমার্ধে দু গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দেখার ছিল কতক্ষণে ব্যবধান বাড়ে। একাধিক সুযোগ তৈরিও হয়। আবার উলটো দিকে মোহনবাগানকে বাঁচায় বিশাল কাইথের হাত। অবশেষে তৃতীয় গোলের প্রতীক্ষা শেষ হল ৭৫ মিনিটে। গোলটি ম্যাকলারেন করলেও মূল কৃতিত্ব মনবীর সিংয়ের। মাঝমাঠ থেকে টাংরির ভাসানো বল ধরে বিপক্ষের গোলকিপারকে কাটিয়ে নিয়ে যান তিনি। সেখান থেকে যখন ম্যাকলারেনকে বল দিচ্ছেন, তখন গোল করা ছাড়া আর কোনও উপায়ই ছিল না। ম্যাচের সেরাও হলেন মনবীর। শেষের দিকে লিস্টন সহজ সুযোগ মিস করলে ব্যবধান আরও বাড়ত।
এই জয়ের ফলে ৮ ম্যাচে মোহনবাগানের পয়েন্ট দাঁড়াল ১৭। বেঙ্গালুরু সম পয়েন্টে থাকলেও গোলপার্থক্যে লিগ শীর্ষে পৌঁছে গেল সবুজ-মেরুন। ম্যাচ শেষে দেখা গেল এক অপূর্ব দৃশ্য। এদিন যুবভারতীতে এশিয়ার সব থেকে বড় টিফো নিয়ে হাজির ছিলেন মোহনবাগানের সমর্থকরা। যেখানে বার্তা ছিল, কেউ বিদেশি নন, সবাই পরিবার। মোহনবাগানই সবার ঘর। জয়ের পর সেদিকে এগিয়ে গেলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। ভাইকিং চ্যান্টে সাধুবাদ জানালেন সমর্থকদের প্রয়াসকে। আসলে তো ‘ঘর’ করে তোলে তারাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.