ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: একদিকে ২৪ ঘন্টার প্রস্তুতি, এগিয়ে থেকেও হায়দরাবাদের (Hydrabad FC) বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গোল খাওয়া, হুগো বুমোসের মতো ফুটবলারকে না পাওয়া, কার্ল ম্যাকিউ চোট নিয়ে হাসপাতালে। অপরদিকে লিগে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল মুম্বই সিটি এফসিকে (Mumbai City FC) হারানো, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে ওঠা দল। গতম্যাচে মাঠের বাইরে থাকা কোচ কিকো রামিরেজের রিজার্ভ বেঞ্চে ফিরে আসা। শনিবারের ম্যাচকে চৌম্বকে ধরলে দু’টি দলের এই বিষয়গুলো ধরা পড়বে। প্রথম দলটা এটিকে মোহনবাগান হলে, দ্বিতীয় দলটা হচ্ছে ওড়িশা এফসি।
সত্যিই সমস্যা পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছে সবুজ–মেরুন শিবিরে। মাত্র ২৪ ঘন্টার প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে হবে। তার উপর দলের ‘হৃদপিন্ড’ হুগো বুমোস কার্ড সমস্যায় খেলতে পারবেন না। চোটের জন্য নেই কার্ল ম্যাকিউ। তাই জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando) সরাসরি স্বীকার করে নিলেন, কঠিন পরিস্থিতির শিকার হতে চলেছেন তিনি। “মাত্র ২৪ ঘন্টার প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে হবে। এতে আর যাই হোক সঠিক পরিকল্পনা করে দলকে খেলানো অসম্ভব। অথচ আমার লক্ষ্য থাকে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে ম্যাচ খেলতে নামা। ওড়িশার বিপক্ষে সেটাই হল না।” বললেন ফেরান্দো।
খেলোয়াড়দের উপর ভরসা রাখছেন এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) কোচ। তবে সমস্যা মোকাবিলা করে এগোনোর মধ্যে আলাদা একটা উত্তেজনা অনুভব করেন তিনি। এমনিতেই গতম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হায়দরাবাদের কাছে দু’পয়েন্ট নষ্ট করায় তিনি কিছুটা হতাশ। ম্যাচটা জিতলে ডেভিড উইলিয়ামসরা চলে যেতেন লিগ টেবিলের শীর্ষে। ওড়িশার (Odisha FC) বিপক্ষে হুগো বুমোসের অভাব প্রকট হয়ে উঠবেই। একথা মানতে নারাজ নবাগত কোচ ফেরান্দো। তাঁর মতে, “হুগো না থাকলেও সমস্যা হবে না। প্রতি ম্যাচে আমাদের কিছু কিছু প্ল্যান থাকে। তাই হুগো নেই বলে শনিবারের ম্যাচে কিছু অদল–বদল করছি। তবে আমাদের ডিফেন্ডাররা আক্রমণে উঠতে পারে। কিছু কিছু জায়গা ঠিক করতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে অসুবিধে হবে না। এটুকু বলতে পারি, তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তাই করব।”
দল অনেক সুযোগ পাচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না। তারজন্য বরং খুশি ফেরান্দো। তাঁর ধারণা, সুযোগ তৈরি করাটাই হল দলের কাছে ইতিবাচক দিক। গতম্যাচে রয় কৃষ্ণকে (Roy Krishna) বসিয়ে প্রথম একাদশে ডেভিড উইলিয়ামস খেলেছিলেন। চমক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ফেরান্দো। কোচের সিদ্ধান্তকে ১২ সেকেন্ডে গোল দিয়ে মর্যাদা দিয়েছিলেন উইলিয়ামস। বিরতির পর ডেভিডকে বসিয়ে রয় কৃষ্ণকে নামান কোচ। তাহলে কি আজ এই দু’জনকে শুরু থেকে দেখা যাবে? ফেরান্দো জানিয়ে দিলেন, এখনই এসব বলার মতো সময় আসেনি। এমন কী গোলকিপার অমরিন্দর, দীপক টাংরিরা খেলতে পারবেন কিনা তাও বলতে পারলেন না এটিকে মোহনবাগানের সেনাপতি। কিন্তু একটা ব্যাপারে দলকে নিয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। কি ব্যাপার? প্রচুর অপশন আছে। “দীপকের জায়গায় লেনিকে খেলালে ভাল হবে, না সাহিলকে নিয়ে এলে দলের ভারসাম্য আরও বাড়বে তাই নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাইলেন না তিনি। কিন্তু এটুকু বললেন, “আমার দলের প্লাস পয়েন্ট হল, প্রচুর অপশন আছে। দল এমনিতেই খুব ভাল। তাই প্রত্যেকের উপর আস্থা রাখা যায়। আসলে দেখতে হবে যেভাবে আমি খেলতে চাইছি তাতে লেনি না সাহিল কে বেশি কার্যকর হবে। তবে সকলকে তৈরি থাকতে বলেছি।” রক্ষণের ভুল যে প্রতি ম্যাচে ঘটছে তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। তবু ফেরান্দো বিষয়টাকে বড় করে দেখতে নারাজ। তাঁর কাছে বড় ব্যাপার হল, সকলে দলকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত। তবে ওড়িশা দলকে বাড়তি সমীহ করছেন সবুজ-মেরুন কোচ। তাঁর মতে, ওড়িশা হল একটা ব্যালান্সড দল। “আক্রমণ ও রক্ষণে ভারসাম্য রয়েছে। ওড়িশা শুরুটা বরাবর ভাল করে। গতম্যাচে তারা মুম্বইকে হারিয়ে এসেছে। একটা সময় তারা ১–২ গোলে পিছিয়ে ছিল। তবু কোনও সময়ের জন্য হতোদ্যম হয়ে পড়েনি। তাই তারা জিতে যায়।” বলেন ফেরান্দো। স্প্যানিশ কোচকে আরও ভাবাচ্ছে, তাঁর দল পুরো ৯০ মিনিট ফোকাস ধরে রাখতে পারছে না। একশো শতাংশ দেওয়া যেখানে জরুরি সেখানে কেউ সেভাবে দিতে পারছে না। তাই এসব শোধরানোর উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন তিনি। তবে এটুকু বুঝেছেন, ম্যাচটা জিতে গেলে ভাল জায়গায় থাকবে এটিকে মোহনবাগান।
ওড়িশা দলের কোচ কিকো রামিরেজ জানিয়ে দিলেন, তাঁর দল আইএসএলের যে কোনও টিমকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। এটিকে মোহনবাগানকে গুরুত্ব দিলেও রামিরেজ জানিয়ে দিলেন, “বড় দল এটিকে মোহনবাগান। গত ম্যাচে আমি কার্ড সমস্যার দরুন রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলাম না। তবে গতম্যাচে মুম্বই সিটি এফসিকে হারানোর পর দলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে। তাই বলতে পারি, যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা আমাদের আছে। ”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.