অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল। ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: ঠিক একটা মাস আগের কথা। এই কলিঙ্গ স্টেডিয়ামেই (Kalinga Stadium) অনুরাগীদের এক যুগের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। জিতেছিল সুপার কাপ (Super Cup), ওড়িশা এফসিকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে। একটা মাস পর বৃহস্পতিবার সেই কলিঙ্গে ওড়িশার মুখোমুখি হবে কার্লেস কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচে গোল করে ট্রফি জয়ের অন্যতম নায়ক হয়ে উঠেছিলেন নন্দকুমার শেখর। আর তাঁর একমাত্র গোলেই শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়িন এফসিকে হারিয়েছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। ঘটনাচক্রে মরশুমের শুরুতে ওড়িশার ঘর ভেঙেই যাকে দলে টেনেছিল লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্ট। তবে বৃহস্পতিবার ‘প্রাক্তন’ ঘরের মাঠে নন্দ-ম্যাজিক কি দেখা যাবে? তা নিয়ে অবশ্য বিস্তর ধন্দ রয়েছে।
বুধবার সকালে যুবভারতীতে প্র্যাকটিস সেশনে দলের সঙ্গে মাঠে নামেননি নন্দ। শুরুতে কুয়াদ্রাতের হার্ডলে যোগ দিলেও তারপর ফের ড্রেসিংরুমে চলে যান তিনি। অনুশীলন শেষের আগেই ফিজিওকে নিয়ে যুবভারতী ছাড়েন। হঠাই কী হল নন্দর? সূত্রের খবর, টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তির সঙ্গে হালকা চোটও রয়েছে তাঁর। তাই এদিন অনুশীলনে নামেননি তিনি। নন্দ অবশ্য মাঠ ছাড়ার আগে বলে গেলেন, “আমি দলের সঙ্গে যাচ্ছি। কোনও সমস্যা নেই। খেলতে তৈরি।” সতীর্থকে নিয়ে জল্পনায় জল ঢাললেন ক্লেটন সিলভাও। লাল-হলুদ অধিনায়কও বলেন, “নন্দ ফিট আছে।”
সুপার কাপ জিতে এই মাঠে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিলেন কুয়াদ্রাত। এই ম্যাচে কার্ড সমস্যায় ডাগআউটে বসতে পারবেন না। কিন্তু মরশুমে তৃতীয়বার সের্জিও লোবেরা বাহিনীর চ্যালেঞ্জ সামলানোর কাজটা স্প্যানিশ হেডস্যরের ছকে দেওয়া পরিকল্পনা মেনে সারতে চলেছেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। এদিন অনুশীলনে পরিচালকের ভূমিকায় ছিলেন কুয়াদ্রাতই। এমনকি সাংবাদিক সম্মেলনে এসেও সহকারী দিমাস দেলগাদোর বক্তব্য পুরোটা শুনলেন, রেকর্ড করে রাখছেন নিজের ফোনে। দিমাস যখন পুরো পয়েন্টের লক্ষ্যে ঝাঁপানোর কথা বলছিলেন, প্রসন্নতার ছাপ ফুটে উঠেছিল কুয়াদ্রাতের মুখে। তাঁর মুখেও তো কখনও তিন পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোনও কথা শোনা যায়নি। লাল-হলুদের স্বস্তি বাড়িয়ে এই ম্যাচে ফিরতে পারেন হরমনজ্যোৎ সিং খাবরা। পরিবর্ত হিসাবে প্রত্যাবর্তন হতে পারে তাঁর। তবে সল ক্রেসপো এখনও খেলার মতো অবস্থায় নেই। জর্ডন এলসের সঙ্গে আলাদাভাবে অনুশীলন করলেন ক্রেসপো।
অবশ্য তিন পয়েন্ট পাওয়ার কাজটা বেশ কঠিনই হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলের জন্য। প্রতিপক্ষে রয়েছেন রয় কৃষ্ণ এবং দিয়েগো মরিসিওর মতো দুই ফরোয়ার্ড। দু’জনে লিগে গোল করেছেন যথাক্রমে ১১টি এবং ৬টি। ইস্টবেঙ্গলের কাজটা কঠিন করতে ফিরছেন ওড়িশা মাঝমাঠের স্তম্ভ আহেমদ জাহুও। সেখানে কার্ড সমস্যায় হিজাজি মাহেরকে পাবে না ইস্টবেঙ্গল। যা পরিস্থিতি, ডিপ ডিফেন্সে দেখা যাবে লালচুংনুঙ্গা ও আলেকজান্ডার পন্টিচের নতুন জুটিকে। তাঁদের দু’পাশে মহম্মদ রাকিপ ও মন্দার রাও দেশাই। মাঝমাঠে জুটি বাঁধবেন সৌভিক চক্রবর্তী ও ভিক্টর ভাসকুয়েজ। দুই উইংয়ে পিভি বিষ্ণু ও মহেশ সিং নাওরেম। একমাত্র ফরোয়ার্ড ফেলিসিও ব্রাউন ফোর্বসের পিছনে অপারেট করবেন ক্লেটন। নন্দের পরিবর্ত হিসাবে নামারই সম্ভবনা বেশি।
কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সুপার কাপ ফাইনালে সুখস্মৃতি আছে ক্লেটনেরও (Cleiton Silva)। শেষবেলায় জয়ের গোলটা করেছিলেন তিনিই। বৃহস্পতিবার মুর্তদা ফলদের ডিফেন্স ভাঙার দায়িত্ব থাকবে তাঁর উপরেই। তিনি নিজে কি সেটা নিয়ে বাড়তি চাপে? প্রশ্নটা শোনা মাত্রই ক্লেটনের জবাব, “ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনও ম্যাচ নিয়ে আলাদাভাবে চাপে থাকি না। আমরা সব ম্যাচ তিন পয়েন্টের লক্ষ্যে খেলি। কালও অন্যথা হবে না।” প্রথম ছয়ে ঢোকার দৌড়ে টিকে থাকার জন্য এখন যে তিন পয়েন্ট ছাড়া কোনও পথ নেই, সেটা ভালোই জানেন ক্যাপ্টেন ক্লেটন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.