ফাইল ছবি
দুলাল দে: অবশেষে খুশির খবর আসতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলে। বহু প্রতীক্ষিত সেই ‘স্পোর্টিং রাইটস’ ক্লাবকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলেন কোয়েস চেয়ারম্যান অজিত আইজ্যাক।
৩১ মে’র পরই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করবেন, আগেই জানিয়েছিলেন। তারপরও স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে না দেওয়া নিয়ে টালবাহানা চলছিল। কখনও শোনা গিয়েছে, তিনি নাকি টাকা চাইছেন। কখনও নাকি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বকেয়া চাইছে। ঘটনা হল, চুক্তি বিচ্ছেদ নিয়ে অজিত আইজ্যাক ইস্টবেঙ্গলের কাছে এখনও পর্যন্ত এক টাকাও দাবি করেননি। তাহলে স্পোর্টিং রাইটস আটকে রাখার কারণ?
কোয়েসের বিভিন্ন আধিকারিক ও অজিত আইজ্যাকের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, স্পোর্টিং রাইটস আটকে রাখার পিছনে প্রধান কারণ হল ক্লাবকর্তাদের প্রতি তাঁর অভিমান ও বিরক্তি। দু’বছরে ৪২ কোটি টাকা মতো খরচ করেছেন। তা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটুক তিনি চাননি। ইস্টবেঙ্গলের প্রতি প্যাশন থেকে টানা ২ বছর নিজের হোয়াটসঅ্যাপ ডিটিতে ইস্টবেঙ্গলের লোগো লাগিয়ে রেখেছিলেন। এখনও চান না, তাঁর জন্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আই লিগ খেলা থেকে বঞ্চিত হোক। তাই কিছুটা বিরক্ত হয়ে আইনি বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে চাননি তিনি।
ক্লাবকর্তাদের আচরণ নিয়ে তাঁর বিরক্তির পিছনে যে কারণগুলি তিনি তুলে ধরেছেন, তা হল এরকম। প্রথমত, সরকারিভাবে বিচ্ছেদের চুক্তিপত্র দেওয়ার আগেই সুব্রত নাগের মেল প্রকাশ্যে আনা। বিচ্ছেদের কাগজ পেয়ে গিয়েছেন বলে কর্তাদের অন্যায় দাবি করা। এতেই বড় আঘাত পান তিনি। প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগেন, তিনি যতক্ষণ না ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (NOC) দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কোয়েস থেকে ইস্টবেঙ্গল আলাদা হয়ে খেলতে পারবে না। ফেডারেশনে চিঠি দিয়ে তিনি তা প্রমাণ করে দিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, কোয়েস সরকারিভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই ক্লাব থেকে নতুন কোম্পানি খুলে চুনী গোস্বামী এবং পিকে-র ভারচুয়াল স্মরণসভায় মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সবশেষে ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদারের দাবি, তাঁর বকেয়া টাকা না পেলে ছাড়বেন না।
অজিত আইজ্যাকের এই অভিমানের আগুন নেভানোর পিছনে ‘দমকলে’র কাজ করেছেন ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়। ক্লাবের বিপদের দিনে তিনিই কোয়েসকে এনেছিলেন। আবার বিচ্ছেদের জট কাটাতে তিনিই ক্লাবের প্রতিনিধি হয়ে প্রতিদিন কথা বলছেন। আলোচনা করছেন ফেডারেশন কর্তারাও। কোয়েস না ছাড়লে ইস্টবেঙ্গলের খেলা সম্ভব নয়। বুঝিয়ে দিয়েছে ফেডারেশন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মতো প্রতিষ্ঠান ভারতীয় ফুটবলে খেলবে না, মানতে পারছিলেন না ফেডারেশন কর্তারা। ফলে তাঁরাও ব্যক্তিগত উদ্যোগ দেখিয়ে আইজ্যাের ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে বলেন।
আপাতত সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোয়েস কর্তাদের আলোচনার শেষে ঠিক হয়েছে, ইস্টবেঙ্গল ও কোয়েস কোনও পক্ষই কোনও দাবি জানাবে না। এমনকী কথার গোলাগুলিও ছোঁড়া হবে না। তাহলে বিচ্ছেদের কাগজ আসছে কবে? এর জন্য অবশ্য আইনি প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আইন মেনে কাগজপত্র তৈরি করতে যেটুকু সময় লাগে আর কী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.