মোহনবাগান: ২ (তিরি আত্মঘাতী, আলবার্তো)
মুম্বই সিটি: ২ (তিরি, ক্রৌমা)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেই যুবভারতী। বৃষ্টির মধ্যেও গ্যালারিতে সেই চেনা সবুজ-মেরুন ঝড়। মাস কয়েক আগের ‘যন্ত্রণা’ কি এত সহজে ভোলা যায়? আইএসএল কাপ ফাইনালে মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল মুম্বই। নতুন মরশুমের শুরুতেই ‘বদলা’র সুযোগ ছিল মোহনবাগানের কাছে। সেই সঙ্গে আইএসএল একাদশ অভিযান শুরু করা যেত জয় দিয়ে। কিন্তু সেই রক্ষণই কাঁটা হয়ে দাঁড়াল তাঁদের জয়ের পথে। প্রথমার্ধে ২ গোলে এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে দুগোল হজম! যুবভারতীতে মোলিনা ব্রিগেডের লড়াই শেষ হল ২-২ গোলে ড্র করে।
এদিন কোচ জোসে মোলিনা দল সাজিয়ে ছিলেন ৩-৫-২ ফর্মেশনে। রক্ষণে বিদেশি আলবার্তোর সঙ্গে দুই বাঙালি শুভাশিস বোস ও দীপেন্দু বিশ্বাস। আক্রমণে ছিলেন দুই বিদেশি জোড়া ফলা পেত্রাতোস ও জেসন কামিন্স। দুই প্রান্ত থেকে উঠে নেমে সাহায্য করছিলেন আশিস রাই ও লিস্টন কোলাসো। আর তার ফল পাওয়া গেল ম্যাচের ৯ মিনিটের মধ্যেই। বাঁদিক থেকে দ্রুত গতিতে বল নিয়ে পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন কোলাসো। তার পর যে জায়গায় বলটা রাখলেন, সেখান থেকে হাত বাড়িয়ে নাগাল পেলেন না মুম্বই গোলকিপার লাচেনপা। বরং ডিফেন্ডার তিরির গায়ে লেগে বল জড়িয়ে গেল জালে।
ফের মোহনবাগানের জন্য গোলের মুখ খুলে গেল ২৮ মিনিটে। এবার নায়কের নাম আলবার্তো রদ্রিগেজ। ডানদিকে পেত্রাতোসের সেই বিষাক্ত ক্রস। বক্সের মধ্যে সেটা নামিয়ে দিলেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। ঠিক সময় ঠিক জায়গায় উপস্থিত থেকে গোল করে গেলেন আলবার্তো। মাঝে যদিও একাধিক আক্রমণ তুলে এনেছিল মুম্বই সিটিও। বিপিনের একটি গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। আশিস রাইয়ে বারবার ব্যস্ত রেখে বিপজ্জনক ক্রসও ভাসিয়ে ছিলেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের সুযোগ এসে গিয়েছিল পেত্রাতোসের সামনে। কিন্তু গতিতে তিনি পরাস্ত হলেন মুম্বই ডিফেন্ডারের কাছে। গোলের মুখ খুলতে পারতেন বিপিনরাও। বরং দ্বিতীয়ার্ধের বাকি খেলাটা ঘোরাঘুরি করছিল মাঝমাঠের মধ্যেই। বিপদ বাঁধল ৭০ মিনিটে। ডুরান্ড কাপে যেভাবে ম্যাচ যত গড়িয়েছিল, তত দুর্বলতা প্রকট হচ্ছিল মোহনবাগান ডিফেন্সের। সেটাই ফের চোখে পড়ল শুভাশিস-আলবার্তোদের ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে। সেই সুযোগে মুম্বইয়ের হয়ে ব্যবধান কমিয়ে গেলেন তিরি। মাঝে একটা হ্যান্ডবল থেকে পেনাল্টিও পেতে পারত সবুজ-মেরুন। কিন্তু শেষ ধাক্কাটা অপেক্ষা করে ছিল নব্বই মিনিটের মাথায়। এবার দ্বিতীয় গোল হজম করল মোহনবাগান। মুম্বইয়ের হয়ে গোল করলেন ক্রৌমা। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে থামল ম্যাচ। ঘরের মাঠে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল মোহনবাগানকে।
তার আগেই চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান আলবের্তো। রক্ষণে তাও ভরসা জোগাচ্ছিলেন তিনি। সেই জায়গায় নামলেন টম অলড্রেড। কিন্তু বক্সের প্রায় মাথা থেকে যখন প্লেসিংয়ে জালে বল জড়াচ্ছেন ক্রৌমা, তখন গোটা মোহনবাগান ডিফেন্স একেবারে উলটো দিকে। বাঁদিকে ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পেলেন না গোলকিপার বিশাল কাইথ। ফলে মোলিনার সামনে এখন প্রশ্ন অনেক। পেত্রাতোস কি এখনও পুরো ম্যাচ ফিট? মাঝমাঠ থেকে আক্রমণভাগে বল বাড়ানোর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কতটা তৈরি স্টুয়ার্টরা? পরে সাহালদের নামিয়েও কাজের কাজ হল না। রিজার্ভ বেঞ্চে বসে রইলেন মনবীর। আশিস রাইকে বারবার টেক্কা দিয়ে গেলেন বিপিনরা। মরশুমের প্রথম ম্যাচ, এখনও অনেকটা সময় পাবেন মোলিনা। কিন্তু যত দ্রুত তিনি উত্তর খুঁজে পাবেন, ততই সুবিধা মোহনবাগানের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.