সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুয়েতের বিরুদ্ধে কী করবেন ভারতীয় কোচ ইগর স্টিমাচ? গ্রুপের একটা ম্যাচ বাকি থাকতেই দল সেমিফাইনালে চলে গিয়েছে। সেখানে মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে একদম খোলা মনে খেলতে নামা উচিত ভারতীয় দলের। কারণ, কুয়েতের বিরুদ্ধে হারা-জেতা কোনও কিছুই আর প্রভাব ফেলবে না সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তায়। সমস্যা অন্য জায়গায়। ইগর স্টিমাচের মাথায় এখন মঙ্গলবারের প্রতিপক্ষ কুয়েত ম্যাচ নয়। ঘোরাফেরা করছে সেমিফাইনাল থেকে ফাইনালের পথে যাওয়ার রাস্তা নিয়ে। কারণ, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে সেমিফাইনালে এক প্রতিপক্ষ হবে। আর গ্রুপ রানার্স হলে আরেক প্রতিপক্ষ। ফলে মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে দল গড়ার আগে নানারকম অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন ভারতীয় কোচ।
ইগর স্টিমাচ ভারতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন ২০১৯-এ। তারপর থেকে তাঁর কোচিংয়ে তথ্য বলছে, ভারতীয় দল ঘরের মাঠে ১২টা ম্যাচ খেলে জিতেছে ১০টিতে। ড্র করেছে বাকি ২টি ম্যাচ। যার মধ্যে একটি বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে। অন্যটি কিছুদিন আগে ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপের গ্রুপ লিগে লেবাননের বিরুদ্ধে ০-০ ফলাফলে। আর এই ১২টি অপরাজিত অবস্থায় থাকা ম্যাচে ভারতীয় দল গোল খেয়েছে মাত্র ২টি। আর প্রতিপক্ষর জালে বল ঢুকিয়েছে ২৩বার। ফলে ইগর স্টিমাচের হাতে ক্রমশ ভালর দিকেই যাচ্ছে ভারতীয় দলের ফলাফল। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কুয়েতের বিরুদ্ধে হালকাভাবে খেলে টানা ৮টি ম্যাচে গোল না খাওয়ার রেকর্ডও হাতছাড়া করতে চাইছেন না ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ। অথচ এই কুয়েতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের ফলাফল কিন্তু কোনও সময়েই খুব একটা ভাল নয়।
এই নিয়ে নবম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। অথচ এর আগে আটবারে কোনওবারই কিন্তু লেবানন বা কুয়েত সাফে খেলেনি। এই দুটি দেশই সাফ অন্তর্ভুক্ত না হলেও, সাফ কর্তৃপক্ষ এবারই লেবানন এবং কুয়েতকে আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে সাফে খেলাচ্ছে। আর তাতেই ভারতের সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কিছুটা হলেও প্রায় জলভাতে পরিণত হওয়ার পরেও এবার কিন্তু বেশ চাপ দেখাচ্ছে।
এর আগে ভারতের সিনিয়র দল তিনবার কুয়েতের মুখোমুখি হয়েছে। তাতে জিতেছে মাত্র একবার। বাকি দু’বার হারতে হয়েছে। তবে সবচেয়ে জঘন্য ফলাফলটা হয়েছিল ২০১০-এ। ২০১১ এশিয়ান কাপে খেলার ঠিক আগেই আবু ধাবিতে কুয়েতের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে যায় ভারতীয় দল। আর সেখানে প্রস্তুতি ম্যাচে ১-৯ গোলে হারতে হয়েছিল ভারতীয় দলকে। ভারতীয় দল একারই মাত্র কুয়েতকে হারিয়েছে। তবে সেটা অনেক আগে। ২০০৪ সালে। একটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ৩-২ গোলে ভারতীয় দল হারিয়েছিলল কুয়েতকে। তবে শক্তিশালী দল হলেও, কম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য ফিফার তালিকায় অনেক পিছনের দিকে রয়েছে কুয়েত। আর যে তথ্যকে একদমই গুরুত্ব দিচ্ছেন না স্টিমাচ। বলছেন, “কুয়েতের র্যাঙ্ক নিয়ে ভাবলে, সেটা বোকামি হবে। শেষ ৬ মাসে ওদের খেলার ফলাফল অসাধারণ। এবারের সাফে কুয়েত অন্যতম শক্তিশালী দল।’
তাহলে মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে কোন দল খেলাবেন স্টিমাচ? মোটামুটি ভাবে ঠিক করে রেখেছেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীকে শুরু থেকে বিশ্রাম দেবেন। কিন্তু সন্দেশ ঝিঙ্ঘান, আনোয়ার আলি, জিকসন সিং, এদের ক্ষেত্রে কী করবেন? এদিন বেঙ্গালুরুতে সাউথ ইউনাইটেড ক্লাবের মাঠে প্র্যাকটিসে নেমে অনেকক্ষণ গোল করে ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনা করলেন ভারতীয় কোচ। সেখানে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল, মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে কীভাবে খেলতে চান তিনি? আর সেই আলোচনা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, সেমিফাইনালের জন্য যে দলটা তিনি ভেবে রেখেছেন, সেই দলটাকে মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে শুরুতেই নামিয়ে দিতে চান না।
কারণ, গ্রুপের ম্যাচে কুয়েতকে হারানোর থেকেও স্টিমাচের লক্ষ্য, সেমিফাইনাল ম্যাচে তরতাজা ফুটবলারদের নামানো। আর তাই হয় তো সুনীলকে বাদ দিয়ে নেপাল ম্যাচে শুরুতে খেলা বেশির ভাগ ফুটবলারকেই কুয়েতের বিরুদ্ধেও দলে রাখতে পারেন তিনি। স্টিমাচের ধারণা, তাঁর মতো কুয়েত কোচও রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের নিয়ে মাঠে নামবেন গ্রুপের শেষ ম্যাচে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.