দুলাল দে: করোনা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে বার্তা দেওয়ার জন্য সারা পৃথিবীজুড়ে মেসি, জাভি-সহ ২৮ জন ফুটবলারকে বেছে নিয়েছে ফিফা(FIFA)। যার মধ্যে ভারতের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীও আছেন। করোনা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের কর্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই পাঁচটি ভিডিও পোস্টও করে দিয়েছেন তিনি। তবে ফিফার প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে সতর্ক করার জন্য ভিডিওর মাধ্যমে শুধু বার্তা দিয়েই বসে থাকতে চান না সুনীল(Sunil Chetri)। সাধারণ মানুষকে সাহায্যে এগিয়ে আসতে চান অন্য ভূমিকাতেও।
আইএসএল (ISL) শেষ হয়ে যাওয়ায় এমনিতে মরশুম শেষ। অন্য সময় হলে পরিবার নিয়ে এতদিনে বেরিয়ে পড়তেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু এবার পৃথিবীজুড়ে পরিস্থিতিটাই তো অন্যরকম। বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ। মরশুম শেষে দিল্লি গিয়ে বাবা-মা’র কাছে থাকার সুযোগটাও হয়নি। স্ত্রী সোনমকে নিয়ে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে বন্দি। এর মধ্যেই মেসি(Leo Messi), পুওলদের পাশে তাঁর নাম। বিশ্বের ২৮ জন ফুটবলারের মধ্যে তাঁকেও ফিফার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করাটা, গর্ব করার মতোই ব্যাপার। অন্য কোনও ইস্যু হলে হয়তো গর্বিত হওয়ার অনুভূতিও প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতিটাই অন্যরকম। বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে সুনীল বললেন, “অন্য সময় হলে হয়তো আমার জন্য ব্যাপারটা সত্যিই দারুণ হত। কিন্তু পরিস্থিতিটা একবার ভাবুন। মেসিদের পাশে জায়গা পাওয়াটা সত্যিই বড় ব্যাপার। কিন্তু যে কারণে, পেয়েছি, সেটা গর্ব করার মতো নয়। শুধু আমাদের দেশই নয়। সারা বিশ্বেই এখন আতঙ্কের পরিবেশ। যে ২৮ জন ফুটবলারকে বাছা হয়েছে, প্রত্যেকে নিজের নিজের ভাষায় করোনা প্রতিরোধ নিয়ে বার্তা প্রকাশ করবে। সেভাবেই হাত ধোয়া থেকে মাস্ক পরা নিয়ে পাঁচটা ভিডিও টুইট করেছি। তবে ভিডিও টুইটের পাশেও বারবার করে সবাইকে বলছি, সারা বিশ্বে কী হচ্ছে, এখন আর কারও অজানা নেই। ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, আমেরিকা সব জায়গায় প্রবল আতঙ্ক। এই সময় ঘরে থাকা ছাড়া করোনা প্রতিরোধ করার আর অন্য কোনও উপায় নেই। সঙ্গে ডাক্তাররা যেভাবে বলছেন, প্লিজ, প্লিজ সবাই সেভাবে মেনে চলুন। এই সময়টায় কেউ ঘরের বাইরে
যাবেন না।”’
এমনিতে সারা বছর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পান না। তিন সপ্তাহ লকডাউনের জন্য এখন সময়ই সময়। বললেন, “সোনমের সঙ্গে ঘরেই থাকছি। কখনও টিভিতে খেলা দেখছি। কখনও সিনেমা। কখনও আবার বই পড়ছি। তবে প্রতিদিন শরীরচর্চা মাস্ট।” ভারতীয় ফুটবল অধিনায়ক প্রত্যেককে ঘরে থাকার আবেদন করলেও তাঁদের কী হবে, যাঁদের প্রতিদিন রোজগারের সন্ধানে বাড়ির বাইরে যেতে হয় ? এঁদের সমাধানের রাস্তাও খুঁজে পেয়েছেন সুনীল। বললেন, “আমরা যাঁরা মাসের শেষ বেতন পাই, তাঁদের হয়তো এই সময় ততটা সমস্যা হবে না। কিন্তু যাঁরা প্রতিদিন রোজগারের আশায় বাড়ির বাইরে যান, এই লকডাউনে সমস্যা হতে পারে। তবে তাঁদের সমস্যা মেটানোর জন্য যাঁরা মাস শেষে বেতন পাই, তাঁদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের বেতন থেকে কিছুটা সাহায্য এই সময় সেই ব্যক্তিদের করতে হবে। বলছি না যে, সমাজের সবার জন্যই আপনাকে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আপনার কাছাকাছি অন্তত একজন মানুষকেও এই বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। এভাবে সবাই সাহায্যর হাত বাড়ালে দেখবেন, পুরো সমাজেই তাঁর প্রভাব পড়ছে। আর এভাবেই এই কঠিন সময়ে সবাই একসঙ্গে লড়াই করতে পারবে।” সুনীল বারবার সতর্ক করে বললেন,”অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছি আমরা। সবাই মিলে টিম হিসেবে না লড়লে এই ম্যাচ জিততে পারব না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.