সুলয়া সিংহ: কানায় কানায় পরিপূর্ণ যুবভারতী। কখনও ‘ইন্ডিয়া… ইন্ডিয়া’, তো কখনও ‘ছেত্রী… ছেত্রী’ ৬১,৮৮৬-র শব্দব্রহ্মে ফুটবলময় হয়ে উঠেছিল তিলোত্তমা। আর এমন পরিবেশে সফরকারীদের থেকে গোল হজম করাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ভারতের কোচ ইগর স্টিমাচ। গোটা ম্যাচে বল পজেশনে এগিয়ে থেকেও অত্যন্ত বোকার মতো একটা গোল প্রথমার্ধেই পিছিয়ে দেয় ভারতকে। শেষ মুহূর্তে গোল শোধ করে মান বাঁচালেও ঘরের মাটিতে জয়ের মুখ দেখা হল না মেন ইন ব্লুর। তবে পয়েন্ট নষ্ট হলেও এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ছেলেদের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন স্টিমাচ।
সাংবাদিক বৈঠকে এসে সাফ বলে দিলেন, “ছেলেরা আমাদের সম্পদ। ফুটবলে তো এমন হয়েই থাকে। তাই বলে তাদের কি খুব খারাপ বলা যায়? এমন মুহূর্তে ওদের জড়িয়ে ধরে শুধু সান্ত্বনা দিতে পারি। আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারি। আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি প্রতিপক্ষ অনুযায়ী আমরা নিজেদের খেলা বদলে ফেলতেও পারি। গোলের অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম।” কিন্তু স্টিমাচ যতই ফুটবলারদের দোষ ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন, ৯০ মিনিট ভারতের পারফরম্যান্সই বলে দিচ্ছে এ ম্যাচ থেকে কত কষ্ট করে একটি পয়েন্ট অর্জন করতে হয়েছে সুনীলদের। চোট পাওয়া সন্দেশের অনুপস্থিতি ডিফেন্সের ফাঁক ফোকড়গুলো বেশ স্পষ্ট করে তুলেছিল। আর তেকাঠির নিচে গুরপ্রীতের পারফরম্যান্সের কথা যত কম বলা যায়, তত ভাল। কোচ অবশ্য মেনে নিয়েছেন, প্রথমার্ধে পিছন থেকে সাপলাই লাইন একেবারেই ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি আর সাপলাই বাড়লেও আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে পারেননি সুনীলরা। কাতারের বিরুদ্ধে সুনীলহীন যে ভারতীয় দলের সাক্ষী থেকেছিল দেশবাসী, এ ম্যাচে তার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। তবে স্টিমাচ ভাঙলেও মোচকাচ্ছেন না। তাঁর সাফ কথা, বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে হলে এখনও ঝুলিতে অনেক পয়েন্ট ভরতে হবে। সেটাই এখন লক্ষ্য হওয়া উচিত।
পয়েন্ট নষ্ট করে বেশ বিষণ্ণ মুখেই স্টেডিয়াম ছাড়লেন অধিনায়ক ছেত্রী। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, “অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম গোলের। কিন্তু পারিনি। গোল করা উচিত ছিল। একটা একটা করে ম্যাচই ভাবব। কোচ সেভাবেই ভাবতে বলেছেন। প্রত্যেকটা ম্যাচেই লড়ব।” সেই সঙ্গে যুবভারতীর অভাবনীয় পরিবেশকে ধন্যবাদও জানালেন অধিনায়ক। বলেন, “তেরো-চোদ্দ বছর ফুটবল খেলছি। জাতীয় দলের জন্য এধরনের সমর্থন এর আগে কখনও দেখিনি। আমি আপ্লুত। সবাইকে ধন্যবাদ।”
ভারতের মন খারাপের দিনে অবশ্য় প্রতিপক্ষ শিবির বেশ ফুরফুরে। দলের ডিফেন্স নিয়ে রীতিমতো গর্বিত বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। বলেই দিলেন, “আমরা ওদের থেকে ব়্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা পিছিয়ে। তাই লড়াইটা বেশি করেছিলাম। ডিফেন্সকে দশে সাড়ে নয় দেব।” এপার বাংলা থেকে একটি পয়েন্ট নিয়ে হাসি মুখেই দেশে ফিরছেন জামালরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.