এভাবেই মহম্মদ শামির সাফল্য উপভোগ করছিলেন জশপ্রীত বুমরাহ। ছবি: টুইটার
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্তমান ভারতীয় দলে তিনি অন্যতম ম্যাচ উইনার। মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) যে কোন ফরম্যাটে বল হাতে মাঠে নামলেই স্বস্তিতে থাকে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে গত এশিয়া কাপে (Asia Cup 2023) শামির ভূমিকা একেবারে বদলে গিয়েছিল। জশপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah) দলের অটোমেটিক চয়েস। তাঁকে কোনও মতেই দলের বাইরে রাখা সম্ভব নয়। এদিকে তরুণ মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) দারুণ ফর্মে ছিলেন। তাই শামিকে বাধ্য হয়েই দলের বাইরে রেখেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। গত এশিয়া কাপে নেপাল (Nepal) ও বাংলাদেশের (Bangladesh) বিরুদ্ধে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস’। যদিও কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিনি যে কতটা দরকারি সেটা ফের বুঝিয়ে দিলেন। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে মোহালির বাইশ গজে নেমেই নিলেন ৫১ রানে ৫ উইকেট। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা হলেন অভিজ্ঞ জোরে বোলার।
কিন্তু মাঠের বাইরে থাকা কতটা কষ্টের? সাংবাদিক বৈঠকে এসে শামির স্পষ্ট জবাব, “এটা তো খেলার অঙ্গ। ক্রিকেটে তো ১১ জনের বেশি মাঠে নামানো যায় না। তাই দলের স্বার্থ বুঝে সেটাকে প্রাধান্য ও টিম ম্যানেজমেন্টকে সম্মান জানানো উচিত। মনে রাখবেন সবসময় যে আমাকে ম্যাচ খেলতেই হবে সেটার কোনও মানে নেই। আমি যখন লাগাতার খেলতাম, তখন তো কাউকে না কাউকে বাইরে বসতেই হত। এবার কাউকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য আমাকে ড্রেসিংরুমে বসতে হচ্ছে। এতে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। কারণ কেন আমাকে বাইরে রেখে দল গড়া হচ্ছে, সেই ইস্যু নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করার পরেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।”
এই নিয়ে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে দ্বিতীয়বার পাঁচ উইকেট নিলেন শামি। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিয়েছিলেন ৬৯ রানে ৫ উইকেট। আর এবার অজিদের বিরুদ্ধে তাঁর বোলিং ফিগার ১০-১-৫১-৫। একইসঙ্গে এমন আগুনে বোলিং করে অজিদের বিরুদ্ধে আরও একটি নজির গড়লেন। এতদিন পর্যন্ত ক্যাঙারুদের বিরুদ্ধে উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় নম্বরে ছিলেন বর্তমান মুখ্য জাতীয় নির্বাচক অজিত আগরকর। তিনি সর্বাধিক ৩৬ উইকেট। প্রাক্তন জোরে বোলারকে টপকে শামি চলে গেলেন এই তালিকার দুই নম্বরে। অবশ্য এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন কপিল দেব। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে সর্বাধিক ৪৫টি উইকেট।
সামনেই বিশ্বকাপ। এর আগে তিন পেসারকে চোটমুক্ত থাকার জন্য ‘রোটেশন নীতি’ অবলম্বন করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটা মাথায় রেখে শামি ফের যোগ করেছেন, “বিশ্বকাপ আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় ইভেন্ট। আর তাই রোটেশন নীতি’ অবশ্যই মেনে চলা উচিত। কোন পরিবেশে খেলছি, বিপক্ষে কোন দল আছে, সেটা ভেবেই প্রথম একাদশ বেছে নেওয়া হবে।”
প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই দলকে সাফল্য এনে দেন শামি। তাঁর আউট সুইং বুঝতে না পেরে খোঁচা দেন মিচেল মার্শ। বলে চলে যায় প্রথম স্লিপে থাকা শুভমান গিলের হাতে। এরপর অবশ্য দুই অভিজ্ঞ অজি ব্যাটার বাইশ গজ দাপাতে থাকেন। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথ ৯৪ রান তুলে দেন। তবে শ্রেয়স আইয়ার একটু সজাগ থাকলে এই জুটি অনেক আগেই ভেঙে যেত। ওয়ার্নার তখন ২৯ রানে ব্যাট করছেন, ঠিক এমন সময় শার্দুল ঠাকুরের বলে লোপ্পা ক্যাচ ফেলে শ্রেয়স। যদিও ওয়ার্নারকে (৫২) ফিরিয়ে ভারতকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। ফলে ৯৮ রানে ২ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এর কিছুক্ষণ পর আবার সাফল্য পায় টিম ইন্ডিয়া। স্টিভ স্মিথ ফিরে যান ৪১ রানে। দুরন্ত অফ কাটারে তাঁর স্টাম্প ছিটকে দেন শামি। এরপর লোয়ার অর্ডারকেও ভেঙে দেন তিনি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা মার্কাস স্টইনিসকে ২৯ রানে আটকে দেন। ফলে ২৭৬ রানে অল আউট হয়ে যায় অজিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.