দুলাল দে: আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ। পদত্যাগ করলেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। এদিন তিনি পদত্যাগপত্র অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্তকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল বিকেলে। নিয়ম বিরুদ্ধভাবে কণ্যাশ্রী কাপে মহিলা ফুটবলের সেমিফাইনালে পুলিশ এসির বিরুদ্ধে ৩ জন আন্তঃরাজ্য ফুটবলার খেলিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal)। নিয়মে আছে দু’জনের বেশি আন্তঃরাজ্য ফুটবলার খেলানো যাবে না। সেই ম্যাচে সেমিফাইনালে পুলিশ এসিকে (Police AC) টাই-ব্রেকারে হারিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গল ফাইনালে ওঠে। খেলা শেষ হওয়ামাত্রই প্রতিবাদ করে পুলিশ এসি। যা নিয়ে গতকাল বৈঠক হয় আইএফএ’তে (IFA)। ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী কমিটির সদস্য হওয়ার দরুণ অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বৈঠকে ছিলেন না। তবে, তা না থাকলেও আগে থেকেই ঘুঁটি সাজিয়ে রেখেছিলেন। দেখা যায় মীনা খাতুন, যিনি গতবছর মুম্বইয়ে খেলেছেন, তিনি আন্তঃরাজ্য ছাড়পত্র নিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলে সই করেছেন। এসসি ইস্টবেঙ্গল আবার তাঁর নাম মীনা বেগম বলে সই করিয়েছে স্থানীয় ফুটবলার হিসেবে। কিন্তু সিআরএস সিস্টেমে নাম রয়েছে মীনা খাতুন। আশ্চর্যের বিষয় হল, এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্লেয়ারদের প্লেয়ার্স কার্ডে সই-ই নেই আইএফএ সচিবের। তাঁর পরিবর্তে সভাপতি নিজে সই করে প্লেয়ারদের কার্ড করিয়েছেন।
শুক্রবার আইএফএ’র সভায় উপস্থিত সবাই মেনে নেন মীনা খাতুনকে অবৈধভাবে সই করিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সেমিফাইনাল রিপ্লে দেওয়া হয়। পুলিশের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, ফাইনাল ম্যাচ যদি বাতিলই হয়ে যায়, তাহলে তো প্রমাণিত যে ইস্টবেঙ্গল ভুল প্লেয়ার খেলিয়েছে। সেক্ষেত্রে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে বাতিল করে দেওয়া উচিত। কিন্তু সভাপতি অজিতের প্রভাবে আইএফএ কর্তারা পুলিশ কর্তাদের অনুরোধ করতে থাকেন যাতে আজ আবার সেমিফাইনাল খেলা হয়। যা নিয়ে পরে পুলিশের কোচ সুজাতা কর ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
অন্যায়ভাবে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে ফের সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য খোদ আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় (Joydeep Mukherjee) পদত্যাগ করে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, গতকাল পুলিশের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাঁর সঙ্গে তিনি একমত নন। এ প্রসঙ্গে, মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বোস (Srinjoy Bose) বললেন, “এটা তো অনেক দিন ধরেই খুল্লমখুল্লাভাবে হচ্ছে যে, আইএফএ’র সভাপতির চেয়ারে বসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কাজ করছেন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।” তিনি আরও বলেন, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য যদি আইএফএ’র সভাপতি হন, তাহলে তিনি এসসি ইস্টবেঙ্গলের স্বার্থ দেখবেন, এটাই স্বাভাবিক। ওঁর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন চেক করে দেখা হোক উনি কতক্ষণ আইএফএ’তে থাকেন, আর কতক্ষণ ইস্টবেঙ্গলে থাকেন। অন্যায়ভাবে অবৈধ ফুটবলার খেলানো সত্ত্বেও যেভাবে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে রিপ্লে দেওয়া হল, তাঁর প্রতিবাদ করছি।” মোহনবাগানের (Mohun Bagan) অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বলছেন, “এত বড় কলঙ্কিত সভাপতি আইএফএতে এর আগে আসেননি। এহেন গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারকে তিনি দিনের পর দিন কালিমালিপ্ত করছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.