কার্লেস কুয়াদ্রাত।
শিলাজিৎ সরকার: প্রথমার্ধের শেষ ২০ মিনিটে একটা ঝড়। তাতেই বিরতির আগে ৩-০ গোলে এগিয়ে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। আর তার সঙ্গেই শুরু হয়েছিল বাঙালির বড় ম্যাচে ফের ৫ গোল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা।
সেই আলোচনার আঁচ যে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) শিবিরেও পৌঁছে গিয়েছিল, ম্যাচ শেষে সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের (Carles Cuadrat) কথাতেই। লাল-হলুদের স্প্যানিশ হেডস্যর শুনিয়ে গেলেন, “প্রথমার্ধে আমাদের খেলা দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন যে আমরা পাঁচ গোল খাব, ১৯৭৫-এর পুনরাবৃত্তি হবে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমার ছেলেরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিনিয়ররা তো বটেই, সায়ন ও বিষ্ণুর মতো তরুণরাও শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছে। ওদের এই লড়াকু মানসিকতায় আমি খুশি।”
প্রথমার্ধে ক্লেটন সিলভার পেনাল্টি ঠেকালেন মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কাইথ, দ্বিতীয়ার্ধে রুখলেন লাল-হলুদ অধিনায়কের জোরালো হেড। দু’টোই গোল হয়ে গেলে পরিস্থিতি অন্য হয়ে যেত বলেন মনে করছেন কুয়াদ্রাত। বললেন, “আগে গোল করতে পারাটা সবসময়ই আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। ক্লেটনের সুযোগ নষ্ট, নুঙ্গার চোটের প্রভাব আমাদের খেলায় পড়েছে। সঙ্গে ফুটবলারদের ক্লান্তিও একটা ফ্যাক্টর। ক্লেটনের হেডটা গোলে ঢুকলে বা শেষে বিষ্ণুকে করা ফাউলে পেনাল্টি পেলে ফলাফল অন্যরকম হতেই পারত।”
রেফারিং নিয়ে মন্তব্য করে নারাজ হলেও বিষ্ণুকে করা ফাউলে পেনাল্টি না পেয়ে তিনি যে অসন্তুষ্ট, বুঝিয়ে দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। পরবর্তী ম্যাচের আগে দীর্ঘ বিরতি আছে। তাই আপাতত ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিন কুয়াদ্রাত।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই তিন গোলে পিছিয়ে পড়লেও ফুটবলারদের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন কুয়াদ্রাত। নন্দ-হিজাজিদের দোষত্রুটি আড়াল করে কোচ বলছেন, “কে বলে আমরা প্রথমার্ধে ভালো খেলিনি? তথ্য দেখুন। মোহনবাগান লিগের সব ম্যাচ মিলিয়ে ৬বার প্রথম ১৫ মিনিটে গোল করেছে। সেখানে ওদের বিরুদ্ধে ১৪ মিনিটে আমরা পেনাল্টি আদায় করেছি। ওরা একতরফা খেললে সেটা হত না।”
তবে মোহনবাগানের থেকে তাঁর দল পিছিয়ে, সেটা মেনে নিয়েছেন তিনি। পরিসংখ্যান উল্লেখ করে কুয়াদ্রাত বলে গেলেন, “ওদের প্লেয়ারদের গুণগত মান ভালো। এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত আমাদের সুযোগ কাজে লাগানোর হার ছিল পঞ্চাশ শতাংশের আশপাশে। সেখানে মোহনবাগান ৮০ শতাংশ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এর থেকেই দু’দলের আক্রমণভাগের মানের প্রমাণ পাওয়া যায়। ওদের দিমিত্রি, কামিংসরা খুবই ভালো প্লেয়ার।”
টানা হারে ক্রমেই লিগ টেবলের নিচের দিকে পোক্ত হচ্ছে লাল-হলুদের অবস্থান। কুয়াদ্রাত অবশ্য নকআউটের আশা ছাড়ছেন না। “আমাদের প্রথম ছয়ের আশা শেষ হয়ে গিয়েছে এমন না। শেষ তিনটে ম্যাচ জিতলে ২৭ পয়েন্টে শেষ করব। আশা করছি সেটাই যথেষ্ট হবে নকআউটে যাওয়ার জন্য,” বলছিলেন প্রত্যয়ী কুয়াদ্রাত।
এতটা প্রত্যয়ী পারফরম্যান্স তাঁর ছাত্ররা করতে পারবেন কি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে কুয়াদ্রাতকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.