সোম রায়: এএফসি এশিয়ান কাপ ও তার প্রস্তুতির জন্য স্টিফেন কনস্টানটাইনের প্রশিক্ষণে শিবির চলছে জাতীয় দলের। যার জেরে বন্ধ আইএসএল। অথচ রমরমিয়ে চলছে আই লিগ। খাতায়-কলমে যাকে দেশের এক নম্বর লিগ হিসাবে দেখায় সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। আর এখানেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে আই লিগে খেলা দলগুলি।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ক্লাবগুলির কাছে আই লিগ সূচির খসড়া পাঠায় ফেডারেশন। তখন দেখা যায় ডিসেম্বরে আইএসএল বন্ধ থাকলেও চলবে আই লিগ। তাই ক্লাবগুলির বক্তব্য, কোন যুক্তিতে জাতীয় দলের খেলার সময় আইএসএল বন্ধ রেখে আই লিগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে? তাহলে কি ফেডারেশন জানত আই লিগে খেলা ফুটবলাররা জাতীয় দলে ডাক পাবে না? নাকি জাতীয় কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনের উপর কারও নির্দেশ ছিল আই লিগ থেকে ফুটবলার নেওয়া যাবে না?
আই লিগের খেলা বন্ধ না রাখার পিছনে ফেডারেশনের কী বক্তব্য, তা জানিয়ে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকারের প্রশ্ন, “ওদের বক্তব্য আই লিগে খেলা মাত্র একজন ফুটবলার জাতীয় দলে আছে। তাই সূচি বন্ধ করা হয়নি। কিন্তু ফেডারেশন কীভাবে জানল, ডিসেম্বরে জাতীয় দলে মাত্র একজন ফুটবলার থাকবে? তাহলে কি আগেই দল ঠিক ছিল? নাকি আই লিগের খেলা দেখা হয় না। জানি না ওদের ভাবনা কী? এই ভাবনা নিয়ে ভারতীয় ফুটবল কতটা এগোবে?” কথা প্রসঙ্গে বিরক্তি ও হতাশা দুই-ই শোনা যায় মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্তর গলায়। বললেন, “এতে ফুটবলাররা মোটিভেশন হারাচ্ছে। এই যে জবি এত ভাল খেলছে, ও কেন জাতীয় দলে খেলবে না? আসলে আমাদের শেষ করার চক্রান্ত চলছে।” রঞ্জিত বাজাজ এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুললেন। মিনার্ভা কর্তা বললেন, “ইস্টবেঙ্গল থেকে সালাম রঞ্জন সিং আই লিগ ফুটবলার হিসাবে আছে। আজ ওর জায়গায় যদি ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশের কোনও প্লেয়ার ডাক পেত, তখন কী হত? ইস্টবেঙ্গল তো চাপে পড়ত। আসলে এআইএফএফ আই লিগের ক্লাবগুলোর সঙ্গে বিমাতাসূলভ আচরণ করছে।”
মোহনবাগান কোচ শংকরলাল চক্রবর্তী আর এক প্রসঙ্গ টানলেন। তাঁর বক্তব্য, “গতবার শেষ রাউন্ডে চারটে দল লড়াইয়ে ছিল। এবার চেন্নাইয়ের থেকে মিনার্ভা আট পয়েন্টে পিছিয়ে। টুর্নামেন্টের কঠিন লড়াই যেন সবাই বুঝতে না পারে, তাই হয়তো ৩০টা ম্যাচের সম্প্রচার বন্ধ হল। আই লিগকে গুরুত্বহীন করার একটা চেষ্টা চলছে। তাই হয়তো অনেক উপর থেকে চাপ আসছে আই লিগ থেকে ফুটবলার না নিতে। এখান থেকে বেশি ছেলে জাতীয় দলে এলে যে প্রমাণ হবে আই লিগও কম যায় না। আবার সুযোগ না পেলে ফুটবলাররাও বেশি করে আইএসএল-এ যাবে।”
এই বিষয়ে ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, “কথাগুলি বোকা বোকা। কোচের কাজে কেউ নাক গলায় না। কেউ কিছু বললেও স্টিফেন শোনার পাত্র নন। শেষ ক’বছর ও যে ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করছে, তাতেই বোঝা গিয়েছিল আই লিগ থেকে বেশি ফুটবলার সুযোগ পাচ্ছে না। তাই আই লিগে বিরতি দেওয়া হয়নি।” যে কোনও বিতর্কে পালটা বক্তব্য থাকেই। কিন্তু বাস্তব হল, এশিয়ান কাপে জাতীয় দলে খেলা থেকে বঞ্চিত জবি-সহ আই লিগ ফুটবলাররা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.