নেরোকা এফসি- ২ (এডু, উইলিয়ামস)
মোহনবাগান- ১ (হেনরি)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জয়ের হ্যাটট্রিক হল না। ইম্ফলে নেরোকার কাছে হেরে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে মোহনবাগানকে। বক্সের মধ্যে ফিনিশিংয়ের অভাবের খেসারত দিতে হল সবুজ-মেরুন শিবিরকে। শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হেরে লিগ জয়ের দৌড় থেকে পিছিয়ে গেল বাগান। চাপ বাড়ল কোচ শংকরলাল চক্রবর্তীর। অন্যদিকে, আই লিগে নেরোকার কাছে প্রথম হারল মোহনবাগান। এদিনের ম্যাচে নেরোকা জিতল ২-১ গোলে। একইসঙ্গে ১০ ম্যাচে ৫টি জয় পেয়ে লিগ টেবলের দু’নম্বরে উঠে এল নেরোকা। অন্যদিকে, হেরে পাঁচ নম্বরেই থাকল মোহনবাগান।
মোহনবাগান ভালমতো জানত, ইম্ফলের মাটিতে নেরোকাকে হারানো আর সিংহের গুহায় সিংহ বধ করার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তার উপর দলে এমন কয়েকজন আছেন যাঁরা একসময় সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে খেলেছেন। বলা যায় ঘরশত্রু। ওঁরা হলেন, এডু, কাটসুমি, স্মরণ ও সুভাষ সিং। অনেকের মতে, পুরনো দলকে চাপে ফেলতে ওঁরা শুরুতেই ঝাঁপাবে। এটাই মাঠে নামার আগে ওঁদের মোটিভেশন। এদিন হলও তাই। কাটসুমি, সুভাষ সিংরা সারাক্ষণ চাপে রাখলেন মোহনবাগান ডিফেন্সকে। নেরোকার প্রথম গোলও এল একসময়ে মোহন-ডিফেন্সের অন্যতম ভরসা এডুর কাছ থেকে। উলটোদিকে, প্রথমার্ধে দুবার বক্সের একদম কাছে এসে ওমর গোলের বদলে আকাশে ভাসিয়ে দিলেন বল। হেনরি, ডিকারাও প্রথমার্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তার উপর ডার্বির মতো এদিনও তাড়াতাড়ি আজহারউদ্দিন মল্লিককে তুলে নিয়ে ফৈয়াজকে নামান কোচ শংকরলাল। যা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ দেখাল আজহারউদ্দিনকে।
বিরতির পর গোলের জন্য ঝাঁপায় মোহনবাগান। গোলও আসে। হেনরি কিসেকার গোলে সমতায় ফেরে বাগান। কিন্তু ফের গোল করে লিড বাড়িয়ে নেয় নেরোকা। গোল করেন উইলিয়ামস। এই অবস্থায় পরিবর্ত হিসাবে মেহতাবকে নামান মোহনবাগান কোচ। লাজং ম্যাচে ভাল খেলেও কেন এদিন মেহতাবকে এত পরে নামানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ফুটবল মহলে। ড্যারেন কালডেরার পারফরম্যান্স অত্যন্ত হতাশাজনক। তাই তাঁকে আর মাঠে রাখতে চাননি শংকরলাল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্যারেনকে অনেক আগেই তুলে নিয়ে মেহতাবকে নামানো উচিত ছিল। মেহতাব নামায় মোহনবাগানের মাঝমাঠের চেহারা কিছুটা বদলায়। দ্বিতীয়ার্ধেও ওমর সেই একই কায়দায় বক্সের মধ্যে থেকে বল আকাশে ভাসিয়ে দেন। যা নিয়ে বিরক্ত হন সতীর্থরাও। দ্বিতীয় গোল হজম করার পর আর সেই অর্থে ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাগান। বক্সের মধ্যে লম্ফঝম্ফ ছাড়া ডিকার কোনও ভাল মুভ চোখে পড়েনি এদিন।
সবমিলিয়ে কঠিন ম্যাচ হলেও হারটা বরদাস্ত করতে পারছেন না ফুটবলাররা। তা ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর মেহতাব, ইউটাদের শরীরী ভাষাই বুঝিয়ে দিচ্ছিল। আর কোচ শংকরলালের চোখেমুখে তখন হতাশা ফুটে উঠছিল। হয়তো বুঝতে পারছিলেন, লিগ জয়ের থেকে ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে দল। বাগান সমর্থকদের ব্যথা আরও বাড়াল ম্যাচ শেষে হিরো অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার এডুর হাতে যাওয়ায়। আক্ষরিক অর্থে, ঘরশত্রুরাই এদিন ডোবাল মোহনবাগানকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.