স্টাফ রিপোর্টার: টেকনিক্যালি এবং ট্যাকটিক্যালি তিনি শক্তিশালী। ভারতীয় ফুটবল সার্কিটে একথা অনেকে বলেন। পাশাপাশি খালিদ জামিলের আরও একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন তাঁর প্রতিপক্ষ কোচরা। তা হল মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি খালিদ বরফ শীতল মস্তিষ্কের মেন্টাল গেম।
নেরোকার বিরুদ্ধে নামার আগে দলের ফুটবলারদের টেকনিক্যাল-ট্যাকটিক্যাল টাচ দেওয়ার পাশাপাশি এটাই করছেন বাগান কোচ। যেখানে বেশি জোর দিচ্ছেন ফুটবলারদের মনস্তত্ত্বে। শনিবারের ম্যাচের আগে তিনি যতটা কোচের ভূমিকায়, তার থেকেও বেশি মনোবিজ্ঞানী। সোনি, ওমরদের ইতিমধ্যে দিয়েছেন সাইকোলজির কয়েকটি সহজপাঠ। যেমন, ১) সহজ-সরল থাকো। ২) একাগ্র হও। ৩) মুখ বুজে পরিশ্রম করে যাও। ফল পাবেই।
দায়িত্ব নেওয়ার পর কেটেছে হোম ম্যাচ জুজু। মিনার্ভা পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে জয়ের ছন্দটা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর খালিদ। কিন্তু বিভিন্ন দিক থেকে আসা আবদারে ফুটবলারদের উপর অতিরিক্ত চাপ যেন তৈরি না হয়, তাই তাঁদের সহজ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন খালিদ। দিয়েছেন একাগ্রতা ধরে রাখার বার্তাও। প্রথম লেগে নেরোকা ম্যাচের ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে কনসেনট্রেশন নড়ে যাওয়ার তত্ত্ব। সেদিন সেট পিসেই নেরোকার কাছে শেষ মোহনবাগান। দু’টি কর্নার থেকে দু’টি গোল করেন এডুরা। খালিদ মনে করেন সেট পিসের সময় মুহূর্তের জন্য একাগ্রতা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ায় গোল হজম করেছে দল। এই কারণে ফুটবলারদের নিঃস্বার্থ পরিশ্রমের কথা বলেছেন। সঙ্গে বার্তা, পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই।
এ তো মাঠের বাইরের কথা। শুক্রবার নেরোকা বধের প্রস্তুতিতে যে বিষয়ে জোর দিলেন খালিদ, তা হল প্রতিপক্ষের সেট পিস। ডিফেন্ডারদের সেই সেট পিস মোকাবিলা করার ড্রাই রান করালেন। টানা ম্যাচ খেলতে হচ্ছে দলকে। তাই শনিবার দলে বদল আনতে পারেন। স্টপারে দলরাজের বদলে কিংসলের সঙ্গী হতে পারেন কিমকিমা। আগেরদিন লেফট ব্যাকে খেলা গুরজিন্দরের বদলে রাইট ব্যাক অরিজিৎ বাগুই। সেটা হলে বাঁদিকে খেলবেন অভিষেক। আই লিগে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে এই ম্যাচকে অন্যতম সেরা বলছেন খালিদ। “এই ম্যাচটা আমাদের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। আগের ম্যাচে জিতে দল ছন্দ পেয়েছে। সেটা ধরে রাখতে হবে। ছেলেদের বলেছি চাপ না নিয়ে সব সহজ করে দেখতে। কঠিন পরিশ্রম কর। তাহলে রেজাল্ট নিয়ে ভাবতে হবে না।” খালিদ বলেন।
নেরোকা ম্যাচের পর দু’ সপ্তাহের বিরতি। তারপর ডার্বি। এই সময়ে দলের ভুল-ত্রুটি ঠিক করে ফেলতে চান খালিদ। তার আগে মনোবল ধরে রাখতে এই ম্যাচে তিন পয়েন্টকে পাখির চোখ করছেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন এডু। যিনি দু’মরশুম আগে খেলেছেন মোহনবাগানে। গতবার খালিদের প্রশিক্ষণে ইস্টবেঙ্গলে। কোচ ম্যানুয়েল ফ্রেইলিকে যথাসম্ভব তথ্য দিয়ে সাহায্য করছেন। কথাপ্রসঙ্গে এল সোনির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের কথা। বলছিলেন, “আমরা ভাল বন্ধু। কিন্তু মাঠে সে সব মাথায় থাকবে না। ওখানে আমার কাজ ওকে আটকানো। সেটাই করছি।” দুই শিবিরে লক্ষ্য এক। আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে টিকে থাকা। তবে দর্শন আলাদা। মোহনবাগান ‘ছন্দ’ ধরে রাখতে পারে? না কি নেরোকা আরও উঁচুতে ওঠে। শনিবারের যুবভারতীতে দেখার শুধু সেটাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.