সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার্চিলের পর এবার লাজং। যাদের কিছুদিন আগেই পাঁচ গোলের মালা পরিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অথচ মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন বললেন, “এই তথ্যটাই তো আমার দলের সামনে সবচেয়ে বড় হার্ডল। ইস্টবেঙ্গল পাঁচ গোল দিয়েছে মানেই এবার সবাই ধরে নেবে, লাজং মানেই পাঁচ গোল হবে। যা কাজে করে দেখানো যথেষ্ট কঠিন ব্যাপার।”
সত্যিই কঠিন। বিশেষ করে বৃহস্পতিবারের মোহনবাগান দলের কাছে। মোহনবাগান যে এখন মোটামুটি মিনি হাসপাতাল! দলের তারকা ফুটবলাররাই তো চোটের কবলে। এসবের মধ্যেই কিছুটা ‘স্বস্তি’র খবর, অস্ট্রেলিয়ান মিডফিল্ডার দিওগোকে নিয়ে যে সমস্যায় পড়েছিল সবুজ-মেরুন শিবির, তা মিটে যাওয়ার পথে। শোনা যাচ্ছে, দিওগোর এজেন্টকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাজি করানোর পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই বিদেশি ফুটবলারকে। সঞ্জয় সেনের অনুশীলনে আসাও বন্ধ করে দিয়েছেন দিওগো। এবার নতুন কোনও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার নিতে আর ‘আইনি’ সমস্যা রইল না বাগান কর্তাদের। কিন্তু আজ শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে কী হবে? কম করে একমাসের জন্য মাঠে নেই জাপানি ইউটা। চোট রয়েছে সোনি নর্ডিরও। একই কারণে এদিন অনুশীলনেই এলেন না অরিজিৎ বাগুই। স্বাভাবিক ভাবেই তিনিও নেই লাজং ম্যাচে। এঁদের মধ্যে কুঁচকির চোট থেকে কিছুটা ভাল অবস্থায় ক্রোমা। এদিন অনুশীলনের পর টিমের ফিজিওর কাছে নিজের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে যতই রহস্য তৈরি করে রাখুন ক্রোমা, লাজং ম্যাচে মোহনবাগানের প্রথম একাদশে সম্ভবত তিনি থাকছেন।
যদিও সত্যিই ম্যাচের দিন সকালেও বলা সম্ভব নয়, সোনির বৃহস্পতিবার ভবিষ্যৎ কী! এদিন বাগান অধিনায়ক অনুশীলনে এলেও সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকলেন ফিজিওর সঙ্গে। তাঁবু ছাড়ার মুখে জানালেন, বল মারা দূর অস্ত, তাঁর কাছে খুব জোরে আসা বল রিসিভ করতেও পায়ে ব্যথা লাগছে। তার মানে অবশ্য এই নয় যে, এখনই বলে দেওয়া সম্ভব, লাজং ম্যাচে নেই সোনি। বরং মাঠে নামার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সবুজ-মেরুনের দশ নম্বর জার্সি। পাশাপাশি এটাও মাথায় রয়েছে, চোট নিয়ে জোর করে মাঠে নামতে গিয়ে যদি যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়, তাহলে এরপর আই লিগের আরও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো মিস করতে পারেন। সেকারণে ঠিক করেছেন, ম্যাচের দিন সকালে একবার জগিং করে দেখবেন, খেলার জায়গায় আছেন কি না। তখনও যদি ব্যথা লাগে, তাহলে লাজং ম্যাচ না খেলে পরের ম্যাচের দিকেই মনোসংযোগ করবেন সোনি।
সঞ্জয় সেনও বলছিলেন, “এখনই লাংজ ম্যাচের স্কোয়াড তৈরি করতে পারছি না। সকালে ফুটবলারদের চোট-আঘাতের চূড়ান্ত অবস্থা জানার পরেই টিম বানাব। সেরকম হলে কুড়ি জন ফুটবলারকে মাঠে আসতে বলা হবে। পরিস্থিতি বুঝে প্রথম ১৮ বাছব।” সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বাগানের বিদেশি ফুটবলার নিশ্চিত বলতে কিংসলে আর কিছুটা ক্রোমা। যেখানে এবার আইলিগের ম্যাচে পাঁচ বিদেশিকে খেলানোর সুযোগ রয়েছে ক্লাবগুলোর। একবার যুবভারতী। একবার বারাসত। আবার যুবভারতী। ডার্বি যুবভারতীতে খেলেই সোনিদের চার্চিল ম্যাচ খেলতে হয়েছিল বারাসতে। আজ লাজং ম্যাচ খেলতে হবে ফের যুবভারতীতে। মোহনবাগান কোচের অবশ্য ভেনু নিয়ে সমস্যা নেই। দৃপ্ত কন্ঠে সঞ্জয় সেন বললেন, “যে কোনও মাঠে আমরা খেলতে প্রস্তুত।” ইউটা মাঠের বাইরে। সোনি, ক্রোমার মতো ফুটবলারের চোট। বাগান কোচ যে তাতেও খুব একটা চিন্তিত মনে হল না। বললেন, “এক-দু’জন ফুটবলার মাঝেমধ্যে ব্যাক্তিগত ঝলকের জোরে ম্যাচ বের করে দিতে পারে। তবে ফুটবলটা এগারোজনের খেলা। আমার সুস্থ এগারো ফুটবলার দরকার। তবে হাতে এখনও সময় আছে। দেখাই যাক না কী হয়!”
লাজং ম্যাচ নিয়ে ভয়ের কারণটা আরও একবার তুললেন বাগান কোচ। বললেন, “ইস্টবেঙ্গল পাঁচ গোল দিয়েছে মানে আমরাও পাঁচ গোল দেব, এই প্রত্যাশার চাপটাই তো ভয়। আর সেদিন লাজংয়ের দিন ছিল না। যা করেছে সব ভুল হয়েছে। কিন্তু ওরা যথেষ্ট কঠিন প্রতিপক্ষ। ফুটবলাররা বয়সে তরুণ। সারাক্ষণ দৌড়বে।” ইস্টবেঙ্গলের কাছে পাঁচ গোল খাওয়ার পরেও লাজং কোচ বলছেন, “মোহনবাগান সামান্য হলেও এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের থেকে।” কিন্তু যে ফুটবলারটির জন্য মোহনবাগানকে এগিয়ে রাখছেন লাজং কোচ, সেই সোনি নর্ডি—ই যে আজ অনিশ্চিত!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.