Advertisement
Advertisement
Mohun Bagan

টানা দুবার আইএসএল ফাইনাল, ফুটবলারদের হার না মানা মনোভাবকেই কৃতিত্ব হাবাসের

গ্যালারির সাতটি টিফোতে ধরা রইল মোহনবাগানের সাফল্যের নায়কদের ছবি।

Habas credits the Mohun Bagan footballer's attitude for reaching the ISL 10 final

জয়ের পর উচ্ছ্বাস সবুজ-মেরুনের। ছবি- সায়ন্তন ঘোষ।

Published by: Arpan Das
  • Posted:April 29, 2024 9:57 am
  • Updated:April 29, 2024 9:57 am  

প্রসূন বিশ্বাস: সাহালের গোলের অপেক্ষায় যেন ছিল গ্যালারি। তারপর শুধুই উচ্ছ্বাস, উচ্ছ্বাস আর উচ্ছ্বাস।
গ্যালারিতে উপস্থিত ৬২ হাজার দর্শকের হাতে জ্বলে উঠেছে মোবাইলের ফ্লাস লাইট। বিন্দু বিন্দু সহস্র আলো দেখে মনে হচ্ছিল দূর দেশ থেকে বয়ে আসা কোন দুরন্ত খবর পেয়েছেন তারা। এই উল্লাসধ্বনি কি পৌঁছে যাচ্ছিল না ওড়িশায় (Odisha FC)? কয়েকদিন আগে যেখানে উল্লাসের জয়ঢাক বাজিয়েছিলেন সার্জিও লোবেরা ব্রিগেড। তবে সেই উল্লাস ছিল মাত্র কয়েক দিনের জন্য।
রবিবাসরীয় রাতে ৪২ ডিগ্রিকে উপক্ষা করার রসদ যেন পেয়ে গেলন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। আর রয় কৃষ্ণ? এদিন সন্ধ্যায় কৃষ্ণের মোহনবাঁশিতে মোহিত হল না কেউই। বরং কৃষ্ণকে রুখে দিয়ে নায়ক বনে গেলেন গত ম্যাচে সমালোচিত হেক্টর ইউয়েস্তা। মুম্বই ম্যাচের পর আরও একটা এমন ম্যাচ বহুদিন স্মরণ করবেন মোহনবাগান (Mohun Bagan) সমর্থকরা। এবার আর মাত্র একটা ম্যাচ। ফাইনালেও এমনই ষাট হাজার মানুষের সমর্থক পাবেন দিমিত্রিরা।
এই সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোহনবাগানের দুই তারকা বিদেশি জেসন কামিংস আর দিমিত্রি পেত্রাতোস। কামিংস বলছেন, “মোহনবাগান সমর্থকরা দেশের সেরা।” সঙ্গে যোগ করেন, “চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
সাহাল এদিনের গোলটা উৎসর্গ করলেন স্ত্রীকে। তিনি বলেন, “স্ত্রীকে এই গোল উৎসর্গ করলাম। আর এই জয় সমর্থকদের জন্য।” ম্যাচ জয়ের পর যেন তৃপ্ত মোহনবাগান কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। তোয়ালে দিয়ে মাথার ঘাম মুছতে মুছতে বলছিলেন, “আজ ফুটবলারদের হার না মানা মনোভাবই জিতিয়ে দিল। ওদের বলেছিলাম, নব্বই মিনিটের মধ্যেই ম্যাচ শেষ করতে। যদিও অতিরিক্ত সময়ের জন্যও প্রস্তুত ছিলাম।”

[আরও পড়ুন: ফের বাবা হচ্ছেন ধোনি? সাক্ষীর পোস্ট ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা!]

এদিন ম্যাচের বড় প্রাপ্তি ছিল ছোট বড় মিলিয়ে সাত সাতটা টিফো। তার মধ্যে একটাতে রয়েছে রিলে রেসের ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছিল ব্যারেটোর হাত থেকে ব্যাটন তুলে নিচ্ছেন ওডাফা। তাঁর থেকে সনি নর্ডি। সনির থেকে আবার ব্যটন চলে যাচ্ছে দিমিত্রির হাতে। মোহনবাগান গোল পোস্টের পিছনে বিশাল সেই টিফোতে তুলে ধরা হয়েছিল কিভাবে ব্যারেটো থেকে দিমির হাতে চলে এসেছে মোহনবাগানের ঐতিহ্যের ব্যাটন।
বাদ গেলেন না ডায়মন্ড স্রষ্ঠা অমল দত্তও। আরেকটি টিফোয় ছবিতে হিরের ছবির পাশে জ্বলজ্বল করছে ডায়মন্ড কোচের ছবি। অন্যটাতে আবার বড় বড় করে ইংরাজিতে লেখা ‘মোহনভারত।’ এই মোহনভারত লেখা টিফোতে আবার ইউয়েস্তাদের সাজানো হয়েছে পৌরাণিক চরিত্রদের সাজে। হেক্টর, অনিরুধ, লিস্টন সহ পাঁচজনের ছবি সেই টিফোতে। বোঝা গেল মোহনবাগানের ‘পঞ্চপান্ডব’ বোঝাতে চাইছেন তারা। নিজেকে এই সাজে দেখেই কী হেক্টর ইউয়েস্তা জ্বলে উঠলেন প্রথমার্ধে? গত ম্যাচে রয় কৃষ্ণ তাঁকে বোকা বানিয়ে গোল করে যাওয়ার পর যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এদিন প্রথমার্ধেই গোললাইন সেভ করে বুঝিয়ে দিলেন প্রতিদিন এক ভুল হয় না।
তখনও ম্যাচ শুরু হয়নি। গ্যালারির যে দিকেই তাকাবেন আপনার চোখে পড়বে বিশাল বিশাল এই টিফোগুলোই। এখানেই কী শেষ! না না আরও আছে। আরেকটা টিফোতে লেখা এবার ডাক এসেছে এশিয়ার। সেই টিফোতে দেখাযাচ্ছে লিগ-শিল্ড জয়ী মোহনবাগানকে গার্ড অব অনার দিচ্ছেন আইএসএলের অন্য কোচেরা। অন্য ম্যাচ হলে হয়ত এখানেই শেষ হয়ে যেত। চারিদিকের এই টিফোগুলোই অতীতের সঙ্গে বর্তমানকে মিলিয়ে দিচ্ছিল বারে বারে। এই প্রবল গরমে যখন হাঁশফাশ অবস্থা সবার। নৈহাটি থেকে আসা ষাটোর্ধ্ব মোহনবাগান সমর্থক বিমল পাল বিরতিতে বলছিলেন, “মোহনবাগানকে ডায়মন্ড ছকেও খেলতে দেখেছি, আবার আজ হাবাসের কোচিংও দেখছি। এই টিফো গুলো যেত অতীতের দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে গেল আমাকে। এবার মোহনবাগানকে এশিয়া স্তরে ভালো ফল করতে দেখতে চাই ।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রায় ৬৩ হাজার দর্শকের শব্দব্রহ্মে দিশেহারা ওড়িশা! সমর্থকদের ধন্যবাদ জানালেন টুটু বোস]

মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে উপচে পড়েছিল যুবভারতীর গ্যালারি। ফের এদিন ম্যাচে গ্যালারি ভরানোর আবেদন জানিয়েছিল মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট। সবুজ-মেরুন সমর্থকরা এই ম্যাচে প্রবল গরমকে উপেক্ষা করেও দিমিত্রিদের পাশে দাঁড়াতেই মাঠে এসেছিলেন। আইএসএল থেকে জানা গেল এদিন মাঠে এসেছিলেন ৬২ হাজার দর্শক। তারা শুধু দেখতে চেয়েছেন প্রিয় দলের জয়। কেউ কেউ আবার আইএসএল ট্রফির রেপ্লিকা নিয়েও মাঠে এসেছিলেন। হাওয়া অফিস যখন বলছে চল্লিশ ডিগ্রি তাপমাত্রা, সেই তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে বাষট্টি হাজার মানুষ ছুটে এসেছেন! কলকাতা বলেই সম্ভব।
এই বাষট্টি হাজার মানুষের জন্য মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টের তরফে প্রতিটি র‌্যাম্পে ব্যবস্থা ছিল জলের। জল দিচ্ছিলেন ভলেন্টিয়াররা। এছড়াও স্টেডিয়াম চত্বরে আলাদাভাবে ছিল সাতটি জলের গাড়ি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৭টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল স্টেডিয়ামে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement