Advertisement
Advertisement
মুম্বই বিমানবন্দর

ঠিক যেন ‘The Terminal’ সিনেমার গল্প! ৭৪ দিন মুম্বই বিমানবন্দরে বন্দি ঘানার ফুটবলার

মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে বন্দিদশা থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন।

Ghanian Footballer stranded for 74 days due to lockdown at Mumbai International Airport
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 7, 2020 8:03 pm
  • Updated:June 7, 2020 8:03 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন হলিউডের ‘দ্য টার্মিনাল’ ছবি! বাস্তব জীবনে বিমানবন্দরই যেন ঘর হয়ে গিয়েছিল ২৩ বছরের ঘানার ফুটবলারের। এক-দুদিন নয়, টানা ৭৪ দিন। লকডাউনের জেরে বাড়ি ফেরা হয়নি। বিমানবন্দরেই ৭৪ দিন আটকে ছিলেন ঘানার বাসিন্দা র‌্যান্ডি হুয়ান মুলার। যেদিন বাড়ি ফেরার জন্য বিমানে ওঠার কথা ছিল সেদিনই লকডাউন শুরু হয় গোটা দেশে। দুর্ভোগের শেষ হয় যুবা সেনার হাত ধরে। শিব সেনার যুব শাখার সদস্য-সমর্থকদের দৌলতে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান ওই তরুণ ফুটবলার। বর্তমানে তাঁকে এয়ারপোর্টের কাছেই একটি হোটেলে রাখার বন্দোবস্ত করে দিয়েছে যুবা সেনার সদস্যরা। বিমান পরিষেবা ফের চালু হলেই তাঁকে তাঁর দেশে ফেরানো হবে।

মুলার কেরলের ORPC স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য ভারতে এসেছিলেন গত নভেম্বরে। সঙ্গে ছিল ছ’মাসের ভিসা। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার জন্য মুম্বই বিমানবন্দরে পৌঁছন সেদিন থেকেই দেশে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। ব্যস! সেদিন থেকে বিমানবন্দরের টার্মিনালই হয়ে যায় তাঁর ঘরবাড়ি। পর্দার টম হ্যাংকসের মতোই তিনিও হয়ে যান ‘দ্য টার্মিনাল’-এর বাসিন্দা। তারপর থেকে বিমানবন্দরের কর্মী-নিরাপত্তারক্ষীদের সহায়তায় দিন কাটছিল মুলারের। বিমানন্দরের শৌচাগারে স্নান করতেন, জামাকাপড় ধুতেন। কোনওদিন সিঙারা আবার কখনও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া ফ্রায়েড রাইস খেয়েই কাটিয়েছেন মুলার। বিমানবন্দরের কর্মীরা জানিয়েছেন, কখনও বাগানে ঘুরতেন, আবার কখনও বই পড়ে-নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় কাটাতেন মুলার। এইভাবেই কেটেছে ৭৪ দিন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আমফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনের পাশে সস্ত্রীক শিল্টন, দুর্গতদের হাতে তুলে দিলেন খাবার ও পোশাক]

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে অনেক সাহায্য করেছে। খাবার দেওয়া, ওয়াইফাই ব্যবহার করা থেক শুরু করে ফোন করতে দেওয়া সবকিছুই সুবিধা পেয়েছেন মুলার। তারপর নিজের দুর্দশার কথা টুইট করেন তিনি। তখন তা নজরে আসে মহারাষ্ট্রের পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রী তথা যুবা সেনার প্রধান আদিত্য ঠাকরের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নির্দেশে যুবা সেনার সদস্যরা মুলার একটি হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। শুধু তাই নয়, বিমান পরিষেবা চালু হলে মুলারকে বাড়ি ফেরার টিকিটের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এক যুবা সেনা নেতা। মুলার জানিয়েছেন, ‘আদিত্য ঠাকরের কাছে কৃতজ্ঞ। একটা ম্যাচ খেললে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনও ম্যাচ খেলিনি। এদিকে ভারতে থাকতে খাওয়া বাবদ খরচ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। টাকা না থাকায় বাড়ি ফেরা ছাড়া উপায় ছিল না।’

লকডাউন শুরু হওয়ার পর তাঁকে বিমানবন্দরে যেতে বলে মুম্বই পুলিশ। মুলার বলেন, ‘সেখানে গিয়ে দেখি, বিমান পরিষেবা বন্ধ। সিআইএসএফ আমাকে সেখানে দিতে রাজি ছিল না। কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। এয়ারপোর্টের লোকজন আমাকে খাবার দিত, কিছু টাকাও দিয়েছিল। তারপর যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকটা বই পাই। সেগুলো পড়তাম আর এয়ারপোর্টে ঘুরে বেড়িয়ে সময় কাটত। নিজেকে বোঝাতাম, একদিন দুঃসময় কাটবে। এক যাত্রী ‘Be Your Own Therapist’ বইটা দিয়েছিলেন। সেটা পড়ে বেঁচে থাকার রসদ পেতাম। হতাশা দূর হয়েছিল। স্টিভেন স্পিলবার্গের ছবি ‘The Terminal’-এর টম হ্যাংকসের মতো আমার জীবন হয়ে গিয়েছিল। নিজের দুর্দশার কথা টুইট করতেই আদিত্য ঠাকরে আমাকে সাহায্য করেন।’ সত্যি, এই লকডাউনে মানুষ আর কত কিছুর সাক্ষী থাকবে কে জানে!

[আরও পড়ুন: লকডাউনে আটকে পড়া বিদেশি ফুটবলারদের পাশে মোহনবাগান ভক্তরা, ত্রাণ পেলেন আমফান বিধ্বস্তরাও]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement