সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উদয় কোনার (Uday Konar)। যারা দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা ময়াদানের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কাছে এই নামটা বেশ পরিচিত। একটা সময় মোহনবাগানের (Mohun Bagan) জার্সি গায়ে দাপিয়ে খেলে গিয়েছেন উদয়। ১৮ বছর আগে মোহনবাগানের জাতীয় লিগ জয়ী স্কোয়াডে ছিলেন। বাসুদেব মণ্ডল, ব্যারেটোদের পাশাপাশি সেবারের লিগ জয়ে উদয়ের ভূমিকাও ছিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এ হেন ফুটবলার এখন দিন গুজরানের জন্য ফুটপাথে বসে ফুল আর সবজি বিক্রি করছেন। ভাগ্যের ‘পরিহাস’ সম্ভবত একেই বলে।
এমনিতে ছোটবেলা থেকেই গরিব ঘরে মানুষ উদয়। নিজে ফুটবলার হয়ে সংসারের হাল ফেরান। মোহনবাগানের মতো আরও ১৫টি ক্লাবে খেলেছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের হয়ে নিয়মিত সন্তোষ ট্রফিও খেলেছেন। তারপর ধীরে ধীরে কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছেন উদয়। ফুটবল ছেড়ে নিজের জমানো টাকা, আর কিছুটা ধার করে মুম্বইয়ের কোলাবায় একটা ছোট্ট জামা-কাপড়ের দোকান দেন তিনি। তাতেই কোনওক্রমে সংসারটা চলছিল। কিন্তু লকডাউনে রোজগারের সেপথও বন্ধ। দোকান এখন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। দুই মেয়ে আর স্ত্রী’কে নিয়ে দিশেহারা উদয় শেষপর্যন্ত সবজির দোকান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সকালে সবজি, আর বিকেলে ফুল বিক্রি করেন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে উদয় বলছিলেন,”১৬টা ক্লাবের হয়ে খেলেছি। মোহনবাগানের হয়ে জাতীয় লিগ (National Football League) জিতেছি। বেশিরভাগই পুরো টাকা মেটায়নি। মহারাষ্ট্রের (Maharastra) হয়ে নিয়মিত সন্তোষ ট্রফিতেও খেলেছি। জাতীয় শিবিরেও ডাক পেয়েছিলাম। কিন্তু একটা চাকরি পায়নি।” দুই মেয়েই মেধাবী। কিন্তু তাঁদের অনলাইনে ক্লাস করার জন্য একটা ল্যাপটপ কিনে দেওয়ার টাকা নেই। সবজি বিক্রির ফাঁকেই নিজের কষ্টের কথা বলছিলেন উদয়।”আমার বড় মেয়ে ক্লাস টুয়েলভে পড়ে। ছোট মেয়ে এইটে। দু’জনেই খুব মেধাবী। এখন অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু ওদের ল্যাপটপ কিনে দিতে পারিনি। মোবাইলেই কোনওরকমে চলছে।” আর্থিক সঙ্কটে উদয়ের দুই মেয়ের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আপাতত রোজগার বাড়ার কোনও আশাও দেখছেন না উদয়। সতীর্থরা বা প্রাক্তন কোনও ক্লাব যোগাযোগ রাখে না। তাতে অবশ্য খুব একটা আক্ষেপ নেই প্রাক্তন ফুটবলারের। অভিমানের সুরে বলছিলেন,”ওদের কাছে হয়তো আমার ফোন নম্বরটাই নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.