ব্রেহমে। ফাইল চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত জার্মানির তারকা ডিফেন্ডার আন্দ্রে ব্রেহমে (Andreas Brehme)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ব্রেহমের পেনাল্টি থেকে করা গোলেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানি। সেদিন আর্জেন্টাইন মহানায়ক দিয়েগো মারাদোনার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। কেঁদেছিলেন মারাদোনা। লোথার ম্যাথাউস বিশ্বকাপ হাতে তুলেছিলেন। সেই ব্রেহমে জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন। মঙ্গলবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় ব্রেহমের।
বায়ার্ন মিউনিখের মাস্টার্স দলের হয়ে কলকাতায় খেলতে এসেছিলেন ব্রেহমে। সেই দল খেলেছিল ইস্টবেঙ্গলের মাস্টার্স দলের সঙ্গে। সেই ম্যাচের আগে ইস্টার্ন বাইপাসের ধারের এক হোটেলে ব্রেহমেকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ”ফুটবলার মারাদোনা অবিশ্বাস্য এক প্রতিভা। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ওর জন্য জার্মানি চোখের জল ফেলেছিল। ১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনালে মারাদোনা কেঁদেছিল। সেদিন আমাদের খুব আনন্দ হয়েছিল। আমরা প্রাণ ভরে হেসেছিলাম। কিন্তু কোচ মারাদোনা? বহু দূর যেতে হবে দিয়েগোকে।”
ব্রেহমে যেসময়ে খেলতে এসেছিলেন কলকাতায় তখন তিনি বৃদ্ধ হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার রিমোট কন্ট্রোল ছিল দিয়েগো মারাদোনার হাতে। ফুটবলার মারাদোনাকে গুরুত্ব দিলেও, কোচ মারাদোনাকে সেদিন ব্রেহমে বেশি নম্বর দেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে মারাদোনা-মেসির আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল। ব্রেহমে যখন এই শহরে পা রেখেছিলেন, তখন তাঁর সেই বিখ্যাত সোনালি চুল আর নেই। টানটান চেহারাও অদৃশ্য। সামনে থেকে দেখে মনে হচ্ছিল ইনিই কি ইতালি বিশ্বকাপে পেনাল্টি থেকে গোল করেছিলেন? জার্মানির চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য কলকাতা ছাড়ার বেশ কয়েকবছর পরে চমকে দেওয়ার মতো খবর প্রকাশ্যে আসে। ধারে কর্যে ডুবুডুবু অবস্থা ইতালি বিশ্বকাপ ফাইনালের গোলদাতার। দেউলিয়া তিনি। বেঁচে থাকার জন্য টয়লেট পরিষ্কার করেন। যার গোলে বিশ্বকাপ এল, সেই ফুটবলার জীবন চালানোর জন্য বেছে নিয়েছেন শৌচাগার পরিষ্কার করার কাজ। জীবন পরীক্ষা নেয়। ফুটবলার থাকার সময়ে মারাদোনার মতো কিংবদন্তিদের পরীক্ষা নিয়েছিলেন ব্রেহমের। সেই ব্রেহমেকে জীবনের পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল।
মঙ্গলবার থেমে গেল সোনালি চুলের সেই ডিফেন্ডারের রূপকথা। দেশের জার্সিতে ৮৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। আটটি গোল রয়েছে তাঁর নামের পাশে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত তিনি জার্মানির জাতীয় দলের হয়ে খেলেন।
একে একে চলে যাচ্ছেন ১৯৯০ বিশ্বকাপের নায়করা। কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছেন লোথার ম্যাথাউজ-আন্দ্রে ব্রেহমেদের বিশ্বজয়ী দলের ম্যানেজার ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার। এদিন চলে গেলেন তাঁর শিষ্য ব্রেহমে। বিখ্যাত লেফট ব্যাকের প্রয়াণে শোকের ছায়া জার্মানির ফুটবলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.