আর্জেন্টিনা: ৩ (মেসি, আলভারেজ ২)
ক্রোয়েশিয়া: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রোয়েশিয়ার বাধা টপকে বিশ্বজয়ের স্বপ্নপূরণের আরও কাছে পৌঁছে গেল লিওনেল মেসির (Leo Messi) আর্জেন্টিনা। সেমিফাইনালে কার্যত একপেশে লড়াইয়ে লুকা মদ্রিচের (Luka Modric) ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দিল নীল-সাদা ব্রিগেড। যার ঘাড়ে ভর করে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে আর্জেন্টিনা, সেই লিও মেসি পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করলেন। তবে এদিন মেসিকে ছাপিয়ে শিরোনাম কুড়িয়ে গেলেন তরুণ তারকা জুলিয়ান আলভারেজ। দুটি গোল এল তরুণ স্ট্রাইকারের পা থেকে।
মঞ্চ প্রস্তুত ছিল লিওনেল মেসির জন্য। গোটা বিশ্বের ফুটবল ভক্তরা প্রহর গুণছিলেন মেসি-ম্যাজিকের অপেক্ষায়। ভক্তদের হতাশ করলেন না লিও। কাঙ্ক্ষিত ‘ম্যাজিক মোমেন্ট’ একাধিকবার উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে ফুটবল পায়ে জাদুবিদ্যায় এদিন লিও মেসিকেও ছাপিয়ে গেলেন আরেকজন। তিনি জুলিয়ান আলভারেজ (Julian Alvarez)। মেসির মঞ্চে নায়কের ভূমিকায় উঠে এলেন ২২ বছর বয়সি তরুণ স্ট্রাইকার। মেসির জন্য অনবদ্য পেনাল্টি যেমন তিনি আদায় করলেন, তেমনি চলতি বিশ্বকাপের (FIFA World Cup) অন্যতম সেরা গোলটিও এল তাঁর পা থেকেই।
গোটা বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তিই ছিল রক্ষণ আঁটসাঁট রেখে কাউন্টার অ্যাটাকে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে দেওয়া। কিন্তু এদিন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি সেই প্রতিআক্রমণটাই করতে দিলেন না মদ্রিচদের। এদিন আর্জেন্টিনা শুরুটা করল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে। শুরুর দিকে আক্রমণে লোক বাড়িয়ে রক্ষণ ফাঁকা করতে চাননি স্কালোনি। ফলে ক্রোয়েশিয়ার মূল অস্ত্র কাউন্টার অ্যাটাক ভোঁতা হয়ে গেল। উলটে গোল তৈরি করতে গিয়ে নিজেরাই প্রতি আক্রমণে চাপে পড়ে গেলেন ক্রোটসরা।
প্রথমে ম্যাচের ৩৪ মিনিটে একটি অনবদ্য থ্রু বল থেকে ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক লিভাকোভিচের বিরুদ্ধে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে চলে এলেন আলভারেজ। শেষে আর্জেন্টিনা স্ট্রাইকারকে আটকাতে গিয়ে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ফাউল করে ফেললেন। পেনাল্টি পেয়ে গেল আর্জেন্টিনা। সেই পেনাল্টি নিয়ে খানিকটা বিতর্কের অবকাশ থাকলেও পেনাল্টি স্পট থেকে মেসি যেভাবে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ালেন তাতে সন্দেহের কোনও অবকাশ ছিল না। এটি ছিল বিশ্বকাপে মেসির করা ১১ তম গোল। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে পেরিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলস্কোরার এখন তিনিই। চলতি বিশ্বকাপে এটি ছিল মেসির পঞ্চম গোল। এমবাপের সঙ্গে যুগ্মভাবে চলতি বিশ্বকাপেরও সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি।
মেসির গোলের মিনিট পাঁচেক পরই আলভারেজ ম্যাজিকের সাক্ষী থাকল ফুটবল বিশ্ব। যার সোলো রানে করা গোল যেন ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। আলভারেজ যখন বলটি পেয়েছিলেন তখনও তিনি নিজের ডি বক্সের কাছাকাছি। এরপর সোলো রানে কার্যত একা গোটা ক্রোয়েশিয়া রক্ষণকে মাটি ধরিয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ালেন তিনি। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কিছুটা আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু তাতে বিপদ আরও বাড়ে। আক্রমণভাগে মেসিকে মার্ক করার লোক কমে যায়। আর প্রতিপক্ষের অর্ধে ফাঁকা জায়গা পেলে যে লিও মেসি কী করতে পারেন, সেকথা কার্যত সকলের জানা। এদিনও সেটাই করলেন মেসি। মাঠের ডান প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডারদের নাকানিচোবানি খাইয়ে ম্যাজিক্যাল একটি পাস বাড়িয়ে দিলেন সেই আলভারেজকে। আর আলভারেজ সুযোগ সন্ধানি স্ট্রাইকারের মতোই বল ঠেলে দিলেন ক্রোয়েশিয়ার জালে। ৩-০ গোলে এগিয়ে গেল নীল-সাদা ব্রিগেড। ম্যাচের বাকি সময়টুকু ছিল শুধুই নিয়মরক্ষার। ৩ গোলে পিছিয়ে পড়া ক্রোয়েশিয়া এতটাই বিধ্বস্ত ছিল যে সেভাবে ম্যাচে ফেরার লড়াইটাই দেখাতে পারল না তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.