সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেসির শেষ বিশ্বকাপ। যাঁকে ঘিরে গোটা ফুটবল বিশ্ব আবর্তিত হয়, তাঁর বিশ্বজয়ের শেষ সুযোগ। তাছাড়া মেগা টুর্নামেন্টে নামার আগে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়ে আসছে দল। তাই কাতারের (Qatar World Cup) মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগে আর্জেন্টিনীয় সমর্থকদের প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল। কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল কিছুই বদলায়নি। বিশ্বকাপ (Fifa World Cup) শুরুর আগেই মেসি বলে দিয়েছিলেন, তাদের ফেভারিট ধরলে ভুল হবে। কাপ অভিযানের শুরুতেই নীল-সাদা ব্রিগেড বুঝিয়ে দিল, কেন এ কথা বলেছিলেন লিও! প্রথম ম্যাচে কেন হারল আর্জেন্টিনা, সম্ভাব্য কারণগুলি খোঁজা যাক।
সৌদির মরণপণ লড়াই: আর্জেন্টিনার মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলাটা সৌদি আরবের মতো দলের কাছে স্বপ্নের মতো। আর সেই স্বপ্নের ম্যাচে সৌদির ফুটবলাররা পারফর্মও করলেন স্বপ্নের মতো। সে গোলরক্ষক আলওয়াইস হোন, রক্ষণভাগের আব্দুলহামিদ হোন বা গোলস্কোরার সালেম বা সালেহ। সৌদির সব ফুটবলারই নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিশেষ করে বলতে হয় সৌদির গোলরক্ষকের নাম। এদিন যেন চিনের প্রাচীরের মতো একের পর এক নীল-সাদা আক্রমণ প্রতিহত করেছেন তিনি। শেষদিকে ডিফেন্ডারের গোললাইন সেভের কথাটাও আলাদা করে বলতে হয়।
অফসাইডের ফাঁদ: বিপক্ষের ফরওয়ার্ডদের নাম যখন লিও মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি’মারিয়া, লউটারো মার্টিনেজ হয়, তখন তাঁদের আটকাতে ‘আউট অফ দ্য বক্স’ ভাবতেই হয়। সেটাই করলেন সৌদির কোচ হার্ভ রেনার্ড। অফসাইড ট্র্যাপে জড়িয়ে বিপক্ষের ফুটবলারদের বক্সের বাইরেই আটকে দেওয়ার ছক কষেছিলেন তিনি। বলা বাহুল্য, তাঁর এই কৌশল রামবাণের মতো কাজ দিয়েছে। একটা-দুটো নয়, অফসাইডের ফাঁদে ফেঁসে বাতিল হয়েছে আর্জেন্টিনার তিন-তিনটি গোল।
নিস্পৃহ মেসি: বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। স্বভাবতই লিওনেল মেসির কাছে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল আর্জেন্টিনীয় সমর্থকদের। সেই সঙ্গে ছিল পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ। সেই প্রত্যাশার পাহাড়ে ফের চাপা পড়লেন কিং লিও। গোটা ম্যাচে একটি নিখুঁত পেনাল্টি গোল করা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে পারলেন না তিনি। ৯০ মিনিট কার্যত নিঃস্পৃহ ছিলেন এলএম টেন। তাঁর সেট পিস ডেলিভারিগুলিও প্রত্যাশিত মানের ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে সম্ভাবনাময় জায়গা থেকে ফ্রি-কিকও পান লিও। সেটাও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
নড়বড়ে রক্ষণ: এবারের বিশ্বকাপেও চিরন্তন রক্ষণের সমস্যা আর্জেন্টিনাকে ভোগাবে, সেটা প্রথম ম্যাচেই স্পষ্ট হয়ে গেল। মলিনা, ওটামেন্ডি, টাগলিয়াফিকোরা নিজেদের মধ্যে বহু ম্যাচ খেলার পরও যে সেভাবে রসায়ন তৈরি করতে পারেননি, সেটা সৌদির (Saudi Arab) প্রতিটি আক্রমণের সময়ই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। আর্জেন্টিনাকে যদি এই হার ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, তাহলে রক্ষণকে ভাল খেলতেই হবে।
জয়ের খিদের অভাব: আর্জেন্টিনার এদিনের পারফরম্যান্সে সবচেয়ে বেশি যেটা চিন্তার সেটা হল ফুটবলারদের শরীরী ভাষা। গোটা ম্যাচে নীল-সাদা ফুটবলারদের মধ্যে জয়ের তাগিদই যেন দেখা গেল না। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে প্রতিপক্ষকে ছারখার করে দেওয়ার চেষ্টা, সেটাও করতে দেখা গেল না এলএম টেনদের। ফল যা হওয়ার তাই হল, প্রথম ম্যাচেই হারল আর্জেন্টিনা (Argentina)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.