ফ্রান্স: ২ (চমেনি, জিরু)
ইংল্যান্ড: ১ (কেন-পেনাল্টি)
দুলাল দে, দোহা: আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ, আক্রমণ, আক্রমণ, আক্রমণ!
না, ভুলবশত লেখা নয়। ফ্রান্স বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে দুই দল পরস্পরের ডেরায় ঠিক এভাবেই লাগাতার আক্রমণ চালাল। ক্রমাগত অগ্নিপরীক্ষা দিতে হল হুগো লরিস ও পিকফোর্ডকে। আর রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে লেখা হল প্রতিশোধের নয়া ইতিহাস। বিশ্বকাপে এই নিয়ে তৃতীয়বার সাক্ষাৎ দুই দলের। গত দুই সাক্ষাতেই থ্রি লায়ন্সের কাছে পরাস্ত হয়েছিল ফরাসিরা। এবার চাকা নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দাপট দেখাল গতবারের বিশ্বজয়ীরাই।
হ্যারি কেনদের বিরুদ্ধে কি শেষ আটের লড়াইয়ে নেই কিলিয়ান এমবাপে? তিনিও কি চোটের কবলে? তরুণ স্ট্রাইকারকে ছাড়াই কি দল সাজাবেন দেশঁ? প্র্যাকটিসে অনুপস্থিত থেকে এমনই সব প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) সোনার বুটের দাবিদার শুরু থেকেই শুরু করেন। শনিবাসরীয় রাতে গোল না করলেও সেমিফাইনালে পৌঁছে সোনার বুট জয়ের লড়াই জিইয়ে রাখলেন তিনি।
চোটের জন্য বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়েছে বেঞ্জেমা, পোগবা, কান্তেরা। এসব আলোচনাকে অতীত করে অশ্বমেঘের ঘোড়ার মতো ছুটেছেন দিদিয়ের দেশঁর ছেলেরা। কী নেই, কাকে পাওয়া যাচ্ছে না, এসব হিসেব না করে প্রতিবার নিজেদের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে মাঠে নেমেছেন এমবাপেরা। আর প্রতিবার আরও আরও শক্তিশালী ফরাসি বাহিনীর লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব। এদিনও সেই একই মেজাজে হ্যারি কেনদের (Harry Kane) বিরুদ্ধে ধরা দিল তারা। খেলার ১৮ মিনিটেই ব্রিটিশ ডিফেন্স চিড়ে গোলমুখ খুলতে সফল হন চমেনি। প্রতি আক্রমণ থেকে এমবাপে বল এগিয়ে দেন গ্রিজম্যানের দিকে। তাঁর বাড়ানো বল থেকেই দুর্দান্ত লং শটে বল জালে জড়ান চমেনি।
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) December 10, 2022
বিশ্বজুড়ে আজ ইউরোপীয় ফুটবলের দাপট। তাই কেউ কাউকে যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা প্রত্যাশিতই। এদিন কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে দলে কোনও বদল ঘটাননি দেশঁ। সাউথগেটও সেনেগালের বিরুদ্ধে খেলা দলের উইনিং কম্বিনেশন ভাঙেননি। আর দুই জয়ী দল যে কতখানি হিংস্র হতে পারে, তা-ই চাক্ষুস করল আল বায়াত স্টেডিয়াম। গোল হজমের পরও একাধিকবার ফরাসি ডেরায় আক্রমণ করেন ইংলিশ স্ট্রাইকাররা। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞ লরিসের (১৪৩) হাতে বাধা পায় কেনের নিশ্চিত শট। তবে খেলার ২৬ মিনিটে কেনকে ফাউল করা হলেও VAR কেন পেনাল্টি দিল না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
দ্বিতীয়ার্ধে আবার পেনাল্টির দৌলতে ঘুরে যায় খেলার মোড়। ৫২ মিনিটে সাকাকে বক্সের ভিতর ফাউল করেন ফরাসি ফুটবলার। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান অধিনায়ক হ্যারি কেন। তবে জিরুর গোলে ফের পিছিয়ে পড়া ইংল্যান্ড ৮৩ মিনিটে আরও একটি পেনাল্টি উপহার পায় খেলায় সমতা ফেরাতে। কিন্তু তেকাঠির উপর দিয়ে শট মাঠের বাইরে পাঠিয়ে সেই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন অধিনায়ক। আর সেই সঙ্গেই নিশ্চিত হয়ে যায় ব্রিটিশ বাহিনীর বিদায়। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কেনদের লড়াই বহুদিন মনে রাখবেন ফুটবলপ্রেমীরা। শেষ চারে গ্রিজম্যানদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.